"মেয়েরা খারাপ ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, ভালো ছেলেরা সুযোগ পায় না।" - নম্র ও ভদ্র একটা ছেলের তুলনায় মুখভর্তি খোচা খোচা দাড়ি, ধূমপান করা একটা ছেলের প্রতি মেয়েদের আকর্ষণ বরাবরই বেশি লক্ষণীয়। কিছু মেয়েদের দেখা যায় খারাপ, সমাজের চোখে বর্জনীয় একটা ছেলের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি সন্ত্রসী, মাদকাসক্ত পুরুষদের প্রতি রীতিমতো ভালোবাসা বা সহানুভূতি প্রকাশ করছেন অনেক নারী। শুধু বাংলাদেশের ঘটনা নয় এটুকু...
নারীরা গভীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভদ্র স্বভাবের পুরুষদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক আকর্ষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। যেসব পুরুষ নিজেদের স্বেচ্ছাসেবী দাবি করেন তাদের প্রতিও নারীদের আকর্ষণ দেখা যায়। অনেকে আবার রুক্ষ, উগ্র ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হন। এর বেশ কিছু কারণ আছে : নারীরা আত্মবিশ্বাসী পুরুষদের বেশি পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে খারাপ ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী, উগ্র এবং নারীদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে। খারাপ ছেলেদের প্রতি মেয়েদের আকৃষ্ট করার মূল হোতা হরমোন। আমরা জানি, প্রেম ভালোবাসা হরমোনের খেলা মাত্র।
মানুষের আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসার জন্য দায়ী বেশ কিছু হরমোন। যেমন : টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, অ্যাড্রেনালিন, ডোপামিন, সেরেটোনিন। যেকোনো পুরুষের প্রতি কামুক হওয়া বা আকর্ষণের জন্য দায়ী হরমোন এগুলো। এছাড়া দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনের জন্য অক্সিটোসিন ও ভেসোপ্রেসিন নামক দুটি হরমোন জড়িত। নারীরা নির্দিষ্ট প্রকারের পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হন, যাদের বলা হয় "আলফা"। অর্থাৎ প্রভাবশালী, বুদ্ধিমান, আত্মবিশ্বাসী পুরুষদের প্রতি নারীদের আকর্ষণ বেশি। আলফা পুরুষদের ব্যক্তিত্ব ও খারাপ ছেলেদের ব্যক্তিত্ব অনেকটা একই। নারীদের ওভ্যুলেশন পিরিয়ডে হরমোন ও শারীরিক চাহিদার প্রেক্ষিতে পুরুষালী, কামুক, আকর্ষনীয় ছেলেদের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখান তারা।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ত্রাসী, মাদকাসক্ত ছেলেদের প্রতি "ক্রাশ" বা ভালোবাসা প্রকাশের যেই বাতিক নারীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তাকে বলা হয় Hybristophilia। অপরাধ, বেআইনী কাজ, মাদক ইত্যাদির সাথে জড়িত পুরুষদের প্রতি শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করাকে বলে হাইব্রিস্টোফিলিয়া। এমন বিকৃত ও অস্বাভাবিক যৌন মানসিকতা প্যারাফিলিয়া এর অন্তর্ভুক্ত। এই সিনড্রোমে আক্রান্ত মানুষ অপরাধীদের নিকট যৌন ফ্যান্টাসিমূলক চিঠি, মেইল ইত্যাদি পাঠানোর নজির আছে। বেশ কিছু কারণে নারীরা অপরাধীদের প্রতি আকৃষ্ট হন :
● জীবনে পিতৃতূল্য কারো অভাব বা আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে এমন কারো অভাব।
● আপরাধী বা খারাপ ছেলেকে ভালোবাসা দিয়ে ভালো মানুষ বানিয়ে ফেলার মনোভাব।
● সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধীর শারীরিক গড়ন দেখে সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসি।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে হাইব্রিস্টোফিলিয়াকে বনি অ্যান্ড ক্লাইড সিনড্রোমও বলা হয়। বহিবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এই ফিলিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অতীতে হলি আর্টিজান হামলার সাথে জড়িত সুদর্শন নিবরাস ইসলাম এর প্রতি বাঙালি নারীদের ব্যাপক ভালোবাসা ও ফ্যান্টাসি দেখা যায়। বর্তমানে এলএসডি কারবারে জড়িত গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের প্রতি দেখা যাচ্ছে নারীদের আকর্ষণ....
( বি.দ্র : সব নারীদের উদ্দেশ্যে নয় বরং শুধুমাত্র যারা হাইব্রিস্টোফিলিয়াতে আক্রান্ত তাদের জন্য প্রযোজ্য।)
#science #bee #facts #love