আইকিউ টেস্ট কী এবং কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
3,531 বার দেখা হয়েছে
"আইকিউ" বিভাগে করেছেন (20,400 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (20,400 পয়েন্ট)
"বুদ্ধি অভিনয়ের একটি উপায়। আপনি যদি বুদ্ধিমানের মতো অভিনয় করেন, তবে আপনি আপনার আইকিউ নির্বিশেষে একজন চৌকস ব্যক্তি।"

- আমেরিকান লেখক ব্রায়ান ট্রেসি।


"তোর আইকিউ তো গাধার লেভেলের!" "তোর আইকিউ মুরগির চেয়েও কম!" এরকম কথা আমরা হর-হামেশাই শুনে থাকি। আবার আমরা সবাই জানি যে, বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের আইকিউ ছিলো ১৬০! আইকিউ শব্দটার সাথে আমরা কম-বেশি সকলেই পরিচিত। তবে আমরা কতটুকু জানি এই আইকিউ এর ব্যাপারে?

◑আইকিউ কী?

ইংরেজি I.Q এর পূর্ণরূপ হচ্ছে- Intelligence Quotient। অর্থাৎ, বুদ্ধিমত্তার অনুপাত কিংবা এক কথায় বলা যায় 'বুদ্ধাঙ্ক'। এটি মূলত একজন মানুষের মানসিক বয়স এবং প্রকৃত বয়সের অনুপাত। যা দ্বারা বোঝা যায় যে, একজন মানুষ তার বয়সের তুলনায় কতটুকু বুদ্ধিমান কিংবা তার বুদ্ধির বিকাশ কেমন! আইকিউ নির্ণয়ের জন্য একটি সূত্র ব্যবহৃত হয়।

আইকিউ = (মানসিক বয়স/প্রকৃত বয়স)*১০০

মানসিক বয়স ও প্রকৃত বয়সের অনুপাত তো ঠিক আছে!  তবে এর সাথে ১০০ গুণ করার কারণ কী? এটি মূলত করা হয় আইকিউ নির্ণয়ে দশমিক এড়াতে। এখানে ১০০ একটি ধ্রুবক। যার আইকিউ যত বেশি তাকে তত বেশি বুদ্ধিমান হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।  আইকিউ টেস্ট থেকে প্রাপ্ত মান অনুযায়ী মানুষকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ে থাকে! যেমন :

৭০ এর কম    : জড় বুদ্ধিসম্পন্ন
৭০-৯০        : স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন
৯০-১২০       : স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন
১২০-১৪০      : অত্যন্ত বুদ্ধিসম্পন্ন
১৪০ এর উপরে : জিনিয়াস!  

এই হচ্ছে মোটামোটিভাবে ব্যবহৃত একটি শ্রেণিবিভাগ।  



◑কীভাবে এলো এই আইকিউ টেস্ট?

১৮৮২ সালের কথা। ব্রিটিশ পরিসংখ্যানবিদ ফ্রান্সিস গাল্টন সর্বপ্রথম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মানুষের বুদ্ধিমত্তা নির্ণয়ের জন্য কিছু সাধারণ পরীক্ষা তৈরি করেন। এরপর বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ফ্রান্সের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ মনোবিজ্ঞানী মনোবিদ আলফ্রেড বিনে এবং থিওডর সাইমনের শরণাপন্ন হন এমন কোনো পদ্ধতির জন্য যার মাধ্যমে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে এবং সে অনুযায়ী কোন শিশুর কোন বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার তা জানা যাবে! ১৯০৫ সালে মনোবিদ আলফ্রেড বিনে এবং থিওডর সাইমন মিলে শিশুদের মৌখিক যুক্তি, স্মৃতিশক্তি, বিভিন্ন কাজে দক্ষতা এবং উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের জন্য একটি পরীক্ষা পদ্ধতি তৈরি করেন এবং তার উপর ভিত্তি করে স্কোরিংও চালু করেন। তারা নির্দিষ্ট বয়সের শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নমালা তৈরি করেন এবং তাদের পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তে আসেন যে তারা তাদের সমবয়সী অন্য শিশুদের চেয়ে বেশি, সমান না-কি কম বুদ্ধিমান! তাদের এই পরীক্ষা পদ্ধতিটি বিনে-সিমন টেস্ট নামে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। নানা পরিক্রমার মধ্য দিয়ে ১৯১২ সালে এটি Intelligence  Quotient বা I.Q টেস্ট হিসেবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।  

◑আইকিউ টেস্ট কীভাবে করা হয়?

