ডার্ক ম্যাটার এর উপস্থিতি কিভাবে নির্ণয় করা হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
279 বার দেখা হয়েছে
"জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (2,630 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (43,940 পয়েন্ট)

 

dark energy, dark matter, discoveries, mystery, science, science story

পুরোটা পড়ার সময় নেই? ব্লগটি একবার শুনে নাও

ভেরা রুবিন এবং ওজনে গোলমাল

ষাটের দশক। পয়ত্রিশোর্ধ্ব এক মহিলা চিন্তিত মুখে বসে পেন্সিল চিবুচ্ছেন। একটা হিসেব মিলছে না।গুরুত্বপূর্ণ একটা হিসাব। মহিলার নাম ভেরা রুবিন, পেশায় গবেষক। গবেষণা করেন জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে।

রুবিন গ্যালাক্সির ঘূর্ণন-সম্পর্কিত একটা রিসার্চ করতে গিয়ে দেখলেন, গ্যালাক্সির কেন্দ্রের বাইরের দিকে তার ঘূর্ণন গতি যতটুকু হওয়ার কথা তার চাইতে বেশি। কতটুকু হওয়ার কথা? একটা গ্যালাক্সির মধ্যে যতটুকু ভর রয়েছে, তার মধ্যে মহাকর্ষ বল তত বেশি কাজ করে। আর মহাকর্ষ বল যত বেশি, কেন্দ্রের বাইরের দিকে তার ঘূর্ণন বল তত বেশি।

1 1

রুবিন দেখলেন, সেই অনুযায়ী ঘূর্ণনগতির অনুপাতে একটা গ্যালাক্সির যথেষ্ট পরিমাণে ভর ধরা পড়ছে না। যাকে বলে – “ওজনে কম আছে।” রুবিন অংক কষে সেই “অদৃশ্য” ভরের পরিমাণ বের করলেন। সেই পরিমাণ হচ্ছে গ্যালাক্সির তথা মহাবিশ্বের প্রায় ২৭ শতাংশ।

একটু অতীত থেকে ঘুরে আসি?

তিন দশক পিছনে ফিরে যাই। জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রিটয জুইকি “কমা গ্যালাক্সি ক্লাস্টার” নিয়ে গবেষণা করার সময় গ্যালাক্সি থেকে আগত দৃশ্যমান আলোর অনুপাতে ভর বের করেন। তারপর গ্যালাক্সির মহাকর্ষ বল থেকে এর ভর বের করলেন।

দেখলেন, আগের থেকে ভর বেশি আসছে। এক বাঁও মেলে না, দো বাঁও মেলে না –  এই বাড়তি ভর কোথা থেকে এল? জুইকি এই হিসাব না পাওয়া ভরের নাম দিলেন ডার্ক ম্যাটার।

এভাবেই ডার্ক ম্যাটারের ধারণার সূত্রপাত। জুইকি হিসাব-নিকাশ করে ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণও বের করলেন, তবে ভবিষ্যতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেল এর মধ্যে অনেক গড়মিল রয়েছে।

এর থেকে প্রায় ত্রিশ বছর পরে করা রুবিনের হিসাবটিই বলতে গেলে পুরোপুরি শুদ্ধ। জুইকিকে ডার্ক ম্যাটার ধারণার জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেও রুবিনের রিসার্চকেই এর প্রথম শক্ত প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হয়।

ডার্ক ম্যাটার ব্যাপারটা আসলে কী?      

ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি তো অনেক হল, এখন এই ডার্ক ম্যাটার ব্যাপারটা কী – এই বিষয়ে একটু আলোচনা করা যাক?

ডার্ক ম্যাটার হচ্ছে সেই ধরনের পদার্থ, যেটা আসলে যে কী ধরনের পদার্থ সে সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না এবং এখন পর্যন্ত এটাই এর সবচাইতে ভালো সংজ্ঞা! আদতেই এর উৎস সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না, জানিনা এর গঠন কেমন বা কী দিয়ে তৈরি।

2 1

আজব এক জিনিস এই ডার্ক ম্যাটার। আলোর সাথে সম্ভবত এর এক ধরনের শত্রুতা আছে, কারণ ডার্ক ম্যাটার ভুলেও আলোর সাথে কোন সম্পর্কে যায় না। না সে আলো শোষণ করে, না করে প্রতিফলন। ফলে একে দেখাও যায় না। কেবল আলো নয়, আমাদের যে কোন তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাথেও সে একই রকম আচরণ করে।

কী দিয়ে তৈরী এই ডার্ক ম্যাটার?

