'ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এতে ক্যান্সার হয়।' এই বাক্যটি সিগারেটের প্যাকেটে স্পষ্ট করে লেখা থাকলেও আমরা অনেকেই ধূমপানে লিপ্ত হই। ধূমপান যে ক্ষতিকর তা জানার পরেও আসক্তির কারণে আমরা তা ছাড়তে পারিনা। প্রমথ চৌধুরি বলেছেন, "ব্যধিই সংক্রামক,স্বাস্থ্য নয়।" তাই আমরা খুব সহজেই ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ি, কিন্তু ধূমপান ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাটা খুব কষ্টকর হয়ে ওঠে। অনেকেই চান এই মরণ আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে। ধুমপায়ী থেকে অধূমপায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুবই কঠিন, তারচাইতেও কঠিন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। তবে নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকলে তা মোটেও অসম্ভব কিছু না।
আসুন জেনে নিই ধূমপান ছাড়ার কিছু টিপস :
১। প্রথমত একটি লিস্ট তৈরি করুন। কেন আপনি ধূমপান ছাড়বেন, সেটার একটা তালিকা বানান। সেখানে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক আর ধূমপান ছাড়ার উপকারিতা গুলো লিখুন।
২। একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করুন যে, ওই তারিখের পর কোনোমতেই সিগারেট ছোবেন না, কোটি টাকার বিনিময়েও না। তবে একবারে হুট করে বন্ধ করতে না পারলে আরেকটা কাজ করা যায়। প্রতিদিন একটি করে পরিমাণ কমিয়ে দিন। মনে করুন, আপনি দৈনিক ১০ টা সিগারেট খান। প্রতিজ্ঞা করুন যে কাল ৯ খাবেন, তারপরের দিন ৮ টা, তারপরে ৭ টা... এভাবে আগাতে থাকুন। তবে কোনোভাবেই নিজ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা যাবে না।
৩। দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করলে শরীরের একদম ভেতরে নিকোটিন চলে যায়। শরীরে টক্সিন হিসেবে তা জমা হয়। এটা আপনার ধূমপানের ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, ফলের রস, মধু, আদা, ওটস খান। এতে আপনার শরীরে জমা হওয়া নিকোটিন কমতে থাকে। তাতে আপনার ধূমপানের ইচ্ছা কমতে থাকবে।
৪। নিয়মিত শরীরচর্চা ও হাঁটাহাঁটি করুন। এতে করে ধূমপানের চাহিদা কমে আসবে। ফল-মূল ও শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
৫। যথাসম্ভব চেষ্টা করুন ধূমপায়ী সঙ্গীদের এড়িয়ে চলতে। অধূমপায়ীদের সাথে মিশুন, এতে করে চাইলেও আর সিগারেট ধরাতে পারবেন না।
৬। চা-কফি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। বেশিরভাগ ধূমপায়ীই মনে করেন যে সিগারেট ছাড়া চা কফির পরিপূর্ণ স্বাদ পাওয়া যায় না! তাই সিগারেট ছাড়ার সময়টায় যথা সম্ভব চা-কফি এড়িয়ে চলুন।
৭। সিগারেটের দোকান, সিগারেট কর্ণার থেকে দূরে থাকুন। পকেটে সিগারেটের প্যাকেট, দিয়াশলাই, লাইটারের বদলে চলকেট, চুইংগাম রাখুন। ধূমপানের ইচ্ছা জাগলে চকলেট, চুইংগাম খান। আর মুখ খালি না রেখে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন।
৮। আপনার পরিচিত যারা ধূমপান ছেড়েছেন, তাদের পরামর্শ নিন। তাদের কথা শুনুন, ধূমপান ছাড়ার পর তাদের জীবনে কী কী পরিবর্তন এসেছে, সেগুলো জানার চেষ্টা করুন। আর যদি কোনো কিছুতেই কাজ না হয় তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে
তবে হবেই দেখা বিজয়ের। ধূমপান বিহীন নতুন একটা জীবনে আপনাকে স্বাগত
- Mohammad Imran | Team Science Bee