সূর্য একটি বিশাল পরিমাণে আলো এবং তাপ শক্তি আমাদের পৃথিবীতে বিকিরণ করে, মাত্র দুই ঘন্টায় পৃথিবীর উপরিভাগে যে পরিমাণ সৌরশক্তি আসে তা পুরো বছর ধরে আমাদের সমস্ত শক্তির প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
সূর্যের কাছ থেকে এই শক্তি গ্রহন এবং ব্যবহারের দুটি মূল উপায় রয়েছে। একটা হলো সৌর প্যানেল (ফটোভোল্টিক্স), যা আলোকে বিদ্যুতে রূপান্তর করে। আর অন্যটা হলো সৌর তাপবিদ্যুৎ, যা সূর্যের শক্তিকে তাপে রূপান্তরিত করে।
একটি সৌর প্যানেলের মধ্যে আপনি সুসজ্জিতভাবে সাজানো সৌরকোষ দেখতে পাবেন, যেগুলো পাতলা দুই টুকরা বিপরীতচার্জ বিশিষ্ট ধাতু (সাধারণত সিলিকন) দিয়ে তৈরি। যখন সূর্যের আলো কোষগুলোর উপর বিকিরিত হয় তখন আলোর ফোটোনগুলি সিলিকন পরমাণুর ইলেক্ট্রনকে আঘাত করে, যা ফটোইলেক্ট্রিক ইফেক্ট হিসেবে পরিচিত। আর ইলেক্ট্রন প্রবাহের ফলে প্রতিটি সৌরকোষে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
সূর্যের শক্তি সংগ্রহের আরেকটি উপায় হলো আলোকে তাপে রূপান্তর করা। এই ক্ষেত্রে সৌর-তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি পানি বা অন্যান্য তরল গরম করার উদ্দেশ্যে আয়না এবং লেন্সের সাহায্যে তরলের উপর সূর্যালোকের প্রতিফলন ঘটায় এবং আলোক রশ্মি কেন্দ্রীভূত করে। আর এর ফলে যে তাপ পাওয়া যায় সেটা বাড়ি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে গরম পানি সরবরাহের জন্য অথবা বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে টারবাইন ঘোরাতে ব্যবহৃত হয়।
তবে এটি কেবল দিনের বেলা তৈরি করা যায়। এর অর্থ হলো দিনরাত অবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুত সরবরাহ করার জন্য এটিসহ অন্যান্য শক্তির উৎস ব্যবহার করা প্রয়োজন।
যাইহোক, নবায়নযোগ্য শক্তির একটি পরিষ্কার, বহুমুখী এবং ক্রমবর্ধমান উৎস হিসেবে সৌরশক্তির বিকল্প নেই। সৌর প্যানেলগুলি বর্তমানে বিশ্বের মোট বিদ্যুতের মাত্র ২.৭ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে, তবে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের মোট ক্ষমতা আগামী দশকে বর্তমানের তুলনায় তিনগুণের চেয়ে বেশি প্রত্যাশিত।
©মোহাম্মাদ হাসান রিজভী প্রান্ত