বাংলাদেশে সৌদি আরবের একদিন পর চাঁদ দেখা যায় কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
10,514 বার দেখা হয়েছে
"বাংলাদেশ ও বিশ্ব" বিভাগে করেছেন (71,130 পয়েন্ট)

3 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (71,130 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর


আগে কিছু জিনিস পরিষ্কার করা যাক -
অনেক জায়গা দেখবেন মানুষ লেখে যে চাঁদের হিসাবে নাকি সৌদি আরব ও বাংলাদেশে ২১ ঘণ্টা সময়ের পার্থক্য আর সূর্যের হিসাবে ৩ ঘণ্টা । এটা ভুল ৷ চাঁদ, সূর্য দিয়ে সময় গণনা করা হয় না ৷ সময় গণনা করা হয় পৃথিবীর নিজ অক্ষের আবর্তনের উপর ৷ ঘড়ি পৃথিবীর নিজ অক্ষে আবর্তনের বিপরীতে ঘোরে ৷ পৃথিবীর নিজ অক্ষের আবর্তনের কারণে আকাশে সূর্যের বিভিন্ন অবস্থানের দরুন সূর্যঘড়ির কাঁটার ছায়া সরতে থাকে এবং এ থেকে সময় গণনা করা যায় ৷ রাতে চাঁদের আলো বা চাঁদ থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসা সূর্যের আলোতেও এটা করা সম্ভব ৷ তাই সময় কখনই চাঁদ দিয়ে গণনা করা হয় না, সূর্য দিয়েও নয় ৷ এ অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে সময়ের পার্থক্য সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা হওয়া সম্ভব সেটা এগিয়ে বা পিছিয়ে যে কোনো একটা হতে পারে ৷ অনেক দেশ আন্তর্জাতিক সময় গণনা ব্যবহার করে না, নিজেদের মতো সময় ব্যবহার করে তাই সে সব জায়গায় সময়ের তফাত ২৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে যায় ৷ বাংলাদেশ ও সৌদি আরব দুই দেশই আন্তর্জাতিক সময় গণনা ব্যবহার করে তাই এই প্রসঙ্গ এখানে আসবে না ৷

দ্বিতীয় কথা হলো চন্দ্রবছর ৷ অনেকে বলে চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ২৯.৫৩ দিনে একবার আবর্তন করে ৷ এটাও ভুল ! এই সময়কালকে সাইনোডিক পিরিয়ড বলে যা পৃথিবীর হিসাবে গণনা করা হয় ৷ নির্দিষ্ট জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুর হিসাবে গণনা করলে চাঁদের আবর্তন কাল আসে ২৭.৩২১ দিন যা সাইডেরিয়াব পিরিয়ড নামে পরিচিত এবং এটাই আসল মান ৷ চাঁদের কক্ষপথে নতি থাকায় চাঁদের দশাগুলোর পুনরাবৃত্তি হতে ২৭ দিন ৭ ঘণ্টার বদলে আরও দুই দিন বেশি লেগে যায় ৷ একবার নতুন চাঁদ দেখা দেওয়ার গড়ে ২৯.৫৩ দিন পরে আবার নতুন চাঁদ দেখা দেয় ৷ এই সময়টা হলো এক চন্দ্রমাস ৷ সুতরাং চন্দ্রবছর গণনার সাথে চাঁদের আবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই বরং দশা পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে ৷

তৃতীয় কথা চাঁদ নাকি পশ্চিমে উদিত হয় ৷ এটাও ভুল ৷ প্রথম বর্ধমান দশা বা Waxing Crescent দশার প্রথম চাঁদ পশ্চিমে দেখা যায় যা ঈদের চাঁদ হিসেবে সুপরিচিত ৷ দেখে মনে হতে পারে চাঁদ তখন উঠছে কিন্তু আসলে সে তখন ডুবছে ৷ পৃথিবী নিজ অক্ষে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘোরে তাই পৃথিবীর আকাশে সবকিছুই পূর্বে উদিত হয় এবং পশ্চিমে অস্ত যায় ৷ অমাবস্যার পরদিন (আজকের দিন) চাঁদ সূর্যোদয়ের ঘণ্টা খানেক পর উদিত হয় এবং সূর্যাস্তের ঘণ্টা খানেক পর অস্ত যায় ৷ তাই সন্ধ্যায় পশ্চিমে চাঁদ সূর্য একসাথে থাকে ৷ সূর্য ডুবে গেলে আলো কমে যাওয়ায় চাঁদ ভেসে ওঠে ৷

