চা ও কফির মধ্যে ভালো-মন্দের তর্ক চলছে অনেক দিন ধরেই। স্বাদের বিষয়ে তর্কে না গিয়ে দুটি উষ্ণ পানীয়র বিভিন্ন উপকারী দিকগুলোর তুলনামূলক প্রতিবেদন করেছে বিবিসি।
বিবিসির মতে, কোনো পানীয় বেছে নেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ‘ক্যাফেইন’ নামক উদ্দীপক। একে বলা চলে আমাদের দেহ যন্ত্রের জ্বালানি। এক কাপ কফিতে থাকে ৮০ থেকে ১১৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। একই পরিমাণ চায়ে ক্যাফেইন থাকে এর অর্ধেক, ৪০ মিলিগ্রাম। তবে ক্যাফেনই সবকিছু নয়।
পরিমিত চা বা কফি পানের ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুটি পানীয়ই এমন কিছু বস্তু আমাদের শরীরে প্রবেশ করায় যা সকালেই আমাদের ইন্দ্রিয়কে জাগ্রত করে। গবেষণামতে, একই সমান শক্তি দেয় এই পরিমাণ চা বা কফি পানে মস্তিষ্কের ওপর বেশি কার্যকর হয় চা। পরিচিত পানীয়র স্বাদ ও গন্ধও মানুষের উদ্দীপনায় ভালো প্রভাব ফেলে।
চা ও কফির মধ্যে বড় পার্থক্যটি দেখা যায় ঘুমানোর সময়। একদিনে সমপরিমাণ চা বা কফি গ্রহণকারী ব্যক্তিদের ওপর করা যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে সজাগ রাখতে দুটি পানীয়ই প্রায় সমান কাজ করলেও রাতে ঘুমানোর যন্ত্রণায় বেশি ভোগেন কফি পানকারী ব্যক্তিরা। এ জন্য কফিতে থাকা তুলনামূলক বেশি ক্যাফেইনকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা।
চা, কফি উভয়ই মানুষের দাঁতের ক্ষতি করে। তবে ডেনটিস্টদের মতে, চায়ের প্রাকৃতিক উপাদান দাঁতের অ্যানামেলের ক্ষতি করে সীমিত। তবে কফি পানে ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি না হলেও ক্লোরেহেক্সাডাইন সমৃদ্ধ মাউথওয়াশ ব্যবহারে এই ক্ষতি গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।
অনেক গবেষকের দাবি, চা মানুষের স্নায়ুকে ঠান্ডা রাখে। মনে প্রশান্তি এনে দেয়। অন্যদিকে কফি মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। শরীরে কিছুটা বাড়তি প্রাণশক্তির উদয় হয়।
শরীরের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে চা বা কফি। দুটোই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে। হৃদরোগ থেকে রক্ষায় ভালো কাজ করে কফি। আবার ক্যানসার যেন সৃষ্টি না হয়, সে কাজ করে চা।
উল্লিখিত আলোচনা কোনো পানীয়রই ইতিবাচক গুণকে খাটো করে দেখা নয়। তবে অবশ্যই কফির চেয়ে চায়ের গুণ কিছুটা বেশি মানতে হবে।