আমাদের চেয়ে উন্নত কোনো প্রাণি থেকে থাকলে তারা হয়তোবা আমাদের থেকে অনেক দূরে থাকবে। তাই আমাদের পৃথিবীর মানুষ বা অন্যান্য জীবকে তারা সরাসরি এমনকি শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়েও দেখতে পাবে না। তবে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করে এটা ধারণা করতে পারবে যে এই গ্রহে জীবনের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
প্রথমেই এলিয়েনরা দেখতে পাবে পৃথিবীর নীলচে বৈশিষ্ট্য। অনেক দূর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা না গেলেও এই নীল রং টেলিস্কোপ দিয়ে সহজেই দেখা যাবে। আর এই বিষটা প্রমাণ করেছে ভয়েজার ১। ১৯৯০ সালে এই নভোযান নেপচুনের কক্ষপথের থেকে খানিক দূর থেকে পৃথিবীর যে ছবি তুলেছিল তাতে পৃথিবীকে একটি নীল বিন্দু মনে হয়েছিলো যাকে বিখ্যাত অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট কার্ল সাগান নাম দিয়েছিলেন 'পেল ব্লু ডট'। আর এই রঙের মাধ্যমে এলিয়েনরা পৃথিবীর নীলচে মহাসাগরের পানির কথা অনুমান করতে পারবে। আর এই পানি জীবনের অস্তিত্ব বহন করে যা এলিয়েনরাও আন্দাজ করতে পারবে। আবার আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে তারা পৃথিবীর উপকূল দেখতে পাবে যা তরল পানির অস্তিত্বের নির্দেশক। আর তরল পানি জীবনের অস্তিত্ব বহন করে। কেননা, বরফ বা বাষ্পরূপে পানি থাকলে সেখানে জীবন গড়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক কম।
আবার আমাদের গ্রহে আমরা বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো প্রচুর ব্যবহার করি। দৃশ্যমান আলো ছাড়াও আমরা যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করি রেডিও ওয়েভ। ভিনগ্রহবাসী যদি শক্তিশালী রেডিও বা ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ দিয়ে পৃথিবীর এই অস্বাভাবিক আলোক বিকিরণ শনাক্ত করতে পারে, তবে সহজেই উন্নত কোনো প্রাণি (মানুষ)-এর অস্তিত্ব বৃঝতে পারবে।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে রয়েছে অক্সিজেন, মিথেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি অণু। এগুলোকে বায়োমার্কার বলে। এদের মাধ্যমে বোঝা যায় যে কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না। যেমন: অক্সিজেন আর কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাধ্যমে জীবের শ্বসন আর সালোকসংশ্লেষণের কথা বোঝা যায়। আবার মিথেন তৈরি হয় গাছপালা পঁচে বা মানবসৃষ্ট কারণে। ফলে মিথেনও জীবের অস্তিত্ব বহন করে। তাই কোনোভাবে ভিনগ্রহের উন্নত প্রাণিরা এসব বায়োমার্কারের অস্তিত্ব শনাক্ত করতে পারলে এটা বুঝতে পারবে যে পৃথিবীতে জীবন আছে।
এছাড়া এলিয়েনরা যদি কোনো সিগন্যাল যেমন: রেডিও তরঙ্গ পাঠায় তা আমরা শনাক্ত করে প্রতিউত্তর দিলে তারা বুঝতে পারবে যে আমরা আছি। এছাড়া আমরা যেমন ভয়েজার পাঠিয়েছি তেমনি তারাও কোনো মহাকাশযান পাঠালে এবং তার মাধ্যমে সংকেত পাঠালে এর মাধ্যমে আমাদের আর তাদের মাঝে যোগাযোগ তৈরি হবে।
এর বাইরে আরও বিভিন্নভাবে এলিয়েনরা মানুষের অস্তিত্ব বুঝতে পারে।