মৌচাকে সকল মৌমাছিরা একটি কলোনি হিসেবে বাস করে। কিন্তু কলোনির সব মৌমাছির কাজ কিন্তু মধু তৈরি নয়। মূলত কর্মী মৌমাছিদের কাজ হলো ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা। কিন্তু ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধুতে প্রায় ৪০%-৮০% পানি থাকে, ফলে সেই ফুলের মধুকে সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মৌমাছিদের দেহে ফুলের মধু সংগ্রহ করার জন্যই আলাদা একটি অঙ্গ থাকে যাকে বলা হয় “হানি স্টোমাক”। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করার পর তা সেই হানি স্টোমাকে জমা করে। মৌচাকে ফিরে আসার সময় হানি স্টোমাকের বিভিন্ন এনজাইমের প্রভাবে ফুলের মধুর ধীরে ধীরে ঘন হতে থাকে, অর্থাৎ পানির পরিমাণ কমতে থাকে। মৌচাকে ফিরে আসার পর উদ্গিরন-এর মাধ্যমে মধু এক মৌমাছি থেকে আরেক মৌমাছিতে স্থানান্তরিত হয় এবং প্রতিটি মৌমাছির হানি স্টোমাকের এনজাইমের প্রভাবে মধুর ঘনত্ব বাড়তেই থাকে। শেষপর্যায়ে মৌমাছিরা তাদের ডানা দিয়ে বাতাস করে মধুর ঘনত্ব একদম কমিয়ে আনে যেন তা অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। মধু তৈরি হয়ে গেলে মৌমাছিরা তা অতি যত্ন সহকারে মৌচাকের বিশেষ কুঠুরিতে সংগ্রহ করে। একটি কর্মী মৌমাছি তার পুরো জীবনে এক চা চামচের ১২ ভাগের ১ ভাগ মধু উৎপাদন করতে পারে। ১ পাউন্ড মধু উৎপাদন করতে ১০০০০ মৌমাছিকে প্রায় ৭৫০০০ মাইল উড়তে হয় এবং প্রায় ৮০ লক্ষ ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে হয়।