ভাবতেও অবাক লাগে পানি কোনো মানুষের জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে, তাই না?
তবে এই ব্যাপারটি মূলত নবজাতকদের জন্য প্রযোজ্য।
খুব লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন নবজাতক শিশুদের পানি পান করানো হয় না। কিন্তু কেন? কখনো ভেবেছেন কি?
মূলত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের দেহ শতকরা ৫৫-৬০ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত। অপরদিকে নবজাতকদের দেহ প্রায় ৭৫ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত। এই কারণে নবজাতকের বয়স ৬ মাস হওয়ার আগে তারা মায়ের দুধ ব্যতীত পানি পান করতে পারে না।
আপনি হয়তো জানেন, প্রত্যেক মানুষের দেহে ধারণকৃত পানি কিডনি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং এই পানি ধারণের নির্দিষ্ট সীমাও রয়েছে। দেহ যখন এই সীমার বাহিরে অতিরিক্ত পানি ধারণ করে ফেলে তখন কিডনির পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।
ফলে অতিরিক্ত পানি দেহের রক্তনালি ভেদ করে রক্তে অবস্থিত সোডিয়াম কিংবা লবণের সাথে মিশ্রিত হয়ে রক্তকে আরও বেশি তরল করে ফেলে। যখন রক্তে এই সোডিয়ামের মাত্রা ০.৫ আউন্স/গ্যালন এর নিচে নেমে আসে তখন একধরনের ঝুঁকি দেখা যায় যা হাইপোন্যাট্রেমিয়া (Hyponatremia) নামে পরিচিত। হাইপোন্যাট্রেমিয়া কনফিউশান, বমি বমি ভাব, মাংসপেশির সংকোচন এর মত বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে।
নবজাতকের ক্ষেত্রে এই গল্প কিছুটা ভিন্ন। নবজাতক শিশুদের কিডনি পূর্ণবয়স্কদের তুলনায় অর্ধেক হয়ে থাকে। তাই জন্মের পরপরই তারা দেহে অতিরিক্ত পানি ধারণ করতে অক্ষম। অল্প কিছু আউন্স পরিমাণ পানিও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে যেতে পারে। এটি ছাড়াও তাদের কিডনি পানি পরিশ্রুত (Filter) করার জন্য ততটা উন্নত নয়।
তাই, পানি পান করার করার ফলে সেই পানি শিশুদের সংবহনতন্ত্রে যাবে যা রক্তকে আরও তরল করে ফেলবে এবং দেহে পানি পরিমাণ ৭-৮ শতাংশ বৃদ্ধি করে দেয় যা শিশুদের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ক্রেডিট: সামসুন নাহার প্রিয়া (সায়েন্স বী)