আইকিউ টেস্টের প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ মনে হলেও আদতে তা নয়। একটি নির্দিষ্ট বয়সের মানুষের জন্য নির্দিষ্ট প্রশ্নমালা তৈরি করা হয়। এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দেওয়ার পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে তাদের মানসিক বয়স নির্ণয় করা হয়। তারপর আইকিউ নির্ণয়ের সূত্র ব্যবহার করে আইকিউ নির্ণয় করা হয়। ধরা যাক- একটি শিশুর বয়স প্রকৃত ১০ বছর। তার বয়সের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নমালার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর সে যদি দক্ষতার সাথে সঠিকভাবে দিতে পারে, তবে তার মানসিক বয়স হবে ১০। আবার সে যদি ১৩ বছরের শিশুর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নমালার প্রশ্নসমূহের উত্তর দিতে পারে, তবে তার মানসিক বয়স হবে ১৩! সেক্ষেত্রে -

তার আইকিউ= (১৩/১০)*১০০
           = ১.৩*১০০
           = ১৩০

অর্থাৎ, একটি ১০ বছর বয়সী শিশু যদি ১৩ বছর বয়সী শিশুর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নমালার প্রশ্নসমূহের সঠিক উত্তর দিতে পারে, তবে তার আইকিউ হবে ১৩০!  আইকিউ অনুযায়ী নির্ধারিত ক্যাটাগরি প্রয়োগ করা হলে দেখা যাবে সে অত্যন্ত বুদ্ধিমান শিশু!  



◑আইকিউ আমাদের বুদ্ধিমত্তা পরিমাপে কতটুকু কার্যকর?

আইকিউ টেস্ট থেকে যা ফলাফল পাওয়া যায় তা নিঃসন্দেহে মানুষের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ধারণা দেয়। তবে এটি কতটুকু কার্যকর? আইকিউ টেস্টই কি সব? আমরা পূর্বে জেনেছিলাম যে আইকিউ টেস্ট করার জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করা হয়। এই প্রশ্নমালা এমন ভাবে তৈরি করা হয় যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সাধারণ জ্ঞান, গাণিতিক যুক্তি, স্মৃতিশক্তি, দৃষ্টিগত বিশ্লেষণ ক্ষমতা ইত্যাদি জানা যায়। তবে একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তা বিচারে কি এগুলোই সব? আইকিউ টেস্ট থেকে একজন মানুষের বিভিন্ন প্রকার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় ঠিকই তবে আইকিউ টেস্ট থেকে মানুষের আবেগ, সামাজিকতা, চারিত্রিক গুণাবলি, মানসিক চাপ নেওয়ার ক্ষমতা, সচেতনতা, স্বকীয়তা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, আধ্যাত্মিক বোধ ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই আইকিউ টেস্টে উহ্য থাকে। ফলে একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া সম্ভব হয় না। তবে একজন মানুষের যুক্তি, সম্যক জ্ঞান এবং উপস্থিত বুদ্ধি সম্পর্কে জানার জন্য আইকিউ কাজে দিতে পারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি শিক্ষাক্ষেত্রে এবং কর্মজীবনে সাফল্যের পূর্বাভাস দিতে পারে। তবে তা কতটুকু কার্যকর সেটি নিয়েই সকলে সন্দিহান! সর্বোপরি বলা যায় যে, আইকিউ টেস্ট মানুষের বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের জন্য কেবলমাত্র একটি আংশিক মাধ্যম হতে পারে, কখনোই একমাত্র মাধ্যম নয়।


আপনি কি কখনো নিজের আইকিউ পরীক্ষা করেছেন? না করে থাকলে করে ফেলতে পারেন! ইন্টারনেটেই অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে আইকিউ টেস্টের জন্য। তবে মনে রাখতে হবে যে, আইকিউ টেস্টই সব নয়।

- হায়াত মোহাম্মাদ ইমরান আরাফাত
0 টি ভোট
করেছেন (33,350 পয়েন্ট)
১৯১৬ খ্রীস্টাব্দে স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এল, এম, টারম্যান সর্ব প্রথম বুদ্ধি পরিমাপের গাণিতিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন এবং বুদ্ধাংক (Intelligence Quotient বা I.Q) শব্ধটি ব্যবহার করেন । যে কোন ব্যক্তির বুদ্ধি পরিমাপের জন্য বুদ্ধাংক ব্যবহার করা হয় ।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+4 টি ভোট
2 টি উত্তর 3,971 বার দেখা হয়েছে
07 নভেম্বর 2022 "আইকিউ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন ইমরান হোসেন (2,030 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
1 উত্তর 434 বার দেখা হয়েছে
06 ডিসেম্বর 2020 "আইকিউ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৫ (123,400 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
1 উত্তর 3,897 বার দেখা হয়েছে
28 জুন 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন মেহেদী হাসান (141,850 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

264,907 জন সদস্য

50 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 49 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    120 পয়েন্ট

  2. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  3. LloydE75582

    100 পয়েন্ট

  4. CarltonBrant

    100 পয়েন্ট

  5. LuannHardess

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...