- বেলচার সি স্নেক ( Hydrophis belcheri)
এই সাপের মাত্র কয়েক মিলিগ্রাম বিষই ১০০০ মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এদের বিষের পরিমাণও বেশি। সাগরের গভীরে এদের বিচরণ থাকায় সাধারণত জেলেরা এই সাপের কামড়ের শিকার বেশি হন। জেলেরা যখন জাল তোলেন তখন সমুদ্রের তলদেশ থেকে এরা জালের সঙ্গে উঠে আসে। বেলচার উত্তর-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সাগরে বেশি দেখা যায়। তবে মজার ব্যাপার হলো একটু আদর পেলে এরা সহজেই বশ মানে।
- রেড ব্যাক স্পাইডার (Latrodectus hasselti)
বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত মাকড়সা হল অস্ট্রেলিয়ার রেডব্যাক স্পাইডার। গবেষকদের মতে, একজন পূর্ণবয়ষ্ক মানুষকে ধরাশায়ী করার পক্ষে এই মাকড়সার বিষের ১৪ হাজার ভাগের মাত্র এক ভাগই যথেষ্ট! তবে বিষাক্ত প্রজাতির মাকড়সাদের আকৃতির বিচারে রেডব্যাক স্পাইডারের স্থান সবচেয়ে শেষে। বিষাক্ত এই মাকড়সাটি লম্বায় মাত্র ০.৪ ইঞ্চি। রেডব্যাক স্পাইডারের আকৃতি একটা দেশলাই কাঠির বারুদের অংশের মতোই। বছরে অন্তত ২-৩ বার প্রায় ২৫০টি করে ডিম পাড়ে এই রেডব্যাক স্পাইডার।১৮৭০ সালে প্রথম রেডব্যাক স্পাইডারের সন্ধান মেলে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও নিউজিল্যান্ড, বেলজিয়ামেও এর দেখা মেলে। ১৯৫৬ সালে রেডব্যাক স্পাইডারের বিষের অ্যান্টি ভেনম আবিষ্কৃত হয়েছে। এর পর থেকে এই মাকড়সার কামড়ে গুরুতর অসুস্থ হলেও মানুষের মৃত্যু খবর তেমন আর পাওয়া যায়নি। তবে রেডব্যাক স্পাইডারের কামড়ে প্রতিষেধক দেওয়ার পরও একজন পূর্ণবয়ষ্ক মানুষ প্রায় ২৪ ঘণ্টা আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকেন।
- ডেথ স্টকার স্করপিয়ন (Leiurus quinquestriatus)
পৃথিবীতে যে কয় প্রজাতির বিষধর বিছে আছে তাদের মধ্যে ডেথস্টকার স্করপিয়ন অন্যতম। এরা উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির বাসিন্দা। হলদে সবুজ রঙের এই বিছের দৈর্ঘ্য ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি মাত্র। এরা সাধারণত মরুভূমির ছোট ছোট গর্তে কিংবা পাথরের আড়ালে বসবাস করে। অন্যান্য বিছেদের উপাঙ্গ মোটা হলেও এদের উপাঙ্গগুলো চিকন এবং পাতলা। এদের লেজের আগার হুল কিছুটা বড় হলেও তুলনামূলকভাবে দুর্বল। শিকার ধরার সঙ্গে সঙ্গে এই হুল না ফোটাতে পারলে সেটি ভেঙেও যেতে পারে। তাই এদের ক্ষিপ্রতার সঙ্গে শিকার করতে হয়। মারাত্বক বিষধর এই বিছের কামড়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। বিশেষত যাদের এলার্জি কিংবা হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এদের বিষ মৃত্যুর কারণও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই বিষ মানুষের চিকিৎসার কাজেও ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে মস্তিষ্কের টিউমার অপসারণ এবং বহুমূত্র রোগীদের শরীরে ইন্সুলিনের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে বেশ কার্যকর। এদের আয়ুষ্কাল ৪ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
- ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং স্পাইডার (Phoneutria nigriventer)
এই মাকড়সার পা গুলো ৫.১ থেকে ৫.৯ ইঞ পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের দেহ সাধারনত ১৭ থেকে ৪৮ মিলিমিটার পর্যন্ত চওড়া হতে পারে। এদের বিষ মূলত নিউরো টক্সিক। এই মাকড়সা ভয়ানক প্রকৃতির বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় কারণ ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে, বিশেষত ফোনুটিরিয়া প্রজাতিগুলি সাধারণত দিনের বেলা লুকিয়ে থাকার জন্য অন্ধকার জায়গা অনুসন্ধান করে।এটি বাড়ি, কাপড়, গাড়ি, বুট, বাক্স এবং গাছের গুড়িতে লুকিয়ে থাকে, যেখানে দুর্ঘটনাক্রমে বিরক্ত হলে তারা কামড়ায়। এই মাকড়সার ওয়ান্ডরিং নাম কারণ তারা রাতে জঙ্গল মেঝেতে ঘুরে বেড়ায়। দিনের পর দিন তারা পতিত গুড়ি এবং পাথরের নিচে, কলা গাছের গায়ে(যাতে "কলা মাকড়সা" ডাক নাম) ,ব্রোমেলিয়াডসের নিচে, ছত্রাকের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।শুষ্ক মৌসুমে এপ্রিল থেকে জুন মাসে এই প্রজাতির ঘন ঘন দেখা মেলে।
- বক্স জেলিফিস (Cubozoa sp.)