ডার্ক ম্যাটার কী দিয়ে তৈরী তা এখনও বের করা না গেলেও এইটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে আমাদের পরিচিত কোনকিছুর সাথে এর কোন মিল নেই। ইলেকট্রন, প্রোটন বা নিউট্রন নয়, ডার্ক ম্যাটার এমন কিছু দিয়েই তৈরী যা আমরা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারি নি।

তবে, কোয়ান্টাম ফিজিক্স “এক্সিয়ন” নামে এক ধরণের পারমাণবিক কণার কথা বলে, যার বৈশিষ্ট্যের সাথে ডার্ক ম্যাটারের কিছু বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। হতে পারে ডার্ক ম্যাটার এক্সিয়ন দিয়ে তৈরী, আবার নাও হতে পারে। বিজ্ঞান এখনও উত্তর খুঁজছে।

একটি হাইপোথিসিস অনুযায়ী, ডার্ক ম্যাটার উইম্প (WIMP= Weak Interacting Massive Particle) দিয়ে তৈরী, যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা পদার্থের সাথে এতই দুর্বলভাবে মিথস্ক্রিয়া করে যে বিশাল ভরের কোন ডার্ক ম্যাটার আমাদের ভেতর দিয়ে অনায়াসে চলে যেতে পারবে, আমরা টেরই পাব না!

একেবারেই কি কিছু জানি না?

ডার্ক ম্যাটারের একটা বৈশিষ্ট্য জানা গেছে, তা হল তার মহাকর্ষ বলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে, এবং এই মহাকর্ষ বল গ্যলাক্সি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বিপুল পরিমাণ ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্ব না থাকলে গ্যালাক্সিগুলোর আকার যাকে বলে একেবারে “ছেড়াবেড়া” হয়ে যেত!  

মোটামুটি এই হচ্ছে ডার্ক ম্যাটার। এবার আরেকটা ডার্ক বিষয়ে কথা বলা যাক। ডার্ক এনার্জি!

ডার্ক এনার্জির পূর্বকথা  

আজ থেকে প্রায় ১৩.৮২ বিলিয়ন বছর আগে মহাবিশ্বের সমস্ত ভর একটি বিন্দুতে কেন্দ্রিভূত ছিল। এই কেন্দ্রিভূত অবস্থাকে বলা হত “সিঙ্গুলারিটি”। তারপর – বুম ! প্রচন্ড শক্তিতে বিন্দুটি বিস্ফোরিত হল – সব ভর মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল। এই বিস্ফোরণকেই বলা হয় বিগ ব্যাং। তারপর এই ছড়িয়ে পড়া চলতেই থাকলো, সম্প্রসারিত হতে লাগল মহাবিশ্ব।

এই সম্প্রসারণ প্রথম ধরা পড়ে বিশ শতকের দিকে। এডউইন হাবলের তৈরী হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়ল, মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। সম্প্রসারিত হচ্ছে, ভালো কথা, হতে থাকুক। বিজ্ঞানীরা অনুমান করলেন, গ্যালাক্সিগুলোর নিজেদের মধ্যকার মহাকর্ষ বলের কারণে এই সম্প্রসারণের গতি সময়ের সাথে কমতে থাকবে।

কিন্তু তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল অপরিসীম বিস্ময়। ১৯৯৮ সালে দুটি ভিন্ন ভিন্ন গবেষক দল একটি বিশেষ ধরনের সুপারনোভা পর্যবেক্ষণ করে অদ্ভুত একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলেন। তারা দেখলেন, সুপারনোভাটি যে কেবল পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তাই নয়, তার দূরে সরে যাওয়ার গতি সময়ের সাথে বাড়ছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের “ত্বরণ” ঘটছে।

বিজ্ঞানীরা গালে হাত দিয়ে বসে পড়লেন। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি কমার বদলে বাড়ছে – এটা প্রায় অবিশ্বাস্য একটি ব্যাপার। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম – একটা বলকে গড়িয়ে দেয়া হল, তারপর সময়ের সাথে বলটার গতি কমার পরিবর্তে উল্টো আপনা আপনি বাড়া শুরু করল!

গতি বাড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির কোন না কোন উৎস থাকতে হবে, তাহলে এই সম্প্রসারণের গতি বৃদ্ধির উৎস কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জন্ম নিল “ডার্ক এনার্জি”র ধারণা।

ডার্ক এনার্জি কী ধরনের এনার্জি?

এই ডার্ক এনার্জি কী ধরনের শক্তি তা এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে বেশ কয়েকটা থিওরি দাঁড়া করানো হয়েছে। একটি থিওরি অনুযায়ী, ডার্ক এনার্জি হল শুন্য বা ফাঁকা স্থানের একটি বৈশিষ্ট্য যা দুটি বস্তুকে ঠেলে দিয়ে তাদের মধ্যে আরও ফাঁকা জায়গা তৈরী করে। ঠিক মহাকর্ষ বলের বিপরীতটা।

আমাদের মহাবিশ্বের প্রায় ৬৮ শতাংশই গঠিত এই কালো যাদু (!) দিয়ে

মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের ফলে যত বেশি শুন্যস্থান বাড়ছে, তত বেশি বাড়ছে ডার্ক এনার্জি, এবং তত বেশি শক্তি দিয়ে দূরে দূরে ঠেলে দিচ্ছে গ্যালাক্সিগুলোকে। ফলে বাড়ছে সম্প্রসারণের গতি।

আরেকটি ধারণা মতে, মহাকাশে একধরনের কণা শুন্য থেকে ক্রমাগত বুদবুদের মত সৃষ্টি হয় আবার বুদবুদের মত মিলিয়ে যায়। এই রহস্যজনক কণাটি থেকে সৃষ্টি হয় ডার্ক এনার্জি। যদিও, এসকল ধারণা কেবলমাত্র ধারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। রহস্য উদ্ধারে বিজ্ঞানীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ডার্ক এনার্জি এবং কসমিক হরাইজন

ডার্ক এনার্জির এই ঠেলাঠেলিজনিত কর্মকাণ্ডের ফলে কিন্তু একটা ব্যাপার ঘটতে চলেছে। মহাবিশ্ব ক্রমাগত সম্প্রসারিত হতে হতে দূরবর্তী  গ্রহ-নক্ষত্রগুলো একসময় এতটাই দূরে সরে যাবে যে, সেগুলো থেকে প্রতিফলিত আলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপেও ধরা যাবে না। ফলে ছোট হয়ে পড়বে “কসমিক হরাইজন’।

কসমিক হরাইজন হচ্ছে মহাবিশ্বের ততটুকু জায়গা যতটুকু থেকে আমরা কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। দূরত্ব যতই হোক কাছে থাকুন- ব্যাপারটি ডার্ক এনার্জি এত সহজে হতে দিচ্ছে না !

3 2

আমাদের মহাবিশ্বের প্রায় ৬৮ শতাংশই গঠিত এই কালো যাদু (!) দিয়ে। আচ্ছা, যদি ডার্ক ম্যাটার হয় মহাবিশ্বের ২৭ ভাগ, ডার্ক এনার্জি হয় ৬৮ ভাগ, তাহলে সাধারন পদার্থের ভাগে কতটুকু পড়ল? ৫ ভাগ! আমরা, আমাদের পৃথিবী, সৌরজগত, সকল গ্যালাক্সি – সবকিছু মিলে মহাবিশ্বের মাত্র ৫ ভাগ গঠন করি! বাকি ৯৫ ভাগই আমাদের সম্পূর্ণ অজানা!

তবে সুখের ব্যাপার হচ্ছে, মানবসভ্যতার ইতিহাসে অজ্ঞানতা কখনই হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে নি, বরং অজানাকে জানার অসীম আগ্রহই মানুষকে এতদূর নিয়ে এসেছে। মানুষ তার মেধা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে ডার্ক ম্যাটার আর ডার্ক এনার্জির মত ডার্ক বিষয়গুলো শীঘ্রই একদিন আলোতে নিয়ে আসবে, এই আশা করা যায় তো!

সূত্র ঃ১০ মিনিট ইস্কুল 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 338 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 291 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
1 উত্তর 306 বার দেখা হয়েছে
28 ডিসেম্বর 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
+4 টি ভোট
1 উত্তর 524 বার দেখা হয়েছে
24 ফেব্রুয়ারি 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
1 উত্তর 265 বার দেখা হয়েছে
23 ফেব্রুয়ারি 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)

10,826 টি প্রশ্ন

18,535 টি উত্তর

4,745 টি মন্তব্য

841,186 জন সদস্য

27 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 26 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. mehrob.durjoy

    140 পয়েন্ট

  2. Curious

    140 পয়েন্ট

  3. Shihabuddin

    130 পয়েন্ট

  4. Muntasir Imteaz

    110 পয়েন্ট

  5. Shoumik

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...