মৌসিনরাম।।
চেরাপুঞ্জী—ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্য মেঘালয়ের একটা শহর, যা বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। মেঘালয় এতই সুন্দর যে এটাকে “প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড” বলা হয়। এই নামের অর্থ হচ্ছে “মেঘের আবাস।” চেরাপুঞ্জীকে অনেক সময় ধরে পৃথিবীর এক বৃষ্টিবহুল জায়গা বলে ধরা হয়।
চেরাপুঞ্জী সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৩০০ মিটার ওপরে অবস্থিত। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত তখনই হয়, যখন সূর্যের তাপে সমুদ্রের উষ্ণতম অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণ জল বাষ্প হয়ে বাতাসে মিশে যায়। ভারত মহাসাগর থেকে ওঠা জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন হিমালয় পাহাড়ের দক্ষিণ ঢালগুলোতে এসে ধাক্কা খেয়ে ওপরের দিকে উঠতে বাধ্য হয়, তখন এই বায়ু প্রবল বৃষ্টির আকারে জলীয় বাষ্পগুলোকে ঢেলে দেয়। সেই সময় মেঘালয় মালভূমিতে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এছাড়াও, দেখা গেছে যে এই উঁচু জায়গা যেহেতু দিনের বেলায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সূর্যের পূর্ণ তেজ পায়, তাই বৃষ্টির মেঘ ওপরে ওঠে এবং সন্ধ্যের দিকে বাতাস ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এর ফলে বুঝতে পারা যায় যে, বেশির ভাগ সময় বৃষ্টি রাতে কেন হয়।
১৮৬১ সালের জুলাই মাসে, চেরাপুঞ্জীতে ৯৩০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল যা সত্যিই অবাক করার মতো বিষয়! আর ১৮৬০ সালের ১লা আগস্ট থেকে শুরু করে ১৮৬১ সালের ৩১শে জুলাই পর্যন্ত এই ১২ মাসে মোট ২,৬৪৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে চেরাপুঞ্জীতে গড়ে এক বছরে ১৮০ দিন বৃষ্টি হয়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।