০১) কর্মী মৌমাছিরা ফুলে ফুলে ঘুরে ঘুরে মৌরস সংগ্রহ করে। এই মৌরসকে ইংরেজিতে বলে নেকটার। নেকটার আসলে ফুলের রেণুতে থাকা মিষ্টি পানির মতো তরল। মৌমাছির শরীরে দুইটা পাকস্থলি আছে। একটাতে সে এই মৌরস জমা করে আর অন্যটি আমাদের মত স্বাভাবিক, খাবার পরিপাক হয়।
০২) কর্মী মৌমাছি দূর দূরান্ত থেকে পেটে মৌরস নিয়ে এসে মৌচাকে জমা করে। মৌচাকে মধুচকোষ বা Honeycomb বলে অনেক গুলো ছোট ছোট প্রকোষ্ঠ থাকে। মৌমাছিরা এই প্রকোষ্ঠে মধু ঢালার আগে পেট থেকে মধু মুখে নিয়ে আসে। মুখে এনে মধুকে তারা চিবুতে থাকে। এটা মধু তৈরি করার সব চেয়ে জরুরী ধাপ। কেননা, এই কাজটা পৃথিবীর কোনো মেশিন করতে পারে না। পারে শুধু মৌমাছিরাই। মধু চিবানো হয়ে গেলে মধু দিয়ে এক একটি করে প্রকোষ্ঠ ভরতে থাকে।
০৩) এরপরই হয় আরেকটি জরুরী কাজ। প্রকোষ্ঠ গুলো সব ভরে গেলে, কর্মী মৌমাছিরা সবাই মিলে ডানা ঝাপটাতে থাকে। এই সবার একসঙ্গে ডানা ঝাপটানো আসলে একটা বড় ফ্যানের কাজ করে। এভাবে প্রকোষ্ঠে থাকা মৌরসের পানি বাস্প হয়ে উড়ে যেতে থাকে। এভাবে মৌরস গাঢ় ও ঘন হয়। ১৭% আর্দ্রতায় ঘন মৌরস মধুতে পরিণত হয়ে যায়। মধু হয়ে গেলেও কর্মী মৌমাছির একটি দল সবসময় ডানা ঝাপটাতেই থাকে, যেন আর্দ্রতা কিছুতেই বাড়তে বা কমতে না পারে। এই জন্যই আপনি যখনই মৌচাকের কাছে যাবেন শুনবেন একটা ভোঁ ভোঁ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এটা আসলে মৌমাছিদের সম্মিলিত ডানা ঝাপটানোর শব্দ।
০৪) যখন মধু পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়, মৌমাছি আবার পেট থেকে একটা মোম বের করে এবং প্রকোষ্ঠ গুলোর মুখ একদম বাতাসরোধী করে আটকে দেয়, যতদিন না তাদের সেই মধু ব্যবহার করা লাগে।
০৫) আমরা যখন মধু সংগ্রহ করি, তখন আমাদের মৌয়ালরা এই সব প্রকোষ্ঠ গুলোকে ভেঙে নিয়ে আসে। পরে মোমগুলো গলে গেলেই মধু বের হয়ে আসে।
আমরা যে মোম ব্যাবহার করি সেগুলো কিন্তু এই প্রকোষ্ঠ বন্ধ করার মোমই। পরে শুধু আমরা একটু পরিষ্কার করে আকৃতিতে নিয়ে।
তথ্যকণিকা #গুগল