আমাদের শরীরের অধিকাংশই পানিতে পূর্ণ বলা যায়। কিন্তু এই পানি বিশুদ্ধ নয়। আমাদের শরীরের কোষগুলিতে থাকা পানিতে এক শতাংশের কম সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে (০.৯%) যা সমুদ্রের পানির মতো লবণাক্ত নয়(যার গড় লবণাক্ততা ৩.৫ শতাংশ) তবে এটি পুলের পানির চেয়ে লবণাক্ত।
মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে মবিন ভাইয়ের প্রিয় বিষয় রসায়নের একটা টপিক নিয়ে একটু কথা বলি কারণ বিষয়টা এখানে লাগবে। তাহল অভিস্রবণের নীতি- যেখানে অণুগুলি একটি অর্ধভেদ্য ঝিল্লির মধ্য দিয়ে একটি কম ঘনীভূত দ্রবণ থেকে বেশি ঘনীভূত দ্রবণে চলে যায় যাতে প্রতিটি দিকের ঘনত্বের ভারসাম্য বজায় থাকে। আপনার নাকের কোষগুলিও এমন একটি অর্ধভেদ্য ঝিল্লি দ্বারা সুরক্ষিত। যখন আপনার নাকে পানি প্রবেশ করে এবং যদি সেই পানিতে আপনার শরীরের কোষে থাকা লবণের পরিমাণের চেয়ে কম লবণ থাকে তাহলে সেই ঘনত্বের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য আপনার নাকের কোষ আর প্রবেশকৃত পানির মধ্যে প্রক্রিয়াটা চলবে। ফলাফল আপনি অস্বস্তিকর অনুভব করবেন, এবং এটা প্রায়ই মাথায় ব্যাথার অনুভূতিও সৃষ্টি করে।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, শুধু পানি প্রবেশ করলে কেন ব্যাথা লাগে? নাকের স্প্রে/ ড্রপ কেন কোন সমস্যা করে না? কারণ একটি নির্দিষ্ট লবণের ঘনত্বের সাথে এটি তৈরি করা হয়। কখনও কখনও এটি আপনার শরীরের কোষে ঘনত্বের সমান , অনেক সময় এটি লবণাক্তও হতে পারে। যদিও আপনি ভাবতে পারেন যে খুব লবণাক্ত হলেও তো আপনার সিস্টেমের জন্য পরিষ্কার পানির মতোই ক্ষতিকারক হবে, তবে এটি সর্বদা এমন হয় না। এখানেও অভিস্রবণের নীতিটা কাজ করে। অতিরিক্ত নোনতা পানি আপনার নাকের কোষ থেকে পানি অপসারণ করে। পাশাপাশি উষ্ণ, নোনতা জল অতিরিক্ত শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এই কাজের জন্যই আমরা সর্দি হলে নাকের ড্রপ ব্যবহার করি।
সবশেষে এখন তাইলে আমরা বলতে পারি, আমাদের নাকে পানি দেওয়া সবসময় খারাপ নয়: যদি না পানিটা যথেষ্ট লবণাক্ত হয় না,মানে লবণের পরিমাণ যেন আমাদের শরীরের সাথে মিলে আর কি! তাই নাকের ড্রপের কাজ সাধারণ পানি দিয়ে করার চেষ্টা করা যাবে না।
https://www.discovery.com/science/water-up-nose#:~:text=Water%20rushes%20through%20the%20cell,of%20pool%20or%20lake%20water.