এই প্রশ্নটা জীবনে একবার না একবার হলেও আমাদের সবার মাথায় এসেছে। আমরা হয়তