"বর্তমান পৃথিবীর মানচিত্রে পৃথিবীর সব দেশ নেই আর আয়তনগতভাবে সকল দেশের অনুপাত সমান নয়।"- এ মন্তব্য এক দিক দিয়ে বিবেচনা করলে সঠিক। মহাশূন্যে প্রেরিত স্যাটেলাইট থেকে পাঠানো ছবি অনুকরণ করে এখন বানানো হচ্ছে গোলাকার মানচিত্র, (globe) যেগুলো পুরোপুরি নিখুঁত৷ তবে পরিবহনের সুবিধার্থে দ্বিমাত্রিক মানচিত্রই সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয়। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের অনেক বছর আগে মধ্যযুগেই মানুষ পুরো পৃথিবীর প্রায় সবটাই চষে বেড়িয়েছিল, এবং যে গোলাকৃতির মানচিত্রসমূহ সে সময়ে প্রণিত হয়, ওগুলো প্রায় পুরোটাই সঠিক। তবে দ্বিমাত্রিক চিত্র আঁকাতেই বিপত্তি বাঁধল৷ গোল পৃথিবীকে সমতল ম্যাপে আঁকতে ১৬ শতাব্দীর বেলজিয়ান ভূগোলবিদ জেরার্ডাস মারকেটর (Gerardus Mercator) একটি জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তিনি যে ম্যাপ নকশা করেন, সেটি সমসাময়িক কালে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে৷ মারকেটরের মানচিত্রে একটি নির্দিষ্ট সরল রেখা এঁকে সে পথ অনুসরণ করলে ঠিক ঠিক গন্তব্যে পৌঁছানো যায়৷ এমনকি অ্যাপেল ম্যাপসও মারকেটরের মানচিত্র ব্যবহার করে। তবে এ ক্ষেত্রে যেমনটা বললেন, "দেশগুলোর আয়তনের অনুপাত সমান নয়।" যেমন, উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর দেশগুলো এতে তুলনামূলক বড় করে দেখানো হয়। মারকেটর প্রণিত মানচিত্রের সমস্যা সমাধান করার জন্য আরও অনেক চেষ্টা-চরিত্র করা হয়েছে, সকল প্রচেষ্টায় কিছু-না কিছু ভুল-ত্রুটি ছিলই। সুতরাং দ্বিমাত্রিক ম্যাপ বাদ দিয়ে গ্লোব অনুসরণ করাই উচিৎ।
"আর পৃথিবীর সব দেশ তো এতে নেই"- এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য, সব ম্যাপই কোনো না কোনো উদ্দেশ্য পূরণে অঙ্কিত। উদাহরণস্বরূপ, যেসব দেশ ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয় না, তাদের মানচিত্রে রাষ্ট্রগুলোর নাম খোঁজ বোকামি৷ এভাবে চিন্তা করলে পৃথিবীর সব ম্যাপই সঠিক।