Nishat Tasnim
ভেনাসট্রোফোবিয়া (Venustraphobia/Caligynephobia) এর জন্য এমন হয়।
সু্ন্দর মেয়েদের মুখোমুখি হবার ভয়কে ভেনাসট্রোফোবিয়া বলে। সুন্দরী মেয়েদের সামনে গেলে যদি কারো হাত-পায়ের তালু অস্বাভাবিক ঘামতে থাকে, গলা শুকিয়ে যায়, বুক ধড়ফড় করতে থাকে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাদের সামনে থেকে পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে তাকে ভেনাসট্রোফোবিক বলা যেতে পারে। অনেক পুরুষরাই অযৌক্তিক আর বাড়াবাড়ি রকমের এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। কাছের মানুষদের সাপোর্ট এবং সময়মতো থেরাপি নিলে এ রোগ থেকে মুক্তি মেলা সম্ভব।
ভিনাস্ট্রাফোবিয়ার উৎপত্তি ও সংজ্ঞা
ভিনাস্ট্রাফোবিয়া মানে হলো সুন্দরী মেয়েদের ভয় পাওয়া। এই ফোবিয়ার নামকরণ করা হয়েছে রোমান দেবী ভেনাস থেকে। ভেনাসকে প্রেমের দেবী বলা হয়। এছাড়াও তাকে যৌনতা ও সৌন্দর্যের দেবী হিসেবেও দাবি করা হয়। ফোবিয়ার তিনটি প্রকারভেদ সম্পর্কে আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি। ভিনাস্ট্রাফোবিয়া এগুলোর মধ্যে স্পেসিফিক ফোবিয়ার কাতারে পড়ে। একে ক্যালিগাইনিফোবিয়াও বলা হয়ে থাকে।
কারো মাঝে একটি ফোবিয়া সৃষ্টি হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করে। পূর্বে ঘটে যাওয়া কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা এই অমূলক ভয়কে ট্রিগার করতে পারে। আবার এর পেছনে জেনেটিক বা বংশগত কারণও দায়ী। পূর্বপুরুষদের কারো কোনো মানসিক রোগ বা অন্য কোনো ফোবিয়া থাকলে তা থেকে এই রোগের উৎপত্তি ঘটতে পারে। তবে বেশিরভাগ স্পেসিফিক ফোবিয়ার কিছু নির্দিষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্রীভূত করে আবির্ভাব ঘটে।
একজন ব্যক্তির অতীত জীবনে সুন্দরী মেয়েদের সাথে কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা, যেমন– হৃদয়ভঙ্গ হওয়া, জনসম্মুখে কোনো আকর্ষণীয় মেয়ের দ্বারা অপমানিত হওয়া ইত্যাদি মনে স্থায়ী আঘাত হানতে পারে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এক্ষেত্রে অনেক প্রভাব ফেলতে পারে। একজন ব্যক্তি কেমন পরিবেশে বড় হয়েছে তার সাথে এই ফোবিয়ার যোগসূত্র তৈরি করা যায়।
আগে থেকে থাকা কোনো মানসিক রোগ, যেমন- অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার, জেনারালাইজড এংজাইটি ডিজঅর্ডার কিংবা অন্য কোনো এংজাইটি ডিজঅর্ডার থেকে এই ফোবিয়া আসতে পারে। এরকম কিছু মানসিক ডিজঅর্ডার ও অতীত খারাপ অভিজ্ঞতা একসাথে হানা দিলে এই অদ্ভুত ফোবিয়ার শিকার হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
ভিনাস্ট্রাফোবিয়ার চিকিৎসাঃ
সাধারণত ফোবিয়াগুলোর সরাসরি কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এগুলো মানসিক রোগের সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় কিছু মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নিকট থেকে বিভিন্ন থেরাপি নেওয়া যেতে পারে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টক থেরাপি ও এক্সপোজার থেরাপি। টক থেরাপির মধ্যে একটি হলো কগনিটিভ বিহেভিয়রাল থেরাপি (সিবিটি)। এই থেরাপির মাধ্যমে রোগী কোনো থেরাপিস্টের সাথে নিয়ম মেনে কথাবার্তা বলেন। নানা বিষয়ে খোলাখুলি কথাবার্তার মাধ্যমে তিনি নিজের ব্যবহার ও চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনতে চেষ্ঠা করেন।
এক্সপোজার থেরাপি বলতে সরাসরি নিজের ভয়ের মুখোমুখি হওয়াকে বোঝায়। সুন্দরী মেয়েরা সচরাচর যেসব জায়গায় যায় সেখানে গিয়ে স্বেচ্ছায় নিজের ভয়ের মোকাবিলা করতে হয়। এভাবে চেষ্টা করতে থাকলে আস্তে আস্তে এই ফোবিয়া কেটে যেতে পারে।