১। যোজনীঃ একটি মৌলের অপর একটি মৌলের সাথে যুক্ত হবার সামর্থ্যকেই যোজনী বলে। আবার অন্যভাবে বলা যায়, কোন মৌল এক পরমানু হাইড্রোজেন(H) অথবা তার সমতুল্য অন্য মৌলের যত সংখ্যক পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয় তাকে যোজনী বলে। যেমন মিথেন (CH4) এ কার্বনের (C) যোজনী চার। কেননা কার্বন (C) চার পরমানু হাইড্রোজেনের(H) সাথে যুক্ত হয়েছে। তেমন ভাবেই পানিতে অক্সিজেনের যোজনী দুই।
২। ইলেকট্রনীয় ধারনায় যোজনীঃ যৌগ গঠন কালে কোন একটি পরমানু বা মূলক অপর একটি পরমানু বা মূলক হতে যে কয়টি ইলেকট্রন গ্রহন করে বা প্রদান করে তাই তার যোজ্যতা বা যোজনী। যেমন বলা যায় ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড লবন গঠন কালে ক্যালসিয়াম তার শেষোক্ত ২ টি ইলেকট্রন দান করে তাই ক্যালসসিয়ামের যোজনী ২ অন্যদিকে এই দানকৃত ২ টি ইলেকট্রন ২ টি ক্লোরিন গ্রহন করে তাই ক্লোরিন এর যোজনী এক।
বিঃ দ্রঃ শুধুমাত্র যে গ্রহন বা বর্জন ই ঘটবে এমন না শেয়ার ও হতে পারে
৩। যোজনীর আরো এক প্রকার ধারনা আছে। এই ধারনা টি ঠিকভাবে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোয়ান্টাম সংখ্যা সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে। পাশাপাশি ইলেকট্রন বিন্যাস (হুন্ডের নীতি) জানতে হবে। এছারা মৌলের সংকরায়ন ও যোজনীর ক্ষেত্রে গুরুত্ব পূর্ণ ভুমিকা রাখে। ধারনা টি দেয়া হল কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ কক্ষপথে যত সংখ্যক বেজোড় ইলেকট্রন থাকে তাকে ঐ মৌলের যোজনী বা যোজ্যতা বলে। একটা উদাহারন দেয়া যাক। আমরা এখানে বেশ কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করব। সোডিয়াম পরমাণুর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে তার ইলেকট্রন বিন্যাস দেখব 1s2, 2s2, 2p6, 3s1. এটার শেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন আছে। এবং এটা বিজোড়। এখন যদি আমরা ক্যালসিয়াম এর দিকে নজর দেই। দেখতে পাই এটার ইলেকট্রন বিন্যাস 1s2, 2s2, 2p6, 3s2, 3p6, 4s2. এটার শেষ কক্ষপথে তো ২ টি ইলেকট্রন। এটি একটি জোড় সংখ্যা এবং 4s2 তে ইলেকট্রন জোড়ায় আছে। তাহলে যোজনী ২ হয় কি করে। বলে রাখি s অরবিটালের জন্য হুন্ডের নীতি প্রয়োগ হয় না। এখন আমরা কার্বন এর ইলেকট্রন বিন্যাস দেখি 1s2, 2s2, 2p2. শেষ অরবিটালে ইলেকট্রন ২ টি। এখানেই হুন্ডের নীতি প্রয়োগ করলে দেখব 2px1, 2py1. ২ টি ইলেকট্রন ই বিজোড় অবস্থায় আছে। তাই কার্বনের যোজনী ২। কিন্তু বিশেষ অবস্থায় 2s2 এর ১ টি ইলেকট্রন ও 2pz1 এসে পরে। এবং সব গুলি ইলেকট্রন বিজোড় হয় ও যোজনী ৪ হয়।
সবসময়ের জন্য যোজনী পূর্ণ সংখ্যা হয়। কখনও ভগ্নাংশ হয় না যোজনীর মান সর্বদাই ধনাত্মক হয়। যোজনী পরিবর্তনশীল হতে পারে। একই মৌলের যোজনী একাধিক হতে পারে।
সূত্র: কোরা