আমাদের স্বপ্নগুলি বেশ কয়েক দিন ব্যাপী বা ধীর গতিতে ঘটে বলে মনে হতে পারে। অথবা মনে হতে পারে এগুলো বাস্তব সময়ে সংঘটিত হচ্ছে।
যদিও মানুষের স্বপ্নে সময়-উপলব্ধি বিশ্লেষণ করা খুবই কঠিন একটা বিষয়, তবে লুসিড ড্রিমারদের উপর গবেষণা করার মাধ্যমে এ সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা প্রকাশ পেয়েছে। লুসিড ড্রিমার হলো তারা যারা স্বপ্ন দেখার সময় উপলব্ধি করতে পারে যে, তারা স্বপ্ন দেখছে এবং তারা তাদের স্বপ্নের বিষয়বস্তুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
এটা নিয়ে সুইজারল্যান্ড এবং জার্মানির বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণা করেছিলেন। জেগে থাকা অবস্থায় এবং প্রাকৃতিকভাবে স্বপ্ন দেখার সময় পূর্ব-নির্ধারিত কাজ সম্পাদনের জন্য নেওয়া সময়ের তুলনা করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীরা তাদের চোখ বাম-ডান বরাবর নাড়িয়ে কাজের শুরু বা শেষ ইঙ্গিত করেছিলেন।
হাঁটু গেড়ে বসার মতো মোটর টাস্কগুলি(মানে ব্রেইন থেকে সিগনাল দিলে হাত পা নড়া এই ধরণের কাজই হচ্ছে মোটর টাস্ক) জাগ্রত অবস্থার তুলনায় স্বপ্ন দেখার সময় তুলনামূলকভাবে বেশি সময় নিয়েছিল, যদিও নন-মোটর টাস্কের ক্ষেত্রে গণনা কার্যের সময় খুব সামান্য পার্থক্য পাওয়া গেছে। লেখকরা ধারণা করেছিলেন যে স্বপ্ন দেখার সময় মোটর টাস্ক যখন ঘটে তখন পেশীর প্রতিক্রিয়া না হওয়ার কারণে এটি হতে পারে। জাগ্রত হওয়ার তুলনায় স্বপ্ন দেখলে নিউরাল প্রসেসিং গতির পার্থক্যের একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছিল।
কিছু মানুষ জেগে উঠার আগের আগের মূহূর্তে কেন তাদের স্বপ্নগুলি দেখা দিয়েছে বলে আশ্চর্য হয়। একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হল আমাদের স্বপ্নগুলি স্মরণ করতে আমাদের জেগে ওঠা দরকার, যার অর্থ রাতের বেলা যা ঘটেছিল তাদের পুনরায় স্মরণ করার সম্ভাবনা খুবই কম। স্বপ্নগুলি র্যাপিড আই মুভমেন্ট ঘুমের মধ্যে সাধারণত ঘটে যা রাত বাড়ার সাথে সাথে এবং আমাদের জেগে ওঠার সময়টির দিকে আরও বিস্তৃত বিবরণ সরবরাহ করার জন্য আরও প্রচুর।
© মোহাম্মাদ হাসান রিজভী প্রান্ত
তথ্যসূত্র: BBC Science Focus Magazine