সাধারনত এই জেলীফিশ লম্বায় ৩ মিটার এবং প্রস্থে ২৫ সেমি হয়ে থাকে। এদের ওজন প্রায় ২ কেজির মত হয়ে থাকে। স্বচ্ছতা এবং উজ্জ্বলতার জন্য সমুদ্রের তলদেশে ওদের বিচরণ খুবই মনোমুগ্ধকর।তবে এরা দেখতে ভইয়ঙ্করও বটে ।এদের পেটে অনেক চোখ থাকে যার ফলে এদেরকে ভয়ংকর দেখায়। তবে এরা আরও বেশি ভয়ংকর অন্যান্য জেলিফিশের মধ্যে এবং কুখ্যাতও। কারন এরা তাদের শক্তিশালী বিষ ব্যবহার করে মাছ এবং চিংড়ীকে মুহূর্তে হত্যা করতে পারে ।তাদের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর। এই বিষ হৃদযন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র এবং ত্বকের কোষকে আক্রমন করে । এটি এতই বেদনাদায়ক যে এর দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হলে ৩ মিনিটের মাথায় মৃত্যু হবে।তাই এদেরকে “সমুদ্রের বোলতা” বলা হয়, এরা সাধারনত উত্তর অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে এবং ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরে বাস করে। অন্যান্য জেলি ফিসের তুলনায় এরা সাতারে বেশি দক্ষ হয়। সাধারনত এদের জীবনকাল ১ বছর মত হয়ে থাকে।
- বুমস্ল্যাং (Dispholidus typus)
বুমস্ল্যাং গোছের সাপ আফ্রিকান অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাপের অন্যতম যার অত্যন্ত টক্সিক বিষ রয়েছে। এর কামড়ে রক্ত জমাট হওয়ার ক্ষমতা থাকেনা ফলে রক্তপাতের শিকার হয়ে মানুষ মারা যায়। এই গেছো সাপ মধ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা এলাকায় দেখা যায় এবং পূর্ণবয়স্ক একেকটি সাপ ১০০থেকে ১৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। কোন কোনটি ১৮৩ সেন্টিমিটারও হয়।
- ব্লু রিং অক্টোপাস (Hapalochlaena lunulata)
সাধারণ পরিবেশে এটি হালকা বাদামী রংঙের। কিন্তু যখন আগ্রাসী হয়ে ওঠে তখন এর গায়ে উজ্জ্বল নীল রংয়ের রিং দেখা যায়। যখন একটি কামড়ায় তখন এর বিষাক্ত লালা স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মানুষটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।ছোট আকারের সত্ত্বেও, কয়েক মিনিটের মধ্যে ছয়টি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে হত্যা করার জন্য পর্যাপ্ত জীবাণু বহন করে। তাদের কামড় ক্ষুদ্র এবং প্রায়ই বেদনাদায়ক, তবে শ্বাসযন্ত্রের বিষণ্ণতা এবং প্যারালাইসিস হওয়া শুরু না হওয়া পর্যন্ত বোঝা যায় না। এই অক্টোপাস বিষের অ্যান্টিভেনোম পাওয়া যায় না। জাপান থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ভারতীয় মহাসাগরগুলিতে জোয়ারের পুকুরে এবং প্রবাল শিলায় পাওয়া যায়। এদের তাদের হলুদ ত্বক এবং চরিত্রগত নীল এবং কালো রিং দ্বারা চিহ্নিত করা যেতে পারে যা নাটকীয়ভাবে রঙ পরিবর্তন করে যখন শিকার করে। তারা ক্ষুদ্র প্রাণী খায়, যার মধ্যে রয়েছে কাঁকরা, হার্মিট ক্রবস, চিংড়ি, এবং অন্যান্য ক্রাস্টাসিয়ান।
- কার্পেট ভাইপার (Echis pyramidum)
এটি লম্বায় খুব বেশি হতে পারে না; মাত্র ৩০ ইঞ্চি । প্রতি কামড়ে এদের থেকে নির্গত গড় ভেনমের পরিমান কুড়ি মিলিগ্রাম যা ৩৩০০টি ইঁদুর বা ২ জন মানুষকে একসঙ্গে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এদের ভেনম আভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঘটায় যা অনেক ক্ষেত্রে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । আফ্রিকায় এদের বেশি পাওয়া যায় ।
