নাইটিনল হলো নিকেল ও টাইটেনিয়ামের মিশ্রণে তৈরি একটি এলয় (৫৫% নিকেল এবং ৪৫% টাইটেনিয়াম)। এখন আসি একে তাপ দিলে পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে কেন তার উত্তরে।
আমরা পদার্থের কঠিন, তরল ও বায়বীয় এই তিনটি অবস্থা সম্পর্কে জানি। কিন্তু কঠিন পদার্থেরও আলাদা করে কতগুলো অবস্থা থাকতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পানির কঠিন অবস্থা বা বরফের বেশ কয়েকটি অবস্থা রয়েছে। যেমন: হেক্সাগোনাল আইস ফেজ (৩২°F থেকে -১৫০°F), কিউবিক আইস ফেজ (-১৫০°F থেকে -৩৩০°F) ইত্যাদি। এই অবস্থা বা ফেজগুলো মূলত দেখা যায় অণুগুলো বিভিন্নভাবে সজ্জিত থাকার কারণে।
পানির মতো নাইটিনলেরও কতগুলো ফেজ বা অবস্থা আছে। এর মধ্যে একটি হলো অ্যাস্টেনাইট বা উচ্চ তাপমাত্রা অবস্থা (High Temperature Phase)। এখন নাইটিনলকে যেকোনো একটি আকৃতি যেমন: ★ তারার আকৃতিতে রেখে ৫০০°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে এর অণুগুলো অ্যাস্টেনাইট বা উচ্চ তাপমাত্রা অবস্থায় পরিণত হবে। এরপর যখন একে ঠান্ডা পানিতে রেখে ঠান্ডা করা হয় তখন এটি আরেকটি দশা মার্টেনসাইট অবস্থা বা নিম্ন তাপমাত্রা অবস্থায় পরিণত হয়। এই মার্টেনসাইট বা নিম্ন তাপমাত্রা অবস্থায় নাইটনলকে যতই দুমড়ানো-মোচড়ানো হোক না কেন এর অণুর বন্ধন ভেঙ্গে যায় না বা পরিবর্তন হয়ে যায় না। কেননা, অন্যান্য ধাতুকে বাঁকালে যেমন তার অণুগুলোর বন্ধন ভেঙ্গে যায় বা পরিবর্তন হয়, নাইটিনলে তা হয় না। তাই অণুর বন্ধন ঠিকই থাকে, শুধু অণুগুলোর স্ট্রাকচার পরিবর্তন হয বা নাইটিনর বেঁকে যায়; কিন্তু অণুর বন্ধন একই থাকে। ফলে নাইটিনল মার্টেনসাইট অবস্থাতেই থাকবে। এরপর যখনই নাইটিনলকে তাপ দেওয়া হবে বা গরম পানিতে রাখা হবে তখনই এটি পূর্বের অ্যাস্টেনাইট অবস্থায় ফিরে যাবে এবং অণুর বন্ধন সেই আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। ফলে নাইটিনল সেই আগের ★ তারার মতো আকৃতিই ধারণ করবে।
একেবারে সহজ কথায় বললে নাইটিনলকে উচ্চ তাপমাত্রায় একটি নির্দিষ্ট শেপে রেখে তাপ দিলে তা অ্যাস্টেনাইট অবস্থায় পরিণত হবে। এরপর ঠান্ডা করলে মার্টেনসাইট অবস্থায় পরিণত হবে। নাইটিনলকে বাঁকালেও এর অণুর বন্ধন ঠিক থাকে বলে এটি মার্টেনসাইট অবস্থাতেই থাকবে। এরপর আবার তাপ দিলে এটি সেই আগের অ্যাস্টেনাইটে ফিরে যাবে এবং আগের আকৃতিতে রূপান্তরিত হবে।