উত্তরটা তাত্ত্বিকভাবে না, সম্ভব না। কারণ চোরাবালিতে মানুষ ডুবে না, ভেসে থাকে।
যেখানে চোরাবালির ঘনত্ব ২ গ্রাম/ মিলিলিটার, সেখানে মানুষের শরীরের ঘনত্ব ১গ্রাম/মিলিলিটার। এই ঘনত্বে সম্পূর্ণ ডুবে যাওয়া অসম্ভব, বড়জোর কোমর পর্যন্ত ডুবে যাবে৷ এমনকি, চোরাবালির থেকে বেশি ঘনত্বের জিনিসও ডুববে না, বরং ভেসে থাকবে। উদাহরণস্বরূপ- অ্যালুমিনিয়ামের ঘনত্ব 2.7g/mL. তাহলে কথা আসে চোরাবালিতে মৃত্যু হয় কিভাবে?!
সায়েন্স জার্নাল Nature এ ব্যাপারে বিস্তারিত লেখা হয়। রিসার্চ এর সময় ল্যাবে গবেষকগণ একটি অ্যালুমিনিয়াম এর মাধ্যমে পরীক্ষা সম্পাদন করেছিলেন। অ্যালুমিনিয়ামের একটি ছোট বল চোরাবালিতে স্থাপন করলে তা উপরেই ভেসে থাকতো, যখন তাঁরা কন্টেইনার (যে পাত্রে পরীক্ষা করা হচ্ছিলো) কে একটু জোরে ঝাঁকুনি দিতে শুরু করলো, তখন বলটি আস্তে আস্তে ডুবে যেতে শুরু করলো।
চাপের কারণে বা নড়াচড়ার কারণে চোরাবালি খুব দ্রুত তরল পদার্থের মতো হয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের নড়াচড়ার ফলে যদি তরলের মতো হয়েই যায়, তাহলে আমরা সাঁতরে কেন বাঁচতে পারি না? কারণ আপাতভাবে তরলের মতো হলেও এর ভিতরের অংশটুকু আঠালো বা ঘন থেকেই যায় এবং ধীরে ধীরে আঠালোভাব বৃদ্ধি হয়। চোরাবালিতে বালি থাকার কারণে এমন বৃদ্ধি হয়। বালির কারণে মুভ করাটাও তখন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে কি করা উচিত?! দেহকে যথাসম্ভব আনুভূমিক ভাবে নিয়ে আসতে হবে, তারপর পা দিয়ে সাঁতরে আসার চেষ্টা করতে হবে।
চোরাবালিতে পড়লে মানুষ ধীরে ধীরে ডুবে যেতে শুরু করে, কিন্তু অতিরিক্ত নড়াচড়ার কারণে তারাতাড়ি নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করে। চোরাবালিতে মানুষ ডুবে মারা যায় না যেমনটা সিনেমায় দেখানো হয়, বিপদ তখন হয় যখন আমরা অতিরিক্ত নড়াচড়া করি বা দেহ আনুভূমিকে নিয়ে আসতে যদি সক্ষম না হই, আর সমুদ্রপাড়ে, যেখানে সাধারণত চোরাবালি থাকে, সেখানে জোয়ার আসলে পানিতে ডুবে মারা যেতে পারেন।
মেলোডি - টিম সায়েন্স বী
তথ্যসূত্রঃ
https://www.nationalgeographic.com/science/article/quicksand-science-why-it-traps-how-to-escape