অন্ধকার থেকে হঠাৎ আলোতে গেলে চোখ ব্যথা করে কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
666 বার দেখা হয়েছে
"জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (20,390 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (20,390 পয়েন্ট)

মানুষের দৃষ্টিশক্তির বৈশিষ্ট্য হলো তার অসাধারণ দক্ষতা। সে তীব্র আলোতে যেমন দেখতে পারে, তেমনি আবার প্রায় অন্ধকারেও দেখতে পারে। এর কারণ অনেকটা স্যামসাং ফ্ল্যাগশিপ ফোনের ডুয়েল অ্যাপাচার ব্যাপারটার মত । কর্নিয়ার কেন্দ্রস্থলে মাংসপেশিযুক্ত মণি বা তারারন্ধ্র থাকে। এটি গোলাকার ছিদ্রপথ। মাংসপেশির সংকোচন ও প্রসারণে তারারন্ধ্র্রের আকার পরিবর্তিত হয়। যেটা চোখের মধ্যে কতটুকু আলো প্রবেশ করবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে । ঘুটঘুটে অন্ধকারে তারারন্ধ্র সর্বাধিক প্রসারিত এবং তীব্র আলোতে সর্বাধিক সংকুচিত হয়ে থাকে ।

image

যে সব ক্যামেরা দিনের আলোয় ভালো কাজ করে সেগুলো অন্ধকারে প্রায় অকেজো। আবার কম আলোতে ভালো কাজ করে যে সব ক্যামেরা সেগুলো প্রবল আলোতে ভালো কাজ দেয় না।
মানুষের চোখ কিন্তু আলো-অন্ধকার নির্বিশেষে কাজ করে। তবে আলো থেকে হঠাৎ অন্ধকারে গেলে প্রথমে কিছুই দেখা যায় না। মনে হয় চোখ বুঝি একেবারে অন্ধ হয়ে গেল। কয়েক মিনিট পর ধীরে ধীরে সব দৃশ্যমান হয়।

চোখ আলো অনুভব করে রড ও কোন নামক দুধরনের সেল বা অণুর সাহায্যে । কোন সেল তীব্র আলোয় রঙের অস্তিত্ব ধরতে পারে আর রড সেল স্বল্প আলোয় সাদা-কালো দৃশ্য দেখতে পায় । তা ছাড়া রড সেলে রডপসিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা ফোটন শুষে নিয়ে আলোর অস্তিত্ব উপলব্ধি করে ।

রডপসিন অণু যখন ফোটন অণু শেষণ করে তখন সে রেটিনাল ও অপসিন অণুতে বিভক্ত হয়ে যায়। এ দুটি বিভক্ত অণু পরে আবার বেশ ধীর গতিতে সম্মিলিত হয়ে রডপসিন অণুতে পরিণত হয়। তাই যখন আমরা তীব্র আলোতে দেখি তখন সবগুলো রডপসিন রেটিনাল ও অপসিনে বিভক্ত হয়ে যায়। এ অবস্থায় যদি আমরা কোনো অন্ধকার ঘরে ঢুকি তাহলে প্রথমে চোখে কিছুই দেখা যায় না, কারণ যথেষ্ট আলো না থাকলে কোন দেখতে পারে না আর রডে কোনো রডপসিন থাকে না বলে রডও অকার্যকর। তবে ধীরে ধীরে রেটিনাল ও অপসিনে বিভক্ত অণুুগুলো সম্মিলিত হয়ে আবার রডপসিনে পরিণত হতে থাকে এবং তখন আবার অন্ধকারেও দেখা সম্ভব হয়। এজন্যই অন্ধকারে অভ্যস্ত হতে চোখের কিছু সময় লাগে।

এবার আসি অন্ধকার থেকে হঠাৎ আলোতে গেলে চোখ ব্যথা করার ব্যাপারটা । আসলে ব্যাপরটা ঠিক তেমন না যখন আমরা অন্ধকার থেকে হটাৎ তীব্র আলোতে আসি তখন কর্নিয়ার কেন্দ্রস্থলে মাংসপেশিযুক্ত থাকে যেই গোলাকার ছিদ্রপথ দিয়ে আলো প্রবেশ করে সেটা ছোট হয়ে যায় । কিন্তু ছোট হওয়ার ব্যাপারটা যত দ্রুত ঘটে তার থেকে আলো প্রবেশ করে আরো দ্রুত । তখন সবগুলো রডপসিন রেটিনাল ও অপসিনে বিভক্ত হতে যতটা সময় লাগে তার আগে প্রবেশকৃত আলো রড ও কোণে হটাৎ করে পড়ে যেটা মস্তিষ্কে ব্যাথার অনুভুতি পাঠায় আর আমরা অনুভব করি । একারণেই আসলে অন্ধকার থেকে হঠাৎ আলোতে গেলে চোখ ব্যথা করি ।

এ থেকে মুক্তি উপায়

মুক্তি উপায়টা আসলে আমি দেখেছিলাম ন্যাট ডিও-র এক অনুষ্ঠানে । সেখানে যেই ট্রিকটা বলা হয় সেটা আসলেই কার্যকরি । আমি নিজে পরক্ষ করে দেখেছি । ট্রিকটা ছিল এমন, অন্ধকার থেকে তীব্র আলোতে সরাসরি আসলে প্রথমে চোঁখ বন্ধ করে আলোক উৎসের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন থাকার পর সেই উৎসের থেকে চোখ সরিয়ে ধীরে ধীরে চোখ খুললে দেখা যাবে সেই ব্যাথাটা আর অনুভুত হচ্ছে না ।

