এমন কিছু খাবার রয়েছে যা মস্তিষ্কের জন্য ভালো। এই খাবার ব্রেনের কোষের মৃত্যু আটকায়। এমনকী দেখা গিয়েছে যে এই খাবার পারে বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে । তাই ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে এই খাবারগুলো রাখতে হবে পাতে ।
সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল
মানুষের মাথার প্রায় বেশিরভাগ অংশই ফ্যাট। এই ফ্যাট ভালো পরিমাণে থাকে সামুদ্রিক খাবারে। মাছের তেল ব্রেন সেল গঠন করে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। এছাড়া, মাছের তেলে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়, যা ব্রেনের জন্য উপকারী। পমফ্রেট মাছ থেকে শুরু করে সমুদ্রের অন্যান্য মাছ খেতে পারেন। এছাড়া ইলিশ, চিংড়িও ভালো। তাই এই মাছও খেতে পারেন।
ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকলেটে থাকে ‘ফ্লাভানয়েড’ যা একটি শক্তিশালী ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ ও প্রদাহরোধী উপাদান। কোনো কিছু শেখা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ানো, মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বাড়ানো, নিউরন’কে সুরক্ষিত সবকিছুর পেছনেই ডার্ক চকলেটের উপকারী ভূমিকা আছে। ৭০ শতাংশ কোকো আছে এমন ডার্ক চকলেট বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ মেগান ওয়াং, আরডি।
গ্রিন টি, চা ও কফি
গ্রিন টি, চা ও কফি আপনাকে সজাগ থাকতে সাহায্য করে, আলঝেইমার্স রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের দক্ষতার উন্নতি ঘটায়। গবেষণায় বলা হয়, নিয়মিত কফি পান স্মৃতিভ্রম রোধ করে। কফি ‘সাইকোস্টিমুলেন্ট’ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ নতুন তথ্য সামাল দেওয়ার গতি বাড়ায়। আর এই প্রভাব কফি পান করা শেষ হওয়ার পরও বজায় থাকে। এছাড়াও মস্তিষ্কে তৈরি হওয়া বিষাক্ত উপাদান অপসারণে ‘ক্যাফেইন’য়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
বাদাম
বাদাম মস্তিষ্কের জন্য খুব ভালো খাবার। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-ই, মোনোস্যাচুরেটেড চর্বি, এবং উপকারী মিনারেল থাকে। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। খাদ্য তালিকায় বাদাম রাখলে মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি সাধন করবে।
পানি
মস্তিষ্কের ৭৫ শতাংশই পানি। তাই শরীরে পানির অভাব থাকলে তা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমাবে সেটাই স্বাভাবিক। পানির অভাবে মনযোগ কমে, সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হয় এবং স্বল্প সময়ের জন্য স্মৃতিশক্তির কমার লক্ষণ দেখা দেয়।
কলা
কলাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি, যা নার্ভ ইমপালস্ ট্রান্সমিশনে সাহায্য করে এবং ব্রেনকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
কলিজা
মাংসের কলিজায় থাকে আয়রন ও ভিটামিন বি, যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এছাড়াও বিভিন্ন শাকসবজি, পালং শাক, বিভিন্ন ফল, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, তেলের বীজ, বিনস্ ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
ডিম
‘কোলিন’ নামক উপাদান থাকে ডিমে যা স্নায়ুকোষের ‘ট্রান্সমিশন’য়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও এই উপাদান স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের গঠন বজায় রাখতে কাজ করে। মনযোগ বাড়াতেও এর ভূমিকা আছে।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে জিঙ্ক বেশ জরুরি একটি খনিজ উপাদান। মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর জিঙ্ক এবং আরও কিছু উপকারী খনিজ উপাদান। যা মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
অপরিশোধিত শস্যজাত খাবার
এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ, যাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। এই উপকারী উপাদানসমূহ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, ওটস ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাবার।
গাজর
গাজর চোখের জন্য ভালো এটা আমরা সবাই জানি, কিন্তু এটি মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী তা অনেকেই জানি না। গাজরে উচ্চমাত্রার লুটিওলিন আছে, যা বয়স সংক্রান্ত স্মৃতিক্ষয় এবং মস্তিষ্কের ইনফ্লামেশন কমাতে পারে।
পালংশাক
পালংশাক মস্তিষ্কের জন্য দারুণ উপকারী। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে পালংশাক। এতে আছে বিটা ক্যারটিন, লুটেইন ও ফোলেট, যা ভুলে যাওয়ার রোগ কমায়।
সাইট্রাস ফল
সাইট্রাস ফল যেমন লেবু বা কমলাজাতীয় খাবার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব লোক প্রতিদিন সাইট্রাস ফল খান, তাদের মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ হয়। তাই এ ধরনের সাইট্রাস ফল আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।
চিনি কম খাওয়া
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কম চিনি খায় তাদের তুলনায়, যারা নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খায় তাদের স্মৃতিশক্তি খারাপ এবং মস্তিষ্কের ঘনত্বের পরিমাণ কমে যায়। সুতরাং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে চিনি কম খেতে হবে।