মূল আলোচনায় আসি ৷ আপনি যত পূর্বে যাবেন রাত তত গভীর হবে এবং চাঁদ পশ্চিম দিগন্তের তত কাছে যেতে থাকবে এবং এক সময় ডুবে যাবে ৷ আর যত পশ্চিমে যাবেন দিনের আলে বাড়তে থাকবে চাঁদ পশ্চিম দিগন্ত থেকে তত উপরে উঠতে থাকবে এবং এক সময় সূর্যের প্রখর আলোয় অদৃশ্য হয়ে যাবে ৷ সৌদি আরবের সময় বাংলাদেশ থেকে ৩ ঘণ্টা পিছিয়ে ৷ সে দেশ আমাদের দেশ থেকে পশ্চিমে তাই একই আমাদের দেশে রাত হয়ে গেলেও (৩ ঘণ্টা পিছিয়ে) সৌদি আরবের সন্ধ্যা থাকবে ৷ তখন আমাদের দেশের সন্ধ্যার আকাশে চাঁদ দিগন্তের যত কাছে ছিল, ৩ ঘণ্টা দেরিতে (বাংলাদেশের তুলনায়) সন্ধ্যা হওয়ায় সৌদি আরবের সন্ধ্যার আকাশে চাঁদের অবস্থান তার চেয়ে কিছু উপরে থাকবে ৷ সেই চাঁদের দৃশ্যতাও কিছু বেশি হয় ৷ যেমন আমাদের দেশের আকাশে আজ সন্ধ্যায় চাঁদ ০.৪ শতাংশ দৃশ্যমান হবে ও দশার পরিমাণ শূন্য এবং দিগন্তের অনেক কাছে থাকবে, চোখে দেখা মুশকিল ! সৌদি আরবের আকাশে আজ চাঁদ ০.৫ শতাংশ দেখা দেবে এবং দশার পরিমাণ ০.০১ ৷ এটাও চোখে দেখা মুশকিল তবে বাংলাদেশের তুলনায় সহজ ৷ বাংলাদেশের আকাশে কাল চাঁদ ২.৬% দৃশ্যমান হবে ৷ দেখা আরও সহজ ৷ সে জন্য আমাদের দেশে পরেরদিন চাঁদ স্পষ্ট দেখা যায় ৷

নিচের ছবিতে তুলনা দেখা যাচ্ছে ৷ সৌদি আরবের আকাশে চাঁদের উজ্জ্বলতাও (magnitude) বেশি হবে আজ ৷ তাইন আমাদের দেশে আজ চাঁদ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কম ৷
লিখেছেনঃ রাশিক আজমাইন, টিম সায়েন্স বী

0 টি ভোট
করেছেন (1,210 পয়েন্ট)
পঞ্জিকা বলছে আগামী মঙ্গলবার ঈদ।! আগামীকাল অর্থাৎ ২ মে রাত ৩ টা বেজে ২০ মিনিট ২৬ সেকেণ্ড পর শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি শেষ হয়ে তৃতীয়া তিথি শুরু হবে। আর দ্বিতীয়া তিথি শুরু হবে ১ মে রাত ২ টা ৪৪ মিনিট ৪৫ সেকেণ্ড পর। সাধারণত প্রতিপদের পর ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত দিনের আলো থাকলে দ্বিতীয়া তিথির চাঁদ দেখা যায়। এক্ষেত্রে সেই সময়ের চাইতে অনেক বেশি সময় পাওয়া যাবে। তবে এটা শতভাগ নিশ্চিত যে কোনভাবেই সোমবার বাংলাদেশে ঈদ উদযাপিত হবে না, কারণ আগের দিন অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে দ্বিতীয়া তিথি শুরু হবে না বিধায় চাঁদও দেখা যাবে না। সোমবার সৌদি আরবে ঈদ উদযাপিত হবে। কিন্তু কেন এই তারতম্য? চলুন জানার চেষ্টা করি:

সৌরবর্ষ অনুযায়ী সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশ ৩ ঘণ্টা এগিয়ে। এতে বাংলাদেশ ৩ ঘণ্টা আগে চাঁদ দেখার কথা। কিন্তু তা তো হয়ই না, উল্টো সৌদি আরবে একদিন আগে রমজান, ঈদ শুরু হয়ে যায় । এর কারণ হল সৌর হিসেবে সৌদি আরবের সাথে আমাদের পার্থক্য মাত্র ৩ ঘণ্টা হলেও চন্দ্রের হিসেবে সৌদি আরব ও আমাদের পার্থক্য ২১ ঘণ্টার!

