কেন মানুষ বেশিরভাগ সময় নিজের সাথে কথা বলে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
2,460 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (15,280 পয়েন্ট)

3 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (54,300 পয়েন্ট)
সেলফি শব্দের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। নিজেই নিজের ছবি তুলাকে বলে সেলফি। অনেকটা শখের বশে কেউ কেউ সেলফি তুলেন। কিন্তু সেলফ টক বা একা একা কথা বলার সঙ্গে হয়তো আমরা অনেকেই তেমন পরিচিত নই।

 একা একা কথা বলা বা নিজে নিজে কথা বলা মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়া বা মুড ডিসওর্ডারের লক্ষণ। ওই রোগীরা অনবরত একা একা কথা বলতে থাকেন। তাদের কথাগুলোর মধ্যে তেমন একটা সামঞ্জস্যতা নেই।

এরকম একা একা কথা বলা টুকটাক আমরা বলি। রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে আমরা একা একা কথা বলে ফেলি। শিশুরাও খেলতে গিয়ে খেলনার সঙ্গে বা পুতুলের সঙ্গে একা একা কথা বলে। তবে ওই কথাগুলোর মধ্যে পারিপার্শ্বিক সামঞ্জস্যতা আছে। এটা মানসিক রোগের লক্ষণ নয়।

ঘোরতর মানসিক রোগীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনবরত কথা বলতে দেখা যায়। বাংলাদেশে এ রোগীদের তাচ্ছিল্য করে পাগল ডাকা হয়। মূলত এ সম্পর্কে আমরা জানি না বলেই এমন ডাকি। কেন মানসিক রোগীরা একা একা কথা বলতে থাকে?

মানসিক রোগীদের মধ্যে হয় এমন হয় কারণ তাদের অডিটরি হ্যালুসিনেশন। অডিটরি হ্যালুসিনেশন মানে হলো অবাস্তব কিছু শুনতে পাওয়া। অর্থাৎ অস্তিত্ব নেই এমন কিছুর আওয়াজ শোনা। ব্যাপারটা স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রেও হতে পারে!

এই যেমন ধরুণ, আপনি গভীর চিন্তায় মগ্ন। হঠাৎ শুনলেন কে জানি ডাকলো; কিংবা কিসের আওয়াজ কানে আসলো। আপনি তাকিয়ে দেখলেন কেউ নেই। অনেকটা শ্রুতিভ্রম মনে হয় আপনার কাছে।

গভীর রাতে এরকম হয়। অঘুমা রোগ, দুশ্চিন্তা, এনজাইটি এসবে টুকটাক এরকম হতেই পারে। কেউ কেউ এসবে অনেক সময় ভূত ভূত বলে দৌঁড় দিয়ে হাত পা ভাঙে। দিনে তারা গল্প করে বেড়ান, কাল রাতে আপনাকে ভূত তাড়া দিয়েছে। আসলে এটা হ্যালুসিনেশন।

কিন্তু মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে এই হ্যালুসিনেশন অনবরত হতে থাকে। তারা অনবরত শুনতে থাকেন, তাদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে, কিংবা তাদের নিয়ে কেউ কথা বলছে। তাই তারা এসব কথার উত্তর ও দিতে থাকেন। অগোছালো অসামঞ্জস্যপূর্ণ কিংবা সামঞ্জস্যতাপূর্ণ। যারা মদপান করেন বা যারা মাদকসেবীদের তাদেরও অনেক সময় হ্যালুসিনেশন হয়।

মানসিক রোগগুলো সত্যিই অদ্ভূত। হাত পা, চোখ নাক কান সবই ঠিক আছে কিন্তু কোথায় যেনো একটু গরমিল। যার জন্যে সবকিছুতে গরমিল।

ভয়ংকর হ্যালুসিনেশন

হ্যালুসিনেশন অনেক ধরনের হয়ে থাকে। অবাস্তব কিছু দেখাও হ্যালুসিনেশন। একে ভিজুয়াল হ্যালুসিনেশন বলে। এই যেমন আপনি দেখলেন আপনার মৃত মা-বাবা বা কোন আত্মীয়-স্বজন আপনার সামনে হঠাৎ দাঁড়িয়ে আছেন। কিংবা আপনি দেখলেন, আপনি প্যারিসের রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বাদাম বিক্রি করছেন। এটা এক্সট্রা ক্যাম্পেইন হ্যালুসিনেশন।  

