Micro facture কিভাবে দ্রুত তৈরি করা যায়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+7 টি ভোট
273 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (330 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (480 পয়েন্ট)

মানুষের শরীরে হাড় এমনই এক জিনিস, যার আলাদা করে যত্নআত্তির তেমন প্রয়োজন পড়ে না। তাই হাড় থাকতে হাড়ের মর্মও বিশেষ কেউ বোঝে না। বোঝে তখনই, যখন সেটি ভাঙে বা চিড় খায়। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় ‘বরফ আন’, ‘প্লাস্টার কর’... ইত্যাদি! আর যত্নআত্তির প্রয়োজনও সেই সময়েই পড়ে, ধীরে ধীরে তাকে সারিয়ে তোলার জন্য।

হাড় কী ভাবে ভাঙে, কী ভাবে তাকে জোড়া লাগানো যায়, সে সব নিয়েই কথা বললেন অস্থি বিশেষজ্ঞ ডা. সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়।

বোন ফ্র্যাকচার কী

ডাক্তারি পরিভাষায় হাড় ভাঙা বলতে বোঝায় হাড়ের ‘কন্টিনিউইটি’তে যখন কোনও ছেদ পড়ে। হাড়ের অনেক স্তর থাকে। একদম বাইরে একটা পর্দা থাকে, যাকে পেরিঅস্টিয়াম বলা হয়, তার পর থাকে কর্টিকাল বোন, তার মাঝে থাকে মজ্জা। এটি অনেকটা রডের মতো, ত্রিমাত্রিক গঠনের। রডের যে কোনও একটা অংশ যদি ভেঙে যায়, তা হলে বলা যেতে পারে তার কন্টিনিউইটিতে ছেদ পড়ল। হয় তা ‘কমপ্লিট ব্রেক’, নয়তো ‘ইনকমপ্লিট ব্রেক’। আবার রড নরম পদার্থ দিয়ে তৈরি হলে অনেক সময়ে থেঁতলেও যেতে পারে। হাড়ের ক্ষেত্রে এই সব কিছুকেই ‘ফ্র্যাকচার’ বলা হয়।

ফ্র্যাকচার আবার নানা ধরনের হতে পারে। যেমন, কমপ্লিট ফ্র্যাকচার। অর্থাৎ হাড় পুরোপুরি ভেঙেছে। দ্বিতীয়ত, ইনকমপ্লিট ফ্র্যাকচার। একে ‘গ্রিনস্টিক ফ্র্যাকচার’ও বলা হয়। সাধারণত বাচ্চাদের এই ধরনের ফ্র্যাকচার হয়। এতে একটা দিক ভাঙে, অন্য দিকটা ঠিক থাকে। এ ছাড়াও হতে পারে ক্লোজ়ড ফ্র্যাকচার। এতে বাইরের ত্বকের সঙ্গে হাড় ভাঙার কোনও যোগ থাকে না। অর্থাৎ বাইরের ত্বক স্বাভাবিক থাকে, কিন্তু ভিতরের হাড় ভেঙে যায়। চতুর্থত, ওপেন ফ্র্যাকচার। এতে হাড়ের টুকরোটি বাইরের ত্বকের সংস্পর্শে আসে। ত্বক ফুটো করে সে বেরিয়ে যেতে পারে। পঞ্চমত, ডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচার। এতে হাড়ের দুটো টুকরো ভেঙে আলাদা হয়ে যায়। আবার মিনিমালি ডিসপ্লেসড বা আনডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচার হলে হাড় ভাঙে, কিন্তু নিজের জায়গাতেই সে থাকে। এ ছাড়াও হেয়ারলাইন ফ্র্যাকচার, স্পাইরাল ফ্র্যাকচার ইত্যাদি নানা ধরনের ফ্র্যাকচার রয়েছে।