প্রশ্ন আসতে পারে যে এটা কিভাবে সম্ভব! আসলে পৃথিবীর গতির কথা তো জানিই। পৃথিবী নিজের অক্ষের চারিদিকে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রতিনিয়ত ঘুরে চলেছে, যাকে আমরা আহ্নিক গতি বলি। গতিটা সহজে বোঝা যাবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক বা অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ (Anti Clockwise) বললে। ঘড়ির কাঁটা পূর্বদিক থেকে পশ্চিমদিকে ঘুরে, আর পৃথিবী নিজ অক্ষে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঘুরে। মূলত সে কারণে আমরা প্রতিদিন সূর্যকে পূর্বদিকে উদিত হয়ে পশ্চিমদিকে অস্ত যেতে দেখি।

এখন চাঁদ বেশ ধীরে নিজ অক্ষে আবর্তনরত। চাঁদের আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি সমান ২৭-২৯ দিন। ফলে প্রতিদিন পশ্চিমের দেশসমূহ সবার আগে চাঁদের উন্মোচন দেখতে পায়। আমরা তো জানিই, সূর্যোদয় হয় পূর্ব থেকে,তবে চাঁদের ক্ষেত্রে উল্টো। যদিও চাঁদও পূর্বে উদিত হয়ে পশ্চিমে অস্ত যায়, তবুও পশ্চিমারা চাঁদের আলো সবার আগে পায়।

কেন এক দেশে চাঁদ দেখা গেলেও অন্য দেশে দেখা যেতে দেরি হতে পারে। কেননা খালি চোখে চাঁদকে দেখতে হলে চন্দ্র আর সূর্যের মাঝে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ থাকতেই হবে, এবং যে পরিমাণ দূরত্ব অর্জন করলে এই কোণ তৈরি হবে, সে পরিমাণ যেতে যেতে চাঁদের ১৭ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এ কারণেই আজ আমেরিকাতে চাঁদ দেখে গেলেই যে বাংলাদেশেও দেখা যাবে, সেটা ভুল ধারণা। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই কোণ অর্থাৎ ১০.৫ ডিগ্রি অর্জন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দেখা যাবে না। একই বিষয় সৌদি আরব ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই সংকট কোণকে ইলঙ্গেশন (Elongation) বলে। তাই চাঁদের বয়স কত সেটা আদৌ আসল কথা নয়, সেই কোণ হয়েছে কিনা সেটার উপর নির্ভর করে চাঁদ দেখা যাবে কিনা।

ফলে আমরা সৌদি আরব থেকে ৩ ঘণ্টা সূর্যের হিসেবে এগিয়ে থাকলেও, চাঁদের হিসেবে ২১ (২৪-৩=২১) ঘণ্টা পিছিয়ে আছি। ২১ ঘণ্টা প্রায় ১ দিন। অর্থাৎ আমরা প্রায় একদিন পিছিয়ে আছি। সেজন্যই সৌর বছরের হিসেবে বাংলাদেশে আমরা সৌদি আরবের একদিন পরে চাঁদ দেখি, আর একদিন পরে ঈদ উদযাপিত হয়।
0 টি ভোট
করেছেন (43,930 পয়েন্ট)
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের একদিন পর নতুন চাঁদ দেখা যায় আবার আরব বিশ্বে বাংলাদেশের তিন ঘণ্টা পর সূর্যাস্ত হয়। সে জন্য তিন ঘণ্টা পর আরব বিশ্ব নতুন চাঁদ দেখতে পেলেও সময়ের ব্যবধানের কারণে বাংলাদেশে তা দেখতে পাওয়া যায় না।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 346 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 582 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
3 টি উত্তর 935 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,679 জন সদস্য

63 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 60 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...