নাক থেকে রক্ত পড়ার কারণ ও করণীয় কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
423 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (28,330 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (28,330 পয়েন্ট)
নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা এপিসট্যাক্সিস সমস্যাটি প্রায়শয়ই দেখা যায়। সাধারণত ৬০ শতাংশ মানুষ জীবনে কোনো না কোনো সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যার সম্মুখীন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেক সময় এটি জটিল রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

 রক্ত পড়ার কারণ :
যে কোনো বয়সের নারী/পুরুষ এ সমস্যায় পড়তে পারেন। নাক দিয়ে বিভিন্ন কারণে রক্ত পড়তে পারে। নাক, কান, গলা ছাড়াও শরীরের অন্য অনেক রোগের কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

ক) অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

খ) নাকের সমস্যা :

১. আঘাতজনিত,

২.অপারেশনজনিত,

৩. নাকের সর্দি, সাইনোসাইটিস।

৪. নাকের বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন যেমন- এট্রফিক রাইনাইটিস, রাইনসপো রিডিওসিস।

৫. নাকের ভিতর টিউমার।

৬. নাকের মাঝখানের হাড় অতিরিক্ত বাঁকা।

৭. নাকের মাঝখানের পর্দায় ছিদ্র ইত্যাদি।

 গ) সাধারণ কারণ :  

১. ওষুধ সেবনের সময় (Aspirin/ Warfarin জাতীয়)।

২. উচ্চরক্তচাপ।

৩. রক্তনালির কিছু জন্মগত ত্রুটি থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

৪. মাসিকের সময় এবং গর্ভাবস্থায়।

৫. জন্ডিস বা লিভারের প্রদাহ, লিভার সিরোসিসের মতো লিভারের অসুখ।

৬. রক্তের রোগ, যেমন- এ প্লাস্টিক অ্যানেমিয়া, হিমোফিলিয়া, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, পারপুরা।

 চিকিৎসা :

তাত্ক্ষণিক প্রাথমিক করণীয়গুলো :

১. রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসে পড়তে হবে। বৃদ্ধাঙ্গুল ও প্রথম আঙুল দিয়ে নাকের দুই ছিদ্র জোরে বন্ধ করুন। মুখ দিয়ে শ্বাস নিন। এভাবে ১০ মিনিট ধরে রাখুন। এ সময় আঙ্গুল ছাড়বেন না, প্রয়োজন হলে আরও বেশিক্ষণ চাপ দিয়ে ধরে রাখুন।

২. এ সময় সম্ভব হলে কপালে, নাকের চারপাশে বরফ ধরে রাখুন। মুখের ভেতরে তালুর যে অংশ নাক বরাবর সেখানে বরফ চাপ দিয়ে ধরুন। তাহলে রক্ত পড়া তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে।

৩. যদি রক্ত ১৫-২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পড়তে থাকে, তবে দেরি না করে পাশের হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে চলে যান।

 প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে যা করা হয় :

প্রথমে চিকিৎসক আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন এবং আপনার সমস্যার মাত্রা অনুযায়ী প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

২. নাকের রক্তপাত বন্ধ করতে অনেক সময় গজ/তুলা দিয়ে নাকের ভেতরে প্যাক দিতে হয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত প্যাক দেওয়ার জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়।

৩. অতিরিক্ত রক্তপাত হলে রোগীকে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

 রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা :

কী কারণে রক্ত পড়ছে সেটি নির্ণয় করে চিকিৎসা দিতে হয়। নাকের সামনের দিক থেকে রক্তপাত হলে খুব দ্রুত তা বন্ধ করা যায় কিন্তু পেছন বা ভিতরের দিক থেকে রক্তপাত হলে বহু ক্ষেত্রে তা বন্ধ করতে অনেক সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান লাগে। অনেক সময় নাকের এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করা হয় এবং প্রয়োজনে দায়ী রক্তনালিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাকের এন্ডোস্কপিক সার্জারি আধুনিক অপারেশন এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। নাকের কারণ ছাড়া অন্যান্য শারীরিক কারণে যখন রক্তপাত হয় তখন সংশ্লিষ্ট রোগের চিকিৎসা করতে হবে।

 সাবধানতা :

১. নাক, কান, গলার রোগকে কখনো অবহেলা করবেন না।

২. এছাড়া নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখুন।

৩. রক্ত পড়াকালে শোবেন না।

৪. নাকে হাত দেওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে।

৫. শিশুদের নখ ছোট রাখতে হবে।

৬. শুষ্ক মৌসুমে নাক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়, তার জন্য নাকের সামনের দিকে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে।

 লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক সার্জারি বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা।
0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা এপিসট্যাক্সিস সমস্যাটি প্রায়শয়ই দেখা যায়। সাধারণত ৬০ শতাংশ মানুষ জীবনে কোনো না কোনো সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যার সম্মুখীন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেক সময় এটি জটিল রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

রক্ত পড়ার কারণ : যে কোনো বয়সের নারী/পুরুষ এ সমস্যায় পড়তে পারেন। নাক দিয়ে বিভিন্ন কারণে রক্ত পড়তে পারে। নাক, কান, গলা ছাড়াও শরীরের অন্য অনেক রোগের কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

ক) অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। খ) নাকের সমস্যা : ১. আঘাতজনিত, ২.অপারেশনজনিত, ৩. নাকের সর্দি, সাইনোসাইটিস।

৪. নাকের বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন যেমন- এট্রফিক রাইনাইটিস, রাইনসপো রিডিওসিস। ৫. নাকের ভিতর টিউমার। ৬. নাকের মাঝখানের হাড় অতিরিক্ত বাঁকা। ৭. নাকের মাঝখানের পর্দায় ছিদ্র ইত্যাদি।

গ) সাধারণ কারণ :  ১. ওষুধ সেবনের সময় (Aspirin/ Warfarin জাতীয়)। ২. উচ্চরক্তচাপ। ৩. রক্তনালির কিছু জন্মগত ত্রুটি থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। ৪. মাসিকের সময় এবং গর্ভাবস্থায়। ৫. জন্ডিস বা লিভারের প্রদাহ, লিভার সিরোসিসের মতো লিভারের অসুখ। ৬. রক্তের রোগ, যেমন- এ প্লাস্টিক অ্যানেমিয়া, হিমোফিলিয়া, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, পারপুরা।

চিকিৎসা : তাত্ক্ষণিক প্রাথমিক করণীয়গুলো : ১. রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসে পড়তে হবে। বৃদ্ধাঙ্গুল ও প্রথম আঙুল দিয়ে নাকের দুই ছিদ্র জোরে বন্ধ করুন। মুখ দিয়ে শ্বাস নিন। এভাবে ১০ মিনিট ধরে রাখুন। এ সময় আঙ্গুল ছাড়বেন না, প্রয়োজন হলে আরও বেশিক্ষণ চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। ২. এ সময় সম্ভব হলে কপালে, নাকের চারপাশে বরফ ধরে রাখুন। মুখের ভেতরে তালুর যে অংশ নাক বরাবর সেখানে বরফ চাপ দিয়ে ধরুন। তাহলে রক্ত পড়া তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে। ৩. যদি রক্ত ১৫-২০ মিনিটের বেশি

সময় ধরে পড়তে থাকে, তবে দেরি না করে পাশের হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে চলে যান।

প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে যা করা হয় : প্রথমে চিকিৎসক আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন এবং আপনার সমস্যার মাত্রা অনুযায়ী প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। ২. নাকের রক্তপাত বন্ধ করতে অনেক সময় গজ/তুলা দিয়ে নাকের ভেতরে প্যাক দিতে হয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত প্যাক দেওয়ার জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়। ৩. অতিরিক্ত রক্তপাত হলে রোগীকে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা : কী কারণে রক্ত পড়ছে সেটি নির্ণয় করে চিকিৎসা দিতে হয়। নাকের সামনের দিক থেকে রক্তপাত হলে খুব দ্রুত তা বন্ধ করা যায় কিন্তু পেছন বা ভিতরের দিক থেকে রক্তপাত হলে বহু ক্ষেত্রে তা বন্ধ করতে অনেক সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান লাগে। অনেক সময় নাকের এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করা হয় এবং প্রয়োজনে দায়ী রক্তনালিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাকের এন্ডোস্কপিক সার্জারি আধুনিক অপারেশন  এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। নাকের কারণ ছাড়া অন্যান্য শারীরিক কারণে যখন রক্তপাত হয় তখন সংশ্লিষ্ট রোগের চিকিৎসা করতে হবে।

সাবধানতা : ১. নাক, কান, গলার রোগকে কখনো অবহেলা করবেন না। ২. এছাড়া নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখুন। ৩. রক্ত পড়াকালে শোবেন না। ৪. নাকে হাত দেওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। ৫. শিশুদের নখ ছোট রাখতে হবে। ৬. শুষ্ক মৌসুমে নাক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়, তার জন্য নাকের সামনের দিকে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক সার্জারি বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 797 বার দেখা হয়েছে
18 এপ্রিল 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ubaeid (28,330 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 255 বার দেখা হয়েছে
14 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
4 টি উত্তর 2,887 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,534 জন সদস্য

46 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 44 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...