রিফ্লেক্স হ্যালুসিনেশন বলে ইন্টারেস্টিং একটা হ্যালুসিনেশন আছে, এটা হলো আপনার চোখের সামনে নীল রঙ আলো বা পর্দা, কিছু ভাসলো ওমনি আপনি একটা মিউজিক শুনতে পেলেন। নিজেই নিজের শরীরকে দেখতে পাওয়াকে বলে অটোস্কোপিক হ্যালুসিনেশন। এগুলো ভয়ংকর আকার ধারণ করে। ঘোরতর মানসিক রোগে এরকম হয়। তবে ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা, এনজাইটি, মানসিক চাপ, অঘুমা এসবেও হয়। ডিমেনসিয়া বা পারকিনসন রোগেও এমন হতে পারে।

যেমন অনেক সময় ডিমেনসিয়ার পেশেন্ট এসে বলেন, কাল রাতে আমি আমার বড় ছেলেকে ঘুরতে ফিরতে দেখলাম। অথচ তার বড় ছেলে হয়তো অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। ডিমেনশিয়া আক্রান্তরা সাধারণত ঘরের মুরুব্বী দাদা বা নানা প্রকৃতির হন। এদের এ আচরণ আর কথাবার্তায় অনেকে অনেক সময় ভুল করে তাদের পাগল হয়ে ভাবেন। কারণ তাদেরও অনেক সময় হ্যালুসিনেশন হয় এমনকি ডিলিউসন হয়।

রোগের নাম ডিলিউসন

ডিলিউসন হলো অলীক বিশ্বাস। এতে তারা অনেক সময় না বুঝে উলটোপালটা কথা বলেন, কাজকর্ম করে বসেন। পারসিকিউটরি ডিলিউসনের জন্যে ডিমেনসিয়া আক্রান্ত বয়স্করা অনেক সময় বিশ্বাস করেন এবং বলেন, তার সকল সম্পত্তি তারই ছেলেমেয়েরা আত্মসাৎ করতে চাচ্ছে, তাকে তাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে।

বৃদ্ধ বয়সে ভীমরতি কেন?

একবার এক ডিমেনসিয়া পেশেন্টকে তার ছেলেরা অনেকটা বেঁধে জোর করে নিয়ে আসলো চেম্বারে। বললো, বাবা পাগল হয়ে গেছেন, ভীমরতিতে পেয়েছে। তিনি নাকি এক ছেলের বউকে জড়িয়ে ধরেছেন। আসলে বৃদ্ধ ওই ব্যক্তিটি ছিলেন ডিমেনসিয়ার পেশেন্ট। ঘটনার কিছুই তিনি মনে করতে পারলেন না। একে বলে লস অব ইনহিবিশন। সাধারণত ফ্রন্টো-টেমপোরাল টাইপের ডিমেনসিয়াতে ব্রেইনের ফ্রন্টাল লোব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে এমন হয়।

মানসিক রোগের চিকিৎসা যেভাবে করা হয়

মানসিক রোগ বা সিজোফ্রেনিয়াতে অনবরত হ্যালুসিনেশন হয় ব্রেইনের ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার মাত্রাতিরিক্ত হওয়াতে। এজন্যে ডোপামিন রিসেপ্টর ব্লকার ঔষধ দেওয়া হয়। এতে অবিশ্বাস্য রকমভাবে হ্যালুসিনেশন বন্ধ হয়ে যায়। রোগীদের একা একা কথা বলা কমে আসে। এক সময় সে সাধারণ মানুষের মতই সুস্থ হয়ে উঠে।

বিষয়টি একজন সাইকিয়াট্রিস্টের চেম্বারে কিংবা একটি মানসিক রোগ হাসপাতালে গেলে অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করা যাবে। যে রোগীটি এক মাস আগে অসংলগ্ন কথাবার্তা আর আচরণ নিয়ে আসছিলো, যাকে অনেকটা ধরে বেঁধে মেরে চেম্বারে আনা হয়েছিল, এক মাস পর সে কী সুন্দর সুস্থ! দিব্যি সবার সঙ্গে চলাফেরা করছে, গালগল্প করছে, কাজকর্ম করছে।

লেখক: ডা সাঈদ এনাম

এমবিবিএস (ডিএমসি, কে ৫২), এমফিল (সাইকিয়াট্রি)

সাইকিয়াট্রিস্ট, ইউএইচএফপিও, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট।
0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
অনেকেই ঘুমের মধ্যে হাঁটে এবং কথা বলে। এইরকম কেন হয়?
মানুষ ঘুমের মধ্যে কথা বলে,স্পষ্ট-অস্পষ্ট শব্দ করে,কান্না করে, এমনকি হাটা-চলা করতেও পারে। এসবের কারণ খুজেছেন বিজ্ঞানীরা, সেগুলো কী দেখা নেওয়া যাকঃ

আমাদের ঘুমের মধ্যে ২টা পর্যায় আছে। সেগুলো হল-

১) REM (Rapid Eye Movement) বা কম্পাক্ষি নিদ্রা

২) Non REM (Non Rapid Eye Movement)বা স্থিরাক্ষি নিদ্রা।

৩) Slow Wave বা ধীর সম্পন্ন চক্র ঘুম

আমাদের ঘুমের এই দুই নম্বর পর্যায়ে আমাদের মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় থাকে, তবে শরীর নড়াচড়া করতে পারে। এই সময় হরমোন নি:সৃত হয় এবং দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর আবার সতেজ হয়ে ওঠে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে REM ও NREM ঘুম পর্যায়ের মাঝে ৯০ মিনিট বিরতি থাকতে পারে। তাই ঘুমের দুই নম্বর পর্যায়ে নড়াচড়া বেশী করতে পারে।

সাধারনত ঘুমের তিন নম্বর পর্যায় Slow Wave এ মানুষের কথা বলা বা হাটা চলা করতে দেখা যায়। এই ধরনের পরিবেশকে ইংরেজিতে বলে সমনামবিউলিজম (somnambulism or noctambulism), বাংলায় বলে স্বপ্নচারিতা। স্বপ্নচারীদের মন ঘুমিয়ে থাকলেও দেহ অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকে, তার সমস্ত আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রিত হয় স্বপ্ন দ্বারাই। বেশি মাত্রায় না হলেও অল্পমাত্রায় স্বপ্নচারী আমরা অনেকেই।

মেডিকেল সাইন্স অবশ্য এর কিছু কারণও খুজে বের করেছে।

সারাদিন অধিক পরিশ্রমের কাজ করে ক্লান্ত দেহে বিছানায় ঘুমাতে গেলে

ভয়, মানসিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা থাকলে

অনিয়মিত ঘুম ও অপর্যাপ্ত ঘুম হলে

ঘুমের মাঝে বিশেষ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা পেলে

ঔষুধ সেবনের ফলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে

এছাড়া বংশগত কারণেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

প্রচণ্ড জ্বরের মধ্যেও এটা হতে পারে

অতিরিক্ত মাদক বা মদ সেবনের কারণে হতে পারে

দুঃস্বপ্ন দেখার মাধ্যমেও এটা হতে পারে

যাদের হজমে গন্ডগোল রয়েছে, (রাতে শোবার পর পাকস্থলির খাদ্য গলার কাছে এসে যায়)
0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
সরাসরি এটাকে মানসিক সমস্যা বলা যাবে না। কারণ অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে, অভ্যাসগত কারণে, পরিবারের কারও মধ্যে এই থাকলে এবং ব্যক্তির যদি অডিটরি অথবা ভিজুয়াল হ্যালুসিনেশন হয় সে ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজের সাথে নিজেই কথা বলতে পারেন। আবার কেউ কেউ নিজের সাথে নিজে কথা বলতে অভ্যস্ত হতে পারেন ,নিজের সাথে নিজেই কথা বলে কোন কিছু পড়তে পছন্দ করেন, তাদের ক্ষেত্রে এটা রোগ নয়। তবে কয়েকটি মানসিক রোগ থেকেও এমন লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন, স্কিজোফ্রেনিয়া। কোনটি মানসিক রোগ হিসেবে গণ্য হবে তা বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন।

 

যেহেতু ৩০০ টির মত মানসিক অসুস্থতা রয়েছে সেখানে এসব অসুস্থতা আরও কয়েকশ লক্ষণ রয়েছে। সেগুলোকে একটি উত্তরে লিখা অনেকটাই কষ্টকর আর তা সাধারণ মানুষের জন্য পার্থক্য করা অনেকটা কঠিন। সাইকোলজিস্টরা মোটাদাগে এই লক্ষণগুলোকে ৬ টি ক্ষেত্রে ভাগ করে সাধারণ অসুবিধার কথা আলোচনা করেন।

 

ফলে মানসিক রোগ সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায়। যে কোন মানসিক অসুস্থতায় একজন ব্যক্তির ৬ টি ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+13 টি ভোট
1 উত্তর 2,190 বার দেখা হয়েছে
+5 টি ভোট
3 টি উত্তর 2,710 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 444 বার দেখা হয়েছে
+14 টি ভোট
2 টি উত্তর 441 বার দেখা হয়েছে
27 এপ্রিল 2020 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা (11,730 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,653 জন সদস্য

154 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 152 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. ae88812cdrcorg

    100 পয়েন্ট

  5. ThaoMota616

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...