০ কেলভিন (0 Kelvin) বা -২৭৩° সেলসিয়াস তাপমাত্রা কে পরম শূন্য তাপমাত্রা বলা হয়। এই তাপমাত্রার কম হওয়া সম্ভব নয়।
পরম শূন্যের অসম্ভাব্যতা
এই মহাবিশ্বে তাপমাত্রার উচ্চতর প্রান্তের কোনও সীমা নেই।
অর্থাৎ একটি বস্তুর তাপমাত্রা যতটা সম্ভব বেশি হতে পারে।
যেমন, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হবার মুহূর্তে অর্থাৎ বিগ ব্যাং (Big
Bang) এর সময় এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের তাপমাত্রা ছিল কোটি
কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। কিন্তু আমরা তাপমাত্রার
নিম্নতর সীমার ক্ষেত্রে পরম শূন্যের নিচে যেতে পারি না। সত্যি
কথা বলতে, আমরা এই মহাবিশ্বের কোনও স্থানে আজ পর্যন্ত
পরম শূন্য তাপমাত্রা লক্ষ্য করিনি এবং আমার আজও পর্যন্ত
গবেষণাগারে পরম শূন্য তাপমাত্রায় পৌছুতে পারিনি। এর
দুটি কারণ আছে।
১। প্রথমত, কোনও বস্তুকে পরম শূন্যে নিয়ে যেতে হলে, ওই
বস্তু থেকে তাপ নির্গত করে তার পারিপার্শ্বিক ক্ষেত্রে
স্থানান্তরিত করতে হবে। এটি করার জন্য বস্তুর পারিপার্শ্বিক
তাপমাত্রা ওই বস্তুর তুলনায় কম হতে হবে। যেমন, সাধারণ
জলের তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তুলনায় অনেক
বেশি। এবার এই জলকে বরফে পরিণত করতে হলে, এর
তাপমাত্রাকে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নিয়ে যেতে হবে।
এর জন্য জলকে এমন পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে রাখতে
(যেমন উীপ ফ্রিজ) হবে যার তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের
কম। তাহলে জলের থেকে তাপ বেরিয়ে পারিপার্শ্বিক ক্ষেত্রে
স্থানান্তরিত হবে এবং জলের তাপমাত্রা কমে গিয়ে তা বরফে পরিণত হবে। সুতরাং কোনো বস্তুকে পরম শূন্য নিয়ে যেতে
হলে তার পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা পরম শূন্যের কম হতে হবে।
যা কার্যত অসম্ভব।
2। দ্বিতীয়ত কোয়ান্টাম মেকানিক্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের হাইজেনবার্গ অনিশ্চয়তার নীতি মতে, কোনো বস্তুর একেবারে সঠিক অবস্থান জানা সম্ভব না। কিন্তু পরম শূন্য যদি একটি অনুর অভ্যন্তরীণ গতি সম্পুর্নভাবে স্তব্ধ করে দেয়, তবে ওই অনুর অবস্থান একদম সঠিকভাবে জানা যাবে। এ-কারণে পরম শূন্য তাপমাত্রায় পৌছানো অসম্ভব। বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে পরম শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রায় পৌছাতে পারলেও পরম শূন্য তাপমাত্রায় পৌছাতে পারেন নি। এবং ভবিষ্যতেও পারবেন না।