ফ্র্যাকচারের কারণ

প্রধানত ফ্র্যাকচার হয় কোনও ট্রমা বা ইনজুরি থেকে। এতে হয় হাড় সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে যায় অথবা হাড়ের সঙ্গে যে মাসল, লিগামেন্ট জুড়ে থাকে, সেগুলি অনেক সময়ে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারে। একে বলা হয় অ্যাভালশন ফ্র্যাকচার। আবার অনেক সময় অস্টিয়োপোরোসিস থাকলে বা অন্য কারণেও স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাড় নরম থাকে বলে, হেয়ারলাইন ফ্র্যাকচার হয়। সাধারণত একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বারবার মাইক্রো ট্রমা হওয়ার কারণে একটা সময় পর জায়গাটায় ছোট ছোট ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। ধরা যাক, কারও পায়ের হাড়ের ১০ কেজি ওজন নেওয়ার ক্ষমতা আছে। অথচ, সেখানে ১৫ কেজি ওজন চাপানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কয়েক মাস বা বছর পরে এই ধরনের ফ্র্যাকচার লাইন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অস্টিয়োপোরোসিস, ভিটামিন ডি-থ্রি ডেফিশিয়েন্সি, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অথবা কোনও হরমোন-জনিত সমস্যা থেকেও এই ধরনের ফ্র্যাকচার হতে পারে।

প্যাথোলজিক্যাল কারণেও ফ্র্যাকচার হতে পারে। হাড়ের ভিতরে টিউমর বা কোনও সংক্রমণের কারণে হাড়ের শক্তি কমে গিয়ে ফ্র্যাকচার হয়। জন্মগত ত্রুটির কারণেও হাড়ের শক্তি কম থাকতে পারে। এতে সহজেই ফ্র্যাকচার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

হাড় ভাঙার ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখনই ফ্র্যাকচার হবে, বিশেষ করে হাত বা পায়ের ক্ষেত্রে, হাড় মোটামুটি সোজা করে কোনও শক্ত কাঠ, লাঠি বা কার্ডবোর্ডের সঙ্গে কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে ভাল করে পেঁচিয়ে দিতে হবে, যাতে জায়গাটা সোজা থাকে। অনেক সময় হাড় ভাঙার পর হাত বা পা বেঁকে যায়। তখন তাকে সোজা অবস্থায় আনাটাই প্রাথমিক চিকিৎসা। এ ভাবেই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সোজা করতে গেলে অনেক সময় প্রথম দিকটা ব্যথা লাগতে পারে। তাই বরফ দিয়ে ব্যথা আগে একটু কমিয়ে নিতে হবে। হাড় সোজা করে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হলে ব্যথা অনেক কমে যায়। তবে হিপ ফ্র্যাকচারে এমনটা করা সম্ভব নয়।

স্পাইনাল ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে ঘাড়ের কাছে একটা কলার বা মোটা তোয়ালে পেঁচিয়ে দিতে হবে, যাতে মাথা আর বাকি শরীর এক রেখায় থাকতে পারে। অন্যথায় সেকেন্ডারি স্পাইনাল ইনজুরির সম্ভাবনা থাকে। এ ভাবেই মাথার দু’পাশে দুটো বালিশ রেখে কোনও শক্ত সারফেস বা স্ট্রেচারে শুইয়ে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে আনতে হবে।

ছোট ছোট অ্যাভালশন ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে যদি হাড়ের জয়েন্ট ঠিক থাকে, তা হলে চিন্তার কারণ নেই। সে ক্ষেত্রে জায়গাটায় বরফ দিয়ে ভাল করে পেঁচিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

বুঝবেন কী ভাবে

হাড় ভাঙার প্রথম উপসর্গ ব্যথা। এবং ডিফর্মিটি। হাড়টা তখন এক সরলরেখায় থাকে না, বেঁকে যায়। তৃতীয় উপসর্গ, অনেক সময় ব্যথার জায়গাটি নীল হয়ে যায়। অর্থাৎ ভিতরে রক্তপাত হচ্ছে। চতুর্থ উপসর্গ, হাড় ভাঙার জায়গাটি ঠিকমতো কাজ করে না। যেমন, পায়ে ফ্র্যাকচার হলে পায়ের উপরে ভর দেওয়া যায় না। হাতে ফ্যাকচার হলে হাত নাড়ানো যায় না। অবশ্য হেয়ারলাইন ফ্র্যাকচার হলে হাত, পা বা আঙুল নাড়ানো যায় ঠিকই, কিন্তু সে ক্ষেত্রেও নাড়ানোর সময় ব্যথা করবে। এ ছাড়াও, ফ্র্যাকচার হলে অনেক সময় হাড়ে হাড়ে ঘষা খেয়ে এক রকম কড়কড় আওয়াজ হয়। চিকিৎসকরা সেটা শুনেও বুঝতে পারেন হাড় ভেঙেছে কি না।

ফ্র্যাকচার ম্যানেজমেন্ট

প্রাথমিক চিকিৎসার পর রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার প্রথমেই এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, কিছু ক্ষেত্রে এমআরআই করে জায়গাটা দেখে নেন। তার পরে স্প্লিন্ট দিয়ে সাময়িক ভাবে জায়গাটাকে ধরে রাখা হয়। এই সময়েই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন সেখানে প্লাস্টার করা হবে, না কি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন আছে। এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে, ফ্র্যাকচারের নিরাময় সম্পূর্ণ নিজে থেকেই হয়। বয়স অনুযায়ী হয়তো সময় কম কিংবা বেশি লাগতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিক উপায়েই তা জোড়া লাগে। এখানে চিকিৎসকের ভূমিকাটি হল— দুটো আলাদা হয়ে যাওয়া হাড়ের টুকরোকে এক রেখায় নিয়ে আসা, প্লাস্টার, প্লেট, স্ক্রু বা রডের সাহায্যে। বাকি কাজটা নিজে থেকেই সম্পন্ন হবে। হাড় জোড়া লাগার পরে ধীরে ধীরে থেরাপির মাধ্যমে নিকটবর্তী জয়েন্ট এবং পেশিগুলোর স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যথায়, জায়গাটা শক্ত হয়ে যায় এবং পেশিগুলোও শিথিল হয়ে পড়ে। মনে রাখা দরকার, ফ্র্যাকচারের চিকিৎসা যথাযথ ভাবে এবং ঠিক সময়ে হলে সংশ্লিষ্ট অঙ্গও ঠিক আগের মতোই কাজ করতে পারে। কোনও পরিবর্তন হয় না।

আটকানোর উপায়

সাধারণত ২৫-৪০ বছর বয়সের পরে আমাদের শরীরের হাড় এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনাও বাড়ে। বিশেষ করে, মেয়েদের ক্ষেত্রে মেনোপজ়ের পরে এই সমস্যা বাড়ে। ডায়াবিটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিসের রোগী অথবা যাঁরা দীর্ঘ দিন স্টেরয়েড খাচ্ছেন, তাঁদের হাড়ের সমস্যাও বেশি থাকে। ফলে, এই সব ক্ষেত্রে আগে রোগটির চিকিৎসা করতে হয়। আর্থ্রাইটিস থাকলে রোগীকে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি-থ্রি সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে। সঙ্গে প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় থাকবে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার, দুধ, ছানা বা দই, স্প্রাউটস এবং পাতাযুক্ত আনাজ। বিশেষত, মেনোপজ়ের পরে মহিলাদের এই ডায়েট মেনে চলা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।

সঙ্গে নিয়মিত শারীরচর্চার প্রয়োজন। শারীরচর্চায় মাসল টোন ঠিক থাকবে, শরীরের পুরো ভারটা হাড়ের উপর গিয়ে পড়বে না। এতে অনেকটাই ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা আটকানো যায়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+6 টি ভোট
4 টি উত্তর 848 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
6 টি উত্তর 1,071 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
1 উত্তর 209 বার দেখা হয়েছে
19 এপ্রিল 2023 "প্রযুক্তি" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md Sadman Sakib (4,640 পয়েন্ট)
+4 টি ভোট
2 টি উত্তর 385 বার দেখা হয়েছে
+4 টি ভোট
1 উত্তর 342 বার দেখা হয়েছে
09 নভেম্বর 2021 "রসায়ন" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Roky palit (550 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,131 জন সদস্য

79 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 78 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...