থ্যালাসেমিয়া হলে এটি থেকে কী চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
234 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (1,540 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (12,550 পয়েন্ট)
জিনগত সমস্যার কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। জিনগত সমস্যার কারণে রক্তের হিমোগ্লোবিনের কোনো কোনো চেইন তৈরি হয় না। হিমোগ্লোবিনের আলফা বা বিটা চেইন যেকোনোটি তৈরিতে সমস্যা হতে পারে। সেখান থেকে এ রোগের সূত্রপাত। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিটা থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি, অর্থাৎ বেশির ভাগ রোগীরই হিমোগ্লোবিনের বিটা চেইন তৈরিতে সমস্যা হয়।

তবে হিমোগ্লোবিনের কোনো নির্দিষ্ট চেইন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় দুটি জিনের মধ্যে একটিতে যদি কারও সমস্যা হয়, তাহলে এই রোগে আক্রান্ত হবেন না, কিন্তু তিনি হবেন এই রোগের একজন বাহক। এই রোগের বাহকদের সাধারণত তেমন কোনো সমস্যা থাকে না। তবে একজন বাহক যদি পরবর্তীকালে অন্য একজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে তাঁদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ
জিনগত সমস্যার কারণে হয় বলে এ রোগ সাধারণত শৈশবেই দেখা দেয়। রক্তশূন্যতা, জন্ডিস, বারবার বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়া এবং শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে না হওয়া থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ। এসব রোগীর মুখের গড়নেও কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। সাধারণত যকৃৎ ও প্লীহা বড় হয়ে যায়। রক্তশূন্যতা খুব বেশি হলে হূৎপিণ্ড তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে এবং রোগীর শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য উপসর্গ হতে পারে।

নিতে হবে চিকিৎসা
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যদি কোনো রোগী থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন, তাহলে তাঁকে চিকিৎসা দিতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুরাই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়, তাই তাদের চিকিৎসা হওয়া উচিত একজন শিশু রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে। রোগীকে রক্ত দেওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই আয়রন চিলেশন চিকিৎসাও নিতে হবে। তা না হলে রক্তে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে আয়রনের বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে রোগী মারা যান।আয়রন চিলেশন চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল বলে বাংলাদেশের অধিকাংশ রোগীই তা দীর্ঘদিন পর্যন্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হয় না, তাঁরা শুধু মাসে মাসে রক্ত গ্রহণের মাধ্যমে তাঁদের চিকিৎসা সম্পন্ন করেন। ফলে এই রোগীদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।
এসব রোগীর আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ব্যাপারে থাকে বিধিনিষেধ। আর আয়রনসমৃদ্ধ ওষুধ খাওয়া যাবে না একদমই।

প্রতিরোধের উপায়
কোনো মা-বাবার একটি সন্তান যদি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই মা যখন তাঁদের পরবর্তী সন্তানকে গর্ভে ধারণ করবেন, তখন তিনি তাঁর গর্ভের শিশুটিও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন। এটি জেনে নেওয়া যায় গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসের মধ্যেই।
আর বিয়ের আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া উচিত, যেন দুজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে বিয়ে না হয়। কারণ, দুজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে বিয়ে হলে তাঁদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি।
সাধারণত থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে রোগের কোনো ধরনের লক্ষণ থাকে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাহক যখন গর্ভাবস্থায় থাকেন, তখন তাঁর রক্তশূন্যতা হলে তা আয়রন, ফলিক অ্যাসিড বা অন্য কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ভালো হয় না। এ ছাড়া বাহকের তেমন কোনো সমস্যাই হয় না।
থ্যালাসেমিয়া মূলত শিশুদের একটি রোগ। চিকিৎসক ছাড়াও সাধারণ মানুষের এ রোগ সম্পর্কে জানা উচিত। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতন হওয়া উচিত সবারই।
লেখক: চেয়ারম্যান, শিশু রক্তরোগ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
3 টি উত্তর 701 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
4 টি উত্তর 2,703 বার দেখা হয়েছে
+4 টি ভোট
1 উত্তর 336 বার দেখা হয়েছে
11 ফেব্রুয়ারি 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন নোশিন মাহি (7,940 পয়েন্ট)
+5 টি ভোট
4 টি উত্তর 1,596 বার দেখা হয়েছে
24 অক্টোবর 2021 "লাইফ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Anupom (15,280 পয়েন্ট)
+13 টি ভোট
2 টি উত্তর 713 বার দেখা হয়েছে

10,807 টি প্রশ্ন

18,512 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

513,557 জন সদস্য

77 জন অনলাইনে রয়েছে
22 জন সদস্য এবং 55 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

    1280 পয়েন্ট

  2. Dibbo_Nath

    370 পয়েন্ট

  3. Fatema Tasnim

    340 পয়েন্ট

  4. _Polas

    160 পয়েন্ট

  5. Arnab1804

    140 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা মস্তিষ্ক ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...