মহাকাশের আকৃতি কেমন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+4 টি ভোট
396 বার দেখা হয়েছে
"জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (110,330 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (7,560 পয়েন্ট)

সম্প্রতি নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে একটি পেপার প্রকাশিত হয়েছে। এই পেপার বলছে, মহাবিশ্বতত্ত্ব মহাবিশ্বকে যে রকম বিছানো চাদরের মতো সমতল ও খোলা বলে অনুমান করে, আসলে মহাবিশ্ব সে রকম নয়। এটি গোলীয় আকৃতির। সংগৃহীত সব তথ্য গোলীয় মহাবিশ্বকেই ৯৯ শতাংশ নিশ্চয়তা নিয়ে সমর্থন করে।

 

শুরুতেই একটা কথা খোলাসা করে নেওয়া যাক। এখানে পৃথিবীর আকৃতি নিয়ে কথা হচ্ছে না। পৃথিবী যে গোলীয় আকৃতির বা অনেকটা উপবৃত্তাকার, সেটা আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি। কথা হচ্ছে মহাবিশ্বের আকৃতি কেমন, তা নিয়ে। একটা সমতল ও খোলা মহাবিশ্বের সঙ্গে গোলীয় ও বদ্ধ মহাবিশ্বের পার্থক্য কী? এটা বোঝার জন্য একটা সহজ উদাহরণ ভাবা যেতে পারে। ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি বা সমতল জ্যামিতিতে রেখা অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত। তার মানে সমতল মহাবিশ্বে একটি রেখার কোনো শুরু বা শেষ নেই। এটি চলতেই থাকবে। গোলীয় এবং বদ্ধ মহাবিশ্ব যেহেতু সমতল নয়, তাই এখানে একটি রেখা অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত হবে না। বরং চলতে চলতে একসময় সে নিজের শুরুর বিন্দুতে এসে মিলে যাবে। গোল বলের ওপর একটা রেখা টানলে যেমন হয় আরকি।

প্ল্যাঙ্ক স্পেস টেলিস্কোপ পর্যবেক্ষণ থেকে কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড বা সিএমবির যে তথ্য পেয়েছে, সেটা স্পষ্টভাবে বদ্ধ মহাবিশ্বের মডেলের কথা বলছে। রোমের স্পেনিকা ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো মেলিখিওরি এমনটাই মনে করেন। এলিওনোরা দ্য ভ্যালেন্তিনো এবং জোসেফ সিল্কের সঙ্গে মিলে সাম্প্রতিক পেপারটি লিখেছেন তিনি। তাঁরা বলেন, সিএমবি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের কিছু যে সমতল মহাবিশ্বের দিকে ইঙ্গিত করে, আর কিছু যে গোলীয় বদ্ধ মহাবিশ্বের দিকে ইঙ্গিত করে, এটি একটি মহাজাগতিক সমস্যা হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।

এদিকে প্ল্যাঙ্ক টেলিস্কোপ নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের একটি দল মনে করে, এটি শুধুই পরিসংখ্যানগত একটি ছোট্ট সমস্যা। তাঁদের হিসাবে, তথ্যে এমন কিছু গড়বড় নেই। বরং বিভিন্ন বিজ্ঞানী এসব তথ্যের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ করতে চাইছেন বলেই মহাবিশ্বের আকৃতি নিয়ে এসব প্রশ্ন উঠছে।

মহাবিশ্বের ঘনত্বের ওপর। সব পদার্থ, সবটুকু শক্তি, গুপ্তবস্তু এবং গুপ্তশক্তি—সব মিলে যদি এমন ঘনত্ব পাওয়া যায় যে ভেতরের দিকমুখী মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এবং বহির্মুখী বিস্তৃতির হার ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় চলে আসে, সে ক্ষেত্রে মহাবিশ্ব সমতলভাবেই সব দিকে বিস্তৃত হওয়ার কথা। যে ঘনত্বে মহাবিশ্বের বিস্তৃতির হার আর ভেতরের দিকে মহাকর্ষীয় টান সমান থাকে, তাকে সংকট ঘনত্ব বলে।

মহাবিশ্বে জন্ম নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন যে তত্ত্বটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন, ইনফ্লেশন তত্ত্ব—এটি বলে, মহাবিশ্ব প্রায় সমতল আকৃতির। এই হিসাবে মহাবিশ্বের ঘনত্ব সংকট ঘনত্বের খুবই কাছাকাছি। গড়ে প্রতি ঘনমিটারে ৫ দশমিক ৭টি হাইড্রোজেন পরমাণুর ঘনত্বের সমান।

প্ল্যাঙ্ক টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের যে ঘনত্ব মেপেছে, সেটা আলোর দিক বদলের ওপর নির্ভর করে করা হয়েছে। মহাশূন্যের মাঝে আলোর এই দিক বদলের ঘটনাকে বলে গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং। বিশাল কোনো নক্ষত্র বা গ্যালাক্সির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়, বস্তুটির ভরের ফলে সৃষ্ট মহাকর্ষের টানে আলোর যাত্রাপথ বেঁকে যায়। তবে এর ফলে আলোর তীব্রতাও বেড়ে যায়। সে জন্যই মহাকর্ষীয় লেন্সিং কাজে লাগিয়ে আলো দূরদূরান্তে ছুটে যেতে পারে। তীব্রতা হারিয়ে মিলিয়ে যায় না।

মহাকর্ষ জিতে গেলে মহাবিশ্বেরও তেমনি চারদিক থেকে ভেতরের দিকে টান খেয়ে গোলীয় আকার ধারণ করার কথা।

গত ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছরে সিএমবি (কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড) আলো কতটুকু দিক বদলেছে বা এর কতটুকু মহাকর্ষীয় লেন্সিং হয়েছে, এর ওপর নির্ভর করেই মূলত প্ল্যাঙ্ক টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের ঘনত্ব মেপেছে। এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সংকট ঘনত্বের চেয়ে মহাবিশ্বের ঘনত্ব ৫ শতাংশের মতো বেশি। তার মানে গড়ে প্রতি ঘনমিটারে এই ঘনত্বের মান ছয়টি হাইড্রোজেন পরমাণুর সমান হয়। এর ফলে মহাবিশ্বের বিস্তৃতির হারকে হারিয়ে দেয় মহাকর্ষীয় টান। কাগজের পাতা যেমন মুড়ে দিলে গোল হয়ে ভেতরের দিকে এসে পড়ে, মহাকর্ষ জিতে গেলে মহাবিশ্বেরও তেমনি চারদিক থেকে ভেতরের দিকে টান খেয়ে গোলীয় আকার ধারণ করার কথা।

এখানে মহাবিশ্ব বদ্ধ না খোলা, গোলীয় না সমতল, এটা আসল সমস্যা নয়। আসল সমস্যা হলো, প্রাপ্ত দুই ধরনের তথ্যের মধ্যকার অসামঞ্জস্য।

এই সমস্যা মেটাতে নতুন পেপারটিতে বিজ্ঞানীরা আরেকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। মহাবিশ্বের ভিত্তি হিসেবে সপ্তম একটি সংখ্যা যোগ করা। এমনিতে আদর্শ মহাবিশ্ব তত্ত্ব মডেলে ছয়টি সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে মহাবিশ্ব গড়ে উঠেছে। N, ε (এপসাইলন), Ω (ওমেগা), λ (ল্যামডা), Q এবং D। এরা সবাই মহাবিশ্বের একেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাবিশ্বের গোলীয় বৈশিষ্ট্য বোঝানোর জন্য সপ্তম আরেকটি সংখ্যা এখানে যুক্ত করা উচিত। তাহলে লেন্সিংয়ের পরিমাণ নিয়ে যে গড়বড় পাওয়া যাচ্ছে, সেটা খাপ খেয়ে যাবে।

এদিকে অন্য বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নতুন আরেকটি সংখ্যা যুক্ত করার আগে বর্তমান আদর্শ তত্ত্ব কতটুকু সঠিক এবং নতুন সংখ্যা এই তত্ত্বের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। অর্থাৎ বেশির ভাগ বিজ্ঞানীই এখনো তথ্যের এই অসামঞ্জস্যতাকে অতটা বড় করে দেখতে রাজি নন।

মহাবিশ্বের আকৃতি এবং সংকট ঘনত্ব নিয়ে এক শতাব্দী ধরে অনেক নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। আমরা জানি, আইনস্টাইনের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটিও এ–সংক্রান্ত। আসলে সবকিছুর তত্ত্ব আবিষ্কৃত হওয়ার আগপর্যন্ত এই সমস্যার সত্যিকারের সমাধান আদৌ হবে কি না, কেউ জানে না।

তথ্য - বিজ্ঞানচিন্তা: নভেম্বর ২০১৯

0 টি ভোট
করেছেন (7,980 পয়েন্ট)
আচ্ছা, এটা সম্পর্কিত প্রমাণিত কিছু নেই।

তবে এটা নিয়ে ৩ ধরনের মতবাদ আছে।

কথা: সমতল, বদ্ধ, উন্মুক্ত।

তবে কোনোটিই প্রমাণিত নোয় বলে সঠিক বলে কোনো বেক্ষাজুক্ত উত্তর দেওয়া গেলো না।

ধন্যবাদ।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,271 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 755 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 382 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,233 জন সদস্য

65 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 65 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...