এখানে ব্যাপারটা আসলে কি হয় সেটা বলছি । যখন আমার অন্ধকার থেকে চোখ বন্ধ করে তীব্র আলোক উৎসে আসি বা তাকাই তখন আমাদের চোখের পাতা দিয়ে কিছু পরিমান আলোর আভা উপলব্ধি করতে পারে আমাদের চোখ যার ফলে তারারন্ধ্র তখনই ছোট হয়ে যায় । আর বাকি সময়টাতে চোখের ভেতরে থাকা রডপসিন রাসায়নিক রেটিনাল ও অপসিনে বিভক্ত হতে শুরু করে দেয় কেননা আমাদের মস্তিষ্ক জানে আমরা আলোতে এসেছি । তারপর যখন আমরা হুট করে চোখ খুলি তখন আমাদের চোখ সেই অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকে ফলে আর সেই ব্যাথা অনুভূত হয় না ।

 

কোরা

0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
কখনো কাউকে রক্ত দেখে মাথা ঘুরে পড়ে অজ্ঞান হতে দেখেছেন? বা কেউ লম্বা সময় লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলল? এ রকমটা আমাদের অনেকের হয়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলে ভ্যাসোভেগাল সিনকোপ বা ভ্যাসোভেগাল শক। কোনো উত্তেজক বা বিভীষিকাময় বিরূপ পরিস্থিতিতে আমাদের অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণে হঠাৎই হৃৎস্পন্দন ধীর হয়ে যায়, রক্তনালিগুলো প্রসারিত হয়ে যায়, রক্তচাপ কমে যায়। এরপরই মস্তিষ্কে ও হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ কমে গিয়ে কেউ হঠাৎ মুহূর্তের জন্য অচেতন হয়ে পড়ে। দু–এক মুহূর্ত পরই আবার তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং সে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বোধ করে। এটাই হলো ভ্যাসোভেগাল সিনকোপ।

 

সাধারণত ভ্যাসোভেগাল সিনকোপ হওয়ার জন্য কিছু পরিস্থিতি বা ট্রিগার কাজ করে, যেমন খুব গরমে দীর্ঘ সময় থাকা, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা (যেমন কিউ বা লাইনে), রক্ত বা দুর্ঘটনা দেখে হঠাৎ ভয় পাওয়া, হাসপাতালে নিজের রক্ত দেওয়ার সময় ইত্যাদি। এটা নিয়ে চি‌ন্তিত বা আতঙ্কিত হওয়ার আসলে কিছু নেই। এটা কোনো অপ্রীতিকর বা বিরূপ পরিস্থিতিতে আমাদের স্নায়ু ব্যবস্থার একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ারই রূপ।

 

ভ্যাসোভেগার সিনকোপের সময় রোগীর হঠাৎ মাথা হালকা হয়ে যায়, হাত–পা ঠান্ডা হয়ে আসে, ঘাম দেখা দেয়, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে আসে, কখনো পেট গুলিয়ে আসে বা বমি পায়। তারপরই কয়েক সেকেন্ড বা মিনিটের জন্য রোগী অচেতন হয়ে পড়ে। অচেতন হওয়ার পর রক্তপ্রবাহ খুব দ্রুতই আবার পায়ের দিক থেকে মস্তিস্কে ও হৃৎপিণ্ডে প্রবাহিত হয় ও তার জ্ঞান ফিরে আসে।

 

ভ্যাসোভেগাল সিনকোপের কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। রোগী এমনিতেই ভাল বোধ করে। তবে হঠাৎ জ্ঞান হারানো বা পড়ে যাওয়ার অন্য কোনো কারণ আছে কি না খতিয়ে দেখা উচিত। যেমন হৃদ্‌রোগ, এপিলেপসি, হাইপোগ্লাইসেমিয়া, পানি ও লবণের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। প্রয়োজনে একটা ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, রক্তের শর্করা, ইলেকট্রোলাইট বা হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা ইত্যাদি করিয়ে নেওয়া ভালো। যেমন যাঁদের এই প্রবণতা আছে, তাঁদের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা উচিত নয়। খুব গরমে অনেকক্ষণ বাইরে থাকবেন না। প্রচুর পানি পান করবেন। খারাপ লাগতে থাকলে বসে বা শুয়ে পড়বেন, যাতে রক্তপ্রবাহ শরীরের নিম্নভাগ থেকে ওপরের দিকে প্রবাহিত হয়। চেয়ারে বসে দুই হাঁটুর মধ্যে মাথা গুঁজে দিলেও ভালো লাগবে। অথবা শুয়ে পা দুটো একটু উঁচু করে (বালিশের ওপরও দেওয়া যায়) দিন। পায়ে কমপ্রেশন স্টকিং বা মোজা পরতে বলা হয় অনেক সময়। কিছু ফুট এক্সারসাইজ শিখে নিতে পারেন, যাতে রক্তনালিগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে।

 

ডা. মৌসুমি মরিয়ম সুলতানা, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 156 বার দেখা হয়েছে
27 ফেব্রুয়ারি 2022 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Rayhan Shikder (9,310 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 222 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 315 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 255 বার দেখা হয়েছে

10,743 টি প্রশ্ন

18,394 টি উত্তর

4,731 টি মন্তব্য

243,796 জন সদস্য

46 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 45 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. MIS

    930 পয়েন্ট

  2. shuvosheikh

    220 পয়েন্ট

  3. তানভীর রহমান ইমন

    160 পয়েন্ট

  4. Muhammad_Alif

    120 পয়েন্ট

  5. memo

    120 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো #ask মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি #science স্বাস্থ্য প্রাণী বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #biology বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বিড়াল কান্না
...