ব্রণ বা অ্যাকনে ভালগারিস সাধারণ কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের রোগ। বয়স, লিঙ্গ, আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাস, লাইফস্টাইল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি ব্রণ হওয়ার কারণ। সাধারণত বয়ঃসন্ধিতে (১৩ থেকে ১৯ বছর) অথবা অন্য কোনো কারণে যখন শরীরে এন্ড্রোজেন হরমোনের অতিবৃদ্ধি ঘটে, তখন ত্বকের সেবাসিয়াম গ্লান্ড সেবাম তৈরি বাড়িয়ে দেয়। এই সেবামের একটি উপাদান হচ্ছে লিপিড ((Lipid), যা সব সময়ের বাসিন্দা Propiono Bacterium অত্যন্ত প্রিয় খাবার। ফলে এই জীবাণু বংশবৃদ্ধি করে বহুগুণে। পাশাপাশি ত্বকে প্রদাহের (Inflammation) সৃষ্টি করে। ফলে মুখের ত্বকের রন্ধ্র কেরাটিন প্রোটিন দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় এবং মুখে ব্রণের সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে পুঁজ, গর্ত, দাগের সৃষ্টি হয়।
কারণ
নানা কারণে ব্রণ হতে পারে। যেমন :
ত্বকের অযতœ অবহেলা।
হরমোনের পরিবর্তন।
অতিরিক্ত জাংক ফুড গ্রহণ।
রাত জাগা, চা-কফি বেশি খাওয়া।
ঘুম কম হওয়া।
ব্রণ আক্রান্তদের তোয়ালে। বালিশ ও চিরুনি ব্যবহার করা।
টেনশন বা দুশ্চিন্তামগ্ন হওয়া।
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া।
রোদে বেশি বের হওয়া ইত্যাদি নানা কারণেই ব্রণ হতে পারে।
করণীয়
ব্রণ হোক বা না হোক ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি এবং নিজের জন্য আলাদা তোয়ালে, চিরুনি ব্যবহার করুন। দিনে দু-তিনবার কম ক্ষারযুক্ত সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখুন। দিনে কয়েকবার মুখে পানির ঝাপটা দিন। ব্রণে হাত বা নখ লাগানো যাবে না। ব্রণযুক্ত ত্বকে ওয়াটার বেইসড মেকআপ ব্যবহার করতে হবে। মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। দুশ্চিন্তামুক্ত ও মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে। মৌসুমি ফল, শাকসবজি এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলে তা দূর করতে হবে। পেঁপে, ইসবগুলের শরবত খেতে পারেন।
যা করা যাবে না
তেলযুক্ত ক্রিম বা ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ত্বকে সরাসরি যাতে রোদ না লাগে। শুষ্ক আবহাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। ব্রণে হাত, নখ লাগাবেন না বা খুঁটবেন না। ব্রণযুক্ত ত্বক মোছার সময় সরাসরি আলতোভাবে চেপে মুখ মুছবেন। অতিরিক্ত ব্রণ থাকলে নারকেল বা সরিষার তৈল লাগাবেন না।
চিকিৎসা
ব্রণ অতিরিক্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করা উচিত। না হলে অনেক সময় ত্বকে গর্ত সৃষ্টি বা দাগ হতে পারে। এ ছাড়া হাইপার প্রিগমেন্টেশন সৃষ্টি হতে পারে। মেডিসিন, হরমোন কন্ট্রোল, কেমিক্যাল পিলিং ইত্যাদিই হলো ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা ও সমাধানের পথ। তাই দেরি না করে একজন চর্ম ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞ সার্জনের সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসা নিন।