ফুড আসলে কী? কোনো বিশেষ খাবারকে কি সুপার ফুড বলে? ব্যাপারটা খোলাসা করা যাক।
আমরা যে সমস্ত খাবার খাই, তার মূল উদ্দেশ্য পুষ্টি সাধন, দেহ গঠন এ অংশপূরণ এবং রোগ প্রতিরোধ করা । খাদ্য উপাদান যেমন- শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন ও পানি এসব কাজ করে। কোনো কোনো খাবারের ঔষধি গুণ আছে। খাবারের যেসব উপাদান ঔষধি গুণ সম্পন্ন, তাদের কথা সাধারণভাবে খাদ্যের উপাদানের মধ্যে আলোচনা হয় না। খাবারের এসব পুষ্টিকণা প্রদাহরোধী (Anti Inflammatory), জারণরোধী (Antioxidant), ক্যান্সাররোধী হিসেবে কাজ করে। কোনো কোনো উপাদান জীবাণুরোধী হিসেবেও কাজ করে। যে খাবারের উপাদান দেহের পুষ্টি সাধনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, তাদের সুপার ফুডের তালিকায় ফেলা হয়।
সুপার ফুডকে প্রাকৃতিক প্রতি Natural remedy যেতে পারে। বংশগতি, বাস, জীবনযাত্রা- এ তিনে মিলে প্রদাহ জনিত রোগ, জারণজনিত ক্ষয় এবং ক্যান্সার তৈরি করার নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। বংশগতির কারণ ও বয়সকে পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। কিন্তু জীবনধারায় পরিবর্তন এনে এসব রোগের আগমনকে দীর্ঘায়িত বা প্রতিরোধ করা যায় এবং রোগের তীব্রতা কমানো যায় কিংবা জটিলতা এড়ানো যায়। যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন।সুপারফুড বলে খ্যাত খাবারগুলোর প্রদাহরোধী,জারণরোধী,ক্যান্সাররোধী উপাধান যে সব খাবারে আছে, তা খাদ্যতালিকায় যুক্ত করে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ধারণা থেকে সুপার ফুড কথাটার উদ্ভব।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বা জারণবিরোধী উপাদান দেহের কোষ-কলার ফ্রি রেডিক্যাল জনিত ক্ষয়,পারঅক্সিডেজ এনজাইমের ক্ষয়,সক্রিয় অক্সিজেনকে নিষ্ক্রিয় করে। আমাদের দেহের নিজস্ব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা জারণরোধী উপাদান আছে, যেমন— গ্লুটাথিওন, বিলিরুবিন ইত্যাদি। প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে যে অক্সিডেশন হয়, তারা এসব প্রতিহত করে। Disease of wear and tear নামে একটা কথা চালু আছে। যার মানে হচ্ছে ক্ষয়জনিত রোগ। বয়স, পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার কারণে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ক্রমক্ষয়িষ্ণু অবস্থার গতিতে ধীরলয়ে আনতে সুপার ফুডকে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত খাবারসমূহ–
পালং শাক, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, লেটুস, মুলা, গাজর, বিট,মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, লেবু, ক্যাপসিকাম, পাকা পেঁপে, কমলা, কিউয়ি, লাল আঙুর, স্ট্রোবেরি, ব্লুবেরি, ক্রানবেরি, চিনা বাদাম, কিসমিস, চিয়া সিড, কোকো পাউডার, চকোলেট, ডার্ক চকোলেট, পিনাট বাটার, গ্রীন টি, কফি।
© কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সঃ ফেব্রুয়ারি’২২