ছাপার অক্ষরে ‘ব্ল্যাক হোল’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। সে বছর অ্যান উইন নামের এক সাংবাদিক ১৯৬৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অনুষ্ঠিত এক সিম্পোজিয়াম নিয়ে একটি রিপোর্ট লিখতে গিয়ে শব্দটি ব্যবহার করেন। তবে শব্দটি প্রথম কে ব্যবহার করেছিল, সে বিষয়ে ওই রিপোর্টে তার কোনো উল্লেখ নেই। মহাকর্ষীয় প্রবল আকর্ষণে নিজের ওপর পুরোপুরি চুপসে যাওয়া কোনো নক্ষত্র বোঝাতে সংক্ষিপ্ত শব্দ হিসেবে মার্কিন পদার্থবিদ জন হুইলার ব্ল্যাক হোল শব্দটি ব্যবহার করেন। সেটি ১৯৬৭ সালের কথা। এরপরই শব্দটি অন্যান্য বিজ্ঞানীর কাছেও জনপ্রিয় হতে শুরু করে। তবে চুপসে যাওয়া এ ধরনের নক্ষত্রের ধারণাটি প্রথম দিয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহেইমার এবং হার্টল্যান্ড সাইন্ডার, ১৯৩৯ সালে। এই শব্দের বাংলা করা হয়েছে কৃষ্ণগহ্বর বা কৃষ্ণবিবর। তবে ইংরেজি ব্ল্যাক হোল শব্দটির উত্পত্তির সঙ্গে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদদৌলার সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক পথিক গুহ। কথিত আছে, ১৭৫৬ সালে কলকাতা ছিল ইংরেজদের প্রধান ঘাঁটি। ইংরেজদের সঙ্গে এক ঝামেলার কারণে সে বছরের জুনে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করে নিয়েছিলেন নবাব সিরাজউদদৌলা। তারপর তাঁর সেনার হাতে বন্দী হন ১৪৬ জন। তাদের ৬৪ জনকে একটি কুঠুরিতে আটকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে সে রাতে সেই নরকে ৪৩ জন মারা গিয়েছিল। ইতিহাসে এ ঘটনাটি অন্ধকূপ হত্যা বা ব্ল্যাক হোল অব ক্যালকাটা নামে পরিচিত। অন্যদিকে কৃষ্ণগহ্বরকে মহাকাশের নরক হিসেবে কল্পনা করে ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে ব্ল্যাক হোল শব্দটি বিভিন্ন বক্তৃতায় ব্যবহার করতেন মার্কিন বিজ্ঞানী রবার্ট হেনরি ডিকি। তবে শব্দটি জনপ্রিয় করার পেছনে জন হুইলারের অবদানের কথা স্বীকার করতেই হবে।