নীল তরমুজ : দ্বিতীয় বৃহৎ খাদ্য গুজব
সুর্য উদয়ের দেশ জাপানে তরমুজ খুবই জনপ্রিয়। বিভিন্ন রং, বিভিন্ন জাত এমনকি বিভিন্ন আকৃতিরও তরমুজ পাওয়া যায় এখানে। ঘনক আকার, সম্পুর্ণ গোলাকার এমনি হার্ট আকৃতির তরমুজও পাওয়া যায় এখানে। তাই গুজব যদি ছড়াতেই হয়, তবে জাপানকে জড়িয়েই কেনো নয়?
বিভিন্ন অনলাইন সোর্স এবং গুগল ট্রেন্ডসের পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে নীল তরমুজ বা Moon Melon-এর গুজব শুরু হয় ২০১১ সালের দিকে। ফটোশপ জানা কোন মহান ব্যক্তি সাধারণ তরমুজকে এডিট করে ফেসবুক, পিন্টারেস্ট, টাম্বলারের মতো প্লাটফর্মে আপলোড করে। অনেকজন অনেকরকম ভাবে এডিট করে। উপরন্তু এমাজন, ইবে - তে নীল তরমুজের বীজও কিনতে পাওয়া যায়!!
২০১৬ - ২০১৭ সালের দিকে এই নীল তরমুজের প্রতি মানুষের উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। বলা শুরু হয় "নীল তরমুজ একটি GMO উদ্ভিদ, যা জাপানের কোন এক এলাকাতে বিশেষ যত্ন সহকারে উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে GMO প্রযুক্তিতে এই নীল তরমুজ উদ্ভাবন করেন। খাওয়ার সময় এর স্বাদও পরিবর্তন হয়।"
এই গুজব বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার আরেকটি কারন হলো কাছাকাছি নামের আরো দুটো তরমুজের জাত থাকা। একটা হলো The red moon melon আরেকটা Sun, moon and stars watermelon. Red moon Melon সাধারন ক্যান্টালুপের মতোই। আর Sun, Moon and Stars watermelon এর গায়ে থাকে হলুদ ফোঁটা ফোঁটা দাগ। এর মধ্যে প্রায়শই একটা দাগ থাকে তুলনামুলক বড়, যাকে চাঁদের সাথে তুলনা করা হয়।
ঘনক আকার, হার্ট বা গোলাকার তরমুজ গুলো বিশেষ যত্ন নিয়ে উৎপন্ন। এজন্য তরমুজ গুলোকে ছোট অবস্থায় প্লেক্সিগ্লাস দিয়ে ঘিরে রাখা হয়।
তবে এখনো পর্যন্ত নীল তরমুজের সত্যতা পাওয়া যায়নি। যদি কেউ তরমুজের ভেতরে নীল রং প্রয়োগ করে থাকে তবে তা আলাদা কথা।
নীল তরমুজ হয়ে ওঠে দ্বিতীয় বৃহৎ খাদ্য সম্পর্কিত গুজব। প্রথম স্থানে আছে নীল স্ট্রবেরি।
©osama abrar