ইসরায়ালের রক্ষাকবচ আয়রন ডোম বা লৌহ গম্বুজ। কয়েকঘন্টা আগের হামাসের 'কাতুসা রকেট' ব্যারেজ ইন্টারসেপ্ট করছে ইসরায়েলের 'আয়রন ডোম' এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। বাম দিক থেকে আসা আলোর রেখা গুলো কাতুসা রকেট, ডান এবং নিচের দিক থেকে আসা আলোর রেখা গুলো আইরন ডোম ইন্টারসেপ্টর মিসাইল।
উল্ল্যেখ্য, আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম গুলো সারা ইসরায়েল জুড়ে ছোট ছোট ইউনিটে জালের মত স্থাপন করা আছে। আপনি কি জানেন আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কিভাবে কাজ করে? আসুন তার একটা সরল বর্ননা জানা যাক :-
ইসরায়েলের মেইন রাডার সিস্টেম বা আয়রন ডোমের রাডার সিস্টেম প্রথমে রকেট লান্ঞ ডিটেক্ট করে যে অন্ঞলের উপর রকেট আঘাত আনবে সে অঞ্চলের আয়রন ডোম লান্ঞার সিস্টেমগুলোকে এক্টিভ করে।
তারপর আয়রন ডোমের রাডার গুলো কয়েক সেকেন্ড ধরে রকেটগুলোর গতিপথ ট্র্যাক করে ডাটা আয়রন ডোমের কম্পিউটার প্রসেসিং সিস্টেমে পাঠায়। সেখানে রকেট গুলোর গতিপথের উপর নির্ভর করে কম্পিটার বিশ্লেষন করে যে রকেটগুলোর সম্ভাব্য আঘাত করার পয়েন্ট গুলো কোথাই কোথাই। তারপর ওই পয়েন্ট গুলোতে কোন স্থাপনা আছে কিনা তা নির্নয় করে কম্পিটার। যদি স্হাপনা থাকে তাহলে রকেট গুলোকে ইন্টারসেপ্ট বা ধ্বংস করার জন্য আকাশে সব চেয়ে সুবিধাজনক পয়েন্ট বের করে এবং আয়রন ডোম সিস্টেমের সুবিধা জনক অবস্হানে থাকা লান্ঞার/লান্ঞারগুলোকে কে টার্গেট এসাইন করে। তাৎক্ষনিক লান্ঞার মিসাইল দিয়ে রকেট ধ্বংস করে দেয়। আর যেসব আপকামিং মিসাইল খালি জায়গায় আঘাত করবে সেগুলোকে ছেড়ে দেয়।
এক্ষেত্রে প্রতি মুহুর্তেই রকেট গুলো ট্র্যাকিং হতে থাকে এবং আয়রন ডোম সিস্টেমের কোন লান্ঞারের কতটি মিসাইল খরচ হয়েছে তার তথ্য আপডেট হতে থাকে। এভাবে যদি অত্যন্ত বেশি রকেট হামলা হয় এবং আয়রন ডোম মিসাইল রিফিল করে কুলাতে না পারে বা দেরি হয়, তখন তারা তাদের ইন্টারসেপ্ট প্রায়োরিটি চেন্জ করতে পারে সম্ভাব্য আঘাতস্থলের গুরুত্ব অনুসারে। তাই অনবরত রকেট ছুড়লেও তারা আশে পাশের এলাকার লান্ঞার দিয়ে কন্টিনিউয়াস রকেট ইন্টারসেপ্ট করতে পারে। এই পুরো প্রক্রিয়াই কিন্তু অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভেতর সম্পন্ন হয়ে থাকে। উল্ল্যেখ্য একই সময়ে কিন্তু যে স্হান থেকে রকেট লান্ঞ করেছে তাও ডিটেক্ট করে এবং ডাটা ইসরায়েলে মিলিটারি সেন্ট্রাল সিস্টেমে পাঠিয়ে দেয়। দরকার মনে করলে কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই জায়গায় এয়ার স্ট্রাইক চালায় ইসরায়েল।
তবে যে কোন সিম্টেমই শতভাগ নিঁখুত নয়,তাই মাঝে মধ্যে দু একটা রকেট গিয়ে ইসরায়েলের ভিতর টার্গেটে আঘাত করে। তবে এখন পর্যন্ত এই আয়রন ডোম এন্টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমই এধরনের কাজের জন্য দুনিয়ার সেরা সিস্টেম যা ইসরায়েলের রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। ধারনা করা হয় বর্তমানে যে কোন ড্রোন সিস্টেমের বিরুদ্ধেও আয়রন ডোম অত্যন্ত কার্যকর সিস্টেম। তাই কিছু দিন আগে আমেরিকা পর্যন্ত ইসরায়েল থেকে আয়রন ডোম সিস্টেম ক্রয় করেছে।
বিষয়টা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি কিভাবে একটা জাতির রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।
সংগৃহীত