ICU তে মৃত ব্যক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা কি সত্যি নাকি গুজব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
1,123 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (28,310 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (28,310 পয়েন্ট)

ব্যাপারটি জানুন এবং অন্যকে জানতে সাহায্য করুন !! 
নিচের পোস্টটি অনেকে শেয়ার করতে এবং হতে দেখেছেন। অনেকে ব্যাপারটি জানেন না ভেবে আফসোস করেছেন, কিন্তু আপনি আরো আফসোস করবেন যে এই ভেবে, এটা পুরোটাই বানোয়াট একটা তথ্য। 
তবে তার আগে আমাদের জানতে হবে, কিভাবে একজন রোগীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে কাজটি করা হয়ে থাকে, এবং হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার কাজটি করে থাকেন। তিনি যা করে থাকেনঃ 
১। প্রথমে শ্বাস-প্রশ্বাস এর পরীক্ষা করেন>১ মিনিট 
২। পালস এর শনাক্তকরণ এবং হৃতপিন্ডের শব্দ ও পরীক্ষণ>১মিনিট 
৩। পালপিটেররি রেসপন্স দেখা এবং কোন ব্যথার প্রতি মোটর সংবেদনশীলতা পরীক্ষা। এক্ষেত্রে ৫ মিনিট CPR দেওয়ার পর চোখের মণির অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং ব্যথার প্রতি সংবেদনশীলতা পর্যবেক্ষণ। 
৪। পেশেন্টের বাহ্যিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ, দেহের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ 

যদি পয়েন্ট ১,২,৩ এর পর্যবেক্ষণ যদি  নেগেটিভ এবং ৪ নাম্বার পয়েন্ট এর পর্যবেক্ষণ যদি ঠান্ডা এবং শক্ত হয় ( এটা অনেকটা সময়ের উপর ডিপেন্ড করে থাকে) তবে ডাক্তার রোগীকে মৃত ঘোষণা করে থাকেন। আর ICU এর মত অবস্থা, যেখানে রোগীর অবস্থা থাকে খুবই নাজুক সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা তো আরো কঠিন। সেক্ষেত্রে ডাক্তাররা আরো সময় নিয়ে বেশ কিছু প্রণালির মাধ্যমে কোন রোগীকে মৃত ঘোষণা করে থাকেন। 
এখন কথা হলে ICU কে নিয়ে, কাদের দরকার এই ইউনিট ? 
-আইসিইউ, আইটিইউ, নিকু, পিকু এই শব্দগুলো শুনলে বা কাছের মানুষকে এই সব ঘরে থাকতে হলে অজানা আতঙ্ক গ্রাস করে। যদিও এই জীবনদায়ী ব্যবস্থা সবরকমভাবেই রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করে। রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলে ইনটেনসিভ কেয়ারে সবরকমের সাপোর্ট দিয়ে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাই এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য। হার্ট অ্যাটাক, ব্রেন স্ট্রোক, নিউমোনিয়া, সিওপিডি ও অ্যাজমার কারনে সাংঘাতিক শ্বাসকষ্ট, দুর্ঘটনায় চোট আঘাত, ভয়ানক ভাবে পুড়ে যাওয়া, বিষাক্ত সাপের কামড় ইত্যাদি কারণ রয়েছে। এ ছাড়াও ওষুধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ওষুধে অ্যালার্জির জন্য শ্বাসনালী ফুলে গিয়ে শ্বাসকষ্ট, অন্যান্য কোনও গুরুতর অসুখের কারণে শ্বাসকষ্ট, শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে, হার্ট, কিডনি, ফুসফুস, লিভার-সহ কোনও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কাজ সাময়িক ভাবে বিপর্যস্ত হলেওরোগীকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। অনেক সময় রোগীর অবস্থা খুব ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও হার্টের বাইপাস সার্জারি, অরগ্যান ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট সহ যে কোনও মেজর সার্জারির পর চটজলদি বিপদের মোকাবিলার জন্যে রোগীকে আইসিইউতে রাখা হয়। 
এখন এই গুজবের উতপত্তি কোথায় ? কোন এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। পরবর্তীতে এই পোস্ট বিভিন্ন রূপে এবং অবস্থায় শেয়ার হয়েছে। কিন্তু এর কোন মেডিকেলিয় ভিত্তি নাই। কেন সে কথায় আসছিঃ 

১। মানুষ শ্বাস নেয় ডায়াফ্রাম এবং অন্যান্য পেশির প্রসারণ এবং সংকোচন এর মাধ্যমে। একজন মানুষ মৃত, তার পেশিগুলি সময়ের সাথে সাথে দৃড় হতে থাকবে। একই সাথে মাংসপেশীতে রক্ত সরবারহ থেমে যাবে, থেমে যাবে স্নায়ুর সংযোগ। এর পরেও কিছু ঘটনায় হাত পায়ের পেশিতে সংকোচন প্রসারণ দেখা যায় যাকে রিগোর মর্টিস বলে । 
২। এখন শ্বাস প্রশ্বাসের সময় বুকের যে ওঠানামা এটা এর ভেতরে প্রেসার চেঞ্জ তৈরি করে থাকে। আমার বুক ফুলে ওঠা বা চুপসে যাওয়া সব হল সেই অঞ্চলের পেশির কাজের ফল। এখন মৃত ব্যক্তির দৃড় পেশিকে নাড়িয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের আবহ তৈরি করবেন কি করে ? সম্ভব না। 
 
৩। আবার এখানে বাম বগলে গরুর সিরিঞ্জ দিয়ে ফুটো করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এভাবে তো শ্বাস প্রশ্বাস কে ডিপ ফেক করা অসম্ভব। এখন কেউ প্রশ্ন করে, যে, বাতাস ঢুকিয়ে করতে পারে, সেক্ষেত্রে যুক্তি হল, আচ্ছা সেটা যদি করেও থাকে, তাহলে তো বাম অঞ্চল এর মুভমেন্ট হবে...কিন্তু ডান অঞ্চলের (কারণ বুকের খাচা মুভমেন্ট করতে পারে) ? আবার বুকএর ভেতর তো খালি না, ওখানে একটা ফুসফুস আছে। এই বিশাল প্রসেস এর জন্য আলাদা করে একটা যন্ত্র ডিজাইন করা লাগবে, যেটা আবার প্রত্যেক রোগীর জন্য করতে হবে ( ফেক শ্বাস-প্রশ্বাস শুধু একজনের লাগবে নাকি? ) বিশাল খরচের ব্যাপার। এটা জীবনেও কেউ করবে না। 
 সুতরাং একটা সিরিঞ্জ পুশ করেই যে রেস্পিরেশন ডিপ ফেইক করা যাবে, এটা শুনতেই আজিব লাগে। 
আইসিইউ তে রাখা মানেই কৃত্রিম ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস ও সার্কুলেশন মেইনটেইন করা। তাই রুগীর ব্রেইন ডেথ হলেও অনেক সময় বাইরে থেকে বোঝা যায় না যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে, কর্তব্যরত ডাক্তার কিংবা নার্স বলতে পারবেন। এই কাজ টুকু যদি একটা সিরিঞ্জ দিয়ে করা যেত তবে এত দামী দামী মেশিন কি প্রদর্শনীর জন্য বানানো?   
অনেক মেডিকেল কারণে (প্লুরাতে যদি তরল পদার্থ জমে) ফুসফুসীয় অঞ্চলে ছোট একটি ছিদ্র করা হয়, যাতে সিরিঞ্জের মাধ্যমে এই জমে থাকা পদার্থগুলি বের করা যায়। কিন্তু সেই সিরিঞ্জের সাইজ হল খুবই ছোট, আর ছিদ্র আরো ছোট এবং করা হয় বগল এবং পিঠের মাঝামাঝি এরিয়াতে। 
বেশি বিশ্বাস না হলে সরকারি হাসপাতালের ICU তে ঘুরে আসতে পারেন । 
 অনেক হতভাগা লোকজন রোগীর চাপে ICU তে সিট পাচ্ছেন না। এমন একটা সময়ে, এই গুজব ছড়িয়ে, জনমনে আতংক সৃষ্টির সুযোগ চলছে। 
- ঝিভু দত্ত

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 281 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 636 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
4 টি উত্তর 338 বার দেখা হয়েছে
27 ডিসেম্বর 2021 "জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Rishad Ud Doula (5,760 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
5 টি উত্তর 3,710 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 286 বার দেখা হয়েছে

10,719 টি প্রশ্ন

18,361 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

239,780 জন সদস্য

21 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 21 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  3. almoyaj_k

    130 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...