লগারিদম হলো সূচকের বিপরীত প্রক্রিয়া। এর অর্থ কোনো সংখ্যার লগারিদম হলো সেই সূচক যেটাকে একটি নির্ধারিত মানের (ভিত্তি) ঘাত হিসাবে উন্নীত করলে প্রথমোক্ত সংখ্যাটি পাওয়া যায়।
লগ বা লগারিদমের সূচনা হয় বড় বড় হিসাবকে ছোট করে সহজে করার জন্য । এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে লগের ভিত্তি । এই ভিত্তির উপর ভিত্তি করে লগ ২ প্রকার- সাধারণ লগারিদম (Common Logarithm) ও স্বাভাবিক লগারিদম (Natural Logarithm) ।
সাধারণ লগারিদম এর ভিত্তি হিসেবে 10 ব্যবহৃত হয় ।শুধু 10 না যেকোন স্বাভাবিক সংখ্যাই ব্যবহৃত হয় তবে প্রশ্ন হল ভিত্তি হিসেবে 10 ই কেন ? সহজে হিসাব নিকাশ করার জন্যই তো লগের আবিষ্কার ,তাই যত সহজে হিসাব করা যায় তত ভাল । আর এক্ষেত্রে 10 হল সবচেয়ে সুবিধাজনক সংখ্যা । আমরা সবাই জানি যে কোন কিছুর হিসাব করার জন্য 10 এর গুণিতকের চেয়ে সহজ আর কিছু হয় না । সহজে হিসাবের এই সুবিধার জন্যই লগের ভিত্তি 10 ধরা হয় । শুধু তাই না,অনেক সময় লগের হিসাব করার সময় ভিত্তি লেখাই হয় না । তখন 10 কে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় । যেমনঃ log x ( 10 based log x)
এখানে আরেক ধরনের লগ আছে যার ভিত্তি লিওনার্দো অয়লারের ধ্রুবক e . e এর মান 2.303 । যখন e ভিত্তি হয় তখন তাকে স্বাভাবিক লগারিদম বলে । একে ln x ( e based log x) লেখা হয়।
গণনা সহজ করার জন্য সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে জন নেপিয়ার লগারিদম এর সূচনা করেন।[৭] স্লাইড রুল এবং লগ সারণি ব্যবহার করে সহজে গণনার জন্য নাবিক, বৈজ্ঞানিক, প্রকৌশলী এবং অন্যান্যরা খুব দ্রুতই এগুলো গ্রহণ করেন। বিরক্তিকর বহুসাংখ্যিক গুণনের ধাপসমূহ লগারিদমের নিয়মে একটি সরল যোগে পরিণত হয়। লগারিদমের নিয়মানুযায়ী সংখ্যাসমূহের গুণফলের লগারিদম এর মান সংখ্যাগুলোর একক লগারিদমের মানের যোগফল। অর্থাৎ
{\displaystyle \log _{b}(xy)=\log _{b}(x)+\log _{b}(y),\,}
এখানে b, x and y সকলে ধনাত্মক এবং b ≠ 1. বর্তমানের লগারিদমের ধারণা এসেছে লেওনার্ড অয়লার নিকট থেকে, যিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে লগারিদমকে সূচক অপেক্ষকের সূচক ফাংশন সাথে সম্পর্কযুক্ত করেন। যেকোন জটিল সংখ্যাকে A.eiø, A≥0, আকারে প্রকাশ করা যায়। এই ধারণা থেকেই ঋণাত্মক সংখ্যা ও জটিল সংখ্যার লগারিদম সংজ্ঞায়িত করা যায়। তাহলে z একটি জটিল সংখ্যা হলে যদি এর মডুলাস |z|, আর্গুমেন্ট ø হয় তবে ln(z)=ln|z| +iø, এখন একটি জটিল সংখ্যার অসংখ্য আর্গুমেন্ট থাকে। কাজেই বলা যায় কোন সংখ্যার লগারিদমের অসংখ্য মান থাকতে পারে। তবে তার মুখ্য মান কেবল একটি। যেমন, z যদি ধনাত্মক সংখ্যা হয়, তবে |z|=z, মুখ্য আর্গুমেন্ট ø=0, কাজেই এর স্বাভাবিক লগারিদমের মুখ্য মান ln(z)।
২০০০-১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বাবিলীয়রা দুটি সংখ্যা গুণের ফলাফলের জন্য শুধু যোগ ,বিয়োগ এবং চতুর্থাংশের চতুর্থাংশের একটি টেবিল ব্যবহার করে চতুর্থাংশ বর্গ গুণগত অ্যালগরিদম আবিষ্কার করতে পারে। সুতরাং, যেমন একটি টেবিল অনুরূপ উদ্দেশ্য লগারিদম টেবিলের পরিসেবা দেয়, যা সংযোজন এবং টেবিল সন্ধানগুলি ব্যবহার করে গণনাকে গণনা করার অনুমতি দেয়। যাইহোক, চতুর্থাংশ-বর্গক্ষেত্র পদ্ধতি পারস্পরিক পরিসরের অতিরিক্ত টেবিলের (অথবা পারস্পরিক উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত সহজ অ্যালগরিদমের জ্ঞান) ছাড়াই ব্যবহার করতে পারে না। চতুর্থাংশ স্কোয়ারের বড় টেবিলগুলি কম্পিউটারের ব্যবহার দ্বারা ১৮৭২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর সংখ্যার সঠিক গুণমান সরল করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।