- কিং কোবরা (Ophiophagus hannah)
কিং কোবরা (ওফিওফ্যাগাস হানাহ্) হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিষাক্ত সাপ এবং বেশিরভাগই পশ্চিমঘাটের অ্যাজুম্বে রেনফরেস্টে পাওয়া যায়।কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাডুর পশ্চিমঘাট বিষাক্ত কিং কোবরার বাসস্থল। এরা গভীর জঙ্গলে বসবাস করে এবং অন্য সব সাপের চেয়ে এদের কদর অনেক বেশি।
- পাফার ফিশ (Tetraodonitidae sp.)
বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত মাছ পাফার ফিশ! এরা এত বেশি বিষাক্ত যে, অন্য প্রাণী ভুল করে খেয়ে ফেললে মৃত্যুর হাত থেকে আর রক্ষা নেই। পাফার ফিশের ত্বকেও রয়েছে মারাত্মক বিষ। প্রায় ১৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে এ মাছের শরীরজুড়েই রয়েছে অসংখ্য কাঁটা। শরীর ফুলালেই কাঁটাগুলো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। পাফার ফিশের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এরা শরীরের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে জল ঢোকাতে পারে। জল ঢোকাতে ঢোকাতে এক সময় তাদের আর মাছ বলে মনে হয় না, মনে হয় বেলুন। তাই এই মাছকে কেউ কেউ বেলুন মাছও বলে। যখন এরা ফুলে যায় তখন এদের কাঁটাগুলো খুব শক্ত হয়ে যায়। ধারণা করা হয়, আত্মরক্ষার জন্য এরা এ কাঁটাগুলো ব্যবহার করে।পাফার ফিশ বেশি দেখা যায় ফ্লোরিডা, বাহামা, ব্রাজিলের দক্ষিণাংশসহ বিশ্বের প্রায় সব সাগরেই। পৃথিবীতে পাফার ফিশের প্রায় ১৯টি গণ ও ১৩০টির মতো প্রজাতি রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ১৪ প্রজাতির পাফার ফিশ শুধু স্বাদুজলে বাস করে। বাংলাদেশে পাফার ফিশের ১৩টি প্রজাতি রয়েছে, যার দুটি স্বাদুজলের এবং বাকিগুলো সামুদ্রিক। বিভিন্ন অঞ্চলে এদের বিভিন্ন নামে ডাকে। কোনো কোনো দেশে এটাকে টেপা ফিনা বলা হয়। জাপানে পাফার ফিশ ‘ফুগু’ নামে পরিচিত। জাপানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফুগুর ত্বক ও শরীরে রয়েছে প্রচুর বিষাক্ত টিউরোটক্সিন নামক উপাদান, যা সায়ানাইডের তুলনায় ১২০০ গুণেরও বেশি কার্যকরী বিষ। এর বিষ কোনোভাবে মানুষের পেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। খুব কম সময়ের মধ্যেই মানুষ মারা যায় অ্যাফাইজিয়াথন রোগে। এর কোনো চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। এমন বিষাক্ত জেনেও এ মাছ মজা করে খায় জাপান, চীন, কোরিয়া প্রভৃতি দেশের মানুষ।
এই প্রাণীটিকে খুঁজে পাওয়া যায় ইন্দোনেশিয়া, হ্যাওয়াই এবং ক্যারিব্যানে। এদের খোলস সাদা মারবেলের সেল দিয়ে তৈরি বলে মনে হয়।এদের ধারালো দাঁতের মত দেখতে টেটা বা Harpoon ই এদেরকে অনেকটা হিংস্রাত্মক সৃষ্টি করেছে। এদের এই টেটাতে প্রচুর পরিমাণে টক্সিন বিদ্যমান থাকায় এদেরকে আবার সিগারেট স্নেইলও বলা হয়। তবে এরা কাছাকাছি থাকলেও এদের স্পর্শ না করাটাই মঙ্গল।এদের থেকে কমপক্ষে ৪-৬ ইঞ্চিদুরত্ব বজায় রাখায় ভাল।
- পয়সন ডার্ট ফ্রগ (Dendrobatidae sp.)
এই প্রাণীটিকে নর্থান সাউথ আফ্রিকাতে দেখতে পাওয়া যায়। এরা মানুষের জন্য বেশি বিপদ্বজনক। ছোট আকৃতির গোল্ডেন ডার্ট কলোম্বিয়াতে এবং বড় দৈর্ঘের গোল্ডেন ডার্ট ২ ইনচি হয়ে থাকে। এদের বিষকে বলে ব্র্যাট্রাছো টক্সিন। যা ১০ টি মানুষকে মারতে সক্ষম। এদের বিষ সাধারনত এদের স্কিনে থাকে। যা স্পর্শের ফলে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে। তবে দুঃখের বিষয় হলো বন নিধনের ফলে দিন দিন এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
- ব্ল্যাক মাম্বা (Dendroaspis polylepis)
ভয়ঙ্কর আর বিষের দিক থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় সাপ ব্লাক মাম্বা। এর শরীরের উপরের দিকটা সাদা হলেও এর মুখের ভেতরটা কালো। এই ব্যতিক্রমী চেহারার জন্য এর নাম ব্লাক মাম্বা। বাস আফ্রিকায়। বিদ্যুতের মতো ক্ষিপ্ত ও প্রচণ্ড উত্তেজিত এ সাপের নিউরোটক্সিন বিষের ভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ। এ সাপ ছোবল দিলে মাত্র কয়েক মিনিটেই যে কেউ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন। এরা এতই ভীতু যে, কাউকে দেখলেই নিজের ওপর আক্রমণের ভয়ে তার উপরে আক্রমণ চালায়। যে কারণে অন্য সাপ থেকে এ সাপ হয়ে উঠেছে ভয়ঙ্কর। প্রাণীবিদদের মতে, এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুততম সাপ। যার গতি ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার। তাছাড়া এটি একই সারিতে পরপর ১২ বার কামড় দিতে পারে।
- স্টোন ফিশ (Synaneia verrucosa)
বিষাক্ত প্রাণীগুলোর মধ্যে অন্যতম হল স্টোন ফিশ বা পাথুরে মাছ। এই জাতীয় মাছ পৃথিবীর অন্যতম বিষাক্ত মাছ বলে পরিচিত। তাদের দৈহিক গঠন, রঙ ও স্বভাব চরিত্রের জন্যই এমন নামকরন করা হয়েছে। এর পাথুরে আবরন ক্যামোফ্লেজের জন্য খুবই সাংঘাতিক কাজের। এই প্রাণীটির বিষের আক্রান্তে টেম্পরারী পঙ্গু বা প্যারালাইসড হয়ে যেতে পারেন, আর যদি খুব দ্রুত চিকিৎসা না নেওয়া যায়, তবে যম এসে কিন্তু হ্যালো জানাতে ভুলবে না। অতএব ভুলেও একে পাথর মনে করে এর উপর পা ফেলা যাবে না।ফ্লোরিডা, ক্যারিবিয়ান ও ইন্দো-প্যাসিফিক উপকূলীয় অঞ্চলে ও তারা বাস করে। এদের কোনো কোনো প্রজাতি নদীতেও বাস করে। বসবাসের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয় পাথুরে জায়গা। এরা সর্বোচ্চ ৩৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। এমন ক্ষুদ্র গড়ন এবং ধূসর ও বৈচিত্র্যময় রঙের কারণে এরা অতি সহজেই পাথরের সঙ্গে দেহকে মিশিয়ে রাখতে পারে। এমন অবস্থায় এদেরকে পাথর থেকে আলাদা করা খুবই কঠিন। ফলে এদের দ্বারা যে কোনো প্রাণী সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।এই প্রাণীর শরীরে ছড়ানো ছিটানো রয়েছে বিষাক্ত কাঁটা এবং এই বিষাক্ত কাঁটা হাঙ্গর ও অন্যান্য লুন্ঠনকারী,অনিষ্টকারী প্রাণীর হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। এদের পিঠে অবস্থিত সূচের মতো কাঁটাগুলোর গোড়ায় থাকে এক ধরনের বিষাক্ত গ্রন্থি। এরা সাধারণত কাউকে আক্রমণ করে না। বিরক্তবোধ করলে পিঠের কাটা খাড়া করে পাথরের সঙ্গে নিজেকে আড়াল করে রাখে।কোনো ব্যক্তি চলাচলের সময় এদের পিঠে পা রাখলেই এদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। পিঠে চাপ পড়লে গ্রন্থি থেকে নিউরোটক্সিন বিষ নিঃসরণ হয়। এ বিষে আক্রান্ত মানুষ প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই শরীরের কোষগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে ধীরে ধীরে এক সময় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।এই বিষের কারণে ভিকটিমের হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা লোপ পায় এবং শরীর দ্রুত নিস্তেজ হয়ে আসে। আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা বিলম্বিত হলে তাকে আর বাঁচানো যায় না।
- ইনল্যান্ড তাইপেন (Oxyuranus microlepitodus)
এক ছোবলে তাইপেন এত বিষ ছোড়ে যা ৬০ থেকে ১০০ লোকের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট।প্রাণিবিদ্ রা বলেন তাইপেনের এক ছোবল অন্তত ৫০টি কোবরার ছোবলের সমান। এদের বিষে আছে মারাত্মক ধরনের নিউরোটক্সিন। যা মানুষের শরীরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পুরোপুরি বিকল করে দিতে পারে। এর ছোবল পেশি অবশ করে হার্ট বন্ধ করে দেয়। আরেকটি টক্সিন রক্ত জমাট করে ঘন স্যুপের মতো করে দেয়। এদের বিষের আরেকটি ভয়ঙ্কর দিক হচ্ছে, এ বিষ মানুষের রক্তে মিশলে রক্ত শক্ত হয়ে যায়। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এই সাপের মানুষ মারার কোনো রেকর্ড নেই। কারণ এগুলো অস্ট্রেলিয়ার এমন প্রান্ত এলাকায় বাস করে যেখানে লোকজন খুব একটা থাকে না। ভয়ঙ্কর বিষাক্ত হলেও স্বভাবে এরা খুব শান্ত। সব মিলিয়ে তাইপেনকেই সবচেয়ে বিষাক্ত সাপের মর্যাদা দিয়েছেন প্রাণীবিদরা। এই সাপ সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার প্রান্তদেশে দেখা যায়। লম্বায় এগুলো প্রায় আট ফুটের মতো হয়ে থাকে।
কি? দেখে নিশ্চই অবাক হলেন? হে হে। অবাক হবার কোনো কারণ নেই। কারণ মানুষই সকল প্রাণীর তুলনায় বেশি হিংস্রাত্মক ও বিষাক্ততা র পরিচয় তুলে ধরেছে। মানুষ,গত ১০০০০ বছর ধরে একে অন্যকে হত্যা করে আসছে। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। সারা বিশ্বে টেরোরিস্ট সংগঠন তৈরি করছে। পৃথিবীর গ্লোবাল ওয়ারমিংয়ের ও ডিসট্রাকশনের জন্য মানব জাতিই দায়ী। যা পৃথিবী ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। তাই মানুষ ছাড়া এই তালিকা অসম্পূর্ণ।