কোনো জীব প্রাকৃতিকভাবে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হলে এই অবস্থাকে গাইনানড্রোমরফিজম (Gynandromorphism) বলে। হাঁস, মুরগি, প্রজাপতি, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাঝে গাইনানড্রোমরফিজম দেখা যায়। এটি এক ধরনের জিনগত ত্রুটি। প্রতি ১০,০০০ টি মুরগির মাঝে ১ টি মুরগিতে এই ঘটনা দেখা যায়।
স্তন্যপায়ীদের লিঙ্গ নির্ধারণ হয় X ও Y ক্রোমোজোম এর মাধ্যমে। কিন্তু পাখি ও পতঙ্গের লিঙ্গ নির্ধারণ হয় Z ও W ক্রোমোজোম এর মাধ্যমে। ZZ হচ্ছে পুরুষ পাখি এবং ZW হচ্ছে স্ত্রী পাখি। গাইনানড্রোমরফদের জন্ম কিভাবে হয় তা এখনো রহস্য। বিজ্ঞানীদের মতে, মা স্ত্রী পাখি ডিম পাড়ার সময় যদি দুটি নিউক্লিয়াসের ডিম দেয় তাহলে এমন হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিউক্লিয়াসে থাকবে Z ক্রোমোজোম এবং আরেকটি নিউক্লিয়াসে থাকবে W ক্রোমোজোম। দুটি নিউক্লিয়াসই Z স্পার্ম দ্বারা নিষিক্ত হয়ে একইসাথে কিছু ZZ ও কিছু ZW ক্রোমোজোম তৈরি করে। এর ফলে অর্ধেক স্ত্রী ও অর্ধেক পুরুষ পাখি বা মুরগির জন্ম হয়।
গাইনানড্রোমরফ মুরগির স্ত্রী লিঙ্গধারী অংশ স্ত্রী মুরগির মতো বৈশিষ্ট্য লাভ করে এবং পুরুষ লিঙ্গধারী অংশ পুরুষ মুরগির মতো বৈশিষ্ট্য লাভ করে। এমন মুরগির কঙ্কালের গঠন দুই পাশে দুই রকম হয়। ময়নাতদন্ত করে দেখা গেছে যে, এদের ভিতর অন্ডকোষ ও ডিম্বাশয় উভয়ই আছে। দ্বিপার্শ্বিয় বৈশিষ্ট্যের এই মুরগি ছোট আকারের ডিমও দেয়।
- নিশাত তাসনিম (সায়েন্স বী)