বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই বৃদ্ধদের অনেকেরই খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়। ৬৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দিন দিন কমতে থাকে। এর ফলে তাঁরা নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখে পড়েন।
তাই বয়স্কদের জন্য সঠিকভাবে সুষম ডায়েটের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা জরুরি। ভিটামিন ও মিনারেল-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণ ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন তাঁরা।
করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে সুস্থ থাকতে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়ার প্রতি জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঠিক তেমনিভাবে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা বৃদ্ধদের জন্য সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আর ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোন কোন খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেটিই তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই এক প্রতিবেদনে বয়স্কদের সুস্থ থাকতে সুষম খাবারের ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছে। একঝলকে পড়ে নিন—
বাদামি চাল:
বাদামি চালে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও শক্তিবর্ধক উপাদান থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কার্যকর। এ ছাড়া এই চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মিষ্টি আলু:
মিষ্টি আলুতে বেটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ ছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া এতে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা বয়স্কদের জন্য বেশ উপকারী। সপ্তাহে অন্তত একদিন মিষ্টি আলু খাওয়া উচিত তাঁদের।
শাক:
ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বেটা ক্যারোটিনে পরিপূর্ণ শাক বয়স্কদের খাদ্য-তালিকায় বেশ ভালো সংযোজন হতে পারে। শাকে ভিটামিন কে-ও রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভীষণ কার্যকর।
ডিম:
ডিম প্রোটিন ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। ভিটামিন ও মিনারেলের স্টোর হাউস বলা হয় ডিমকে।
দই:
দই আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল দুর্বলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। দইয়ে রয়েছে প্রচুর প্রোবায়োটিকস (ভালো ব্যকটেরিয়া), যা পেটে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ফেলে এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
মশলা:
হলুদ ও আদার মতো গাছড়া ও মশলা বয়স্কদের রোগ সংক্রমণ ও অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে। এটি শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে সচল করতেও কাজ করে।
প্রাণীজ প্রোটিন:
চর্বিহীন মুরগি, গরুর মাংস, স্যামন ও সয়া সস স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং কার্ডিওভাসকুলারের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ স্যামন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
পানি:
শরীরকে সুস্থ রাখতে একজন বয়স্ক ব্যক্তির দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান প্রয়োজন। এতে সাধারণ জ্বর-সর্দি থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।
উপরোক্ত খাদ্যগুলো আপনার হৃৎযন্ত্রকে সচল রাখতে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা অব্যাহত রাখতে ও শরীরের সার্বিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া বেরি, আপেল, লেটুস পাতা, কাঠবাদাম, বিট মূল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সুষম ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম আপনাকে সুস্থ রাখবে দীর্ঘ বছর।
ক্রেডিট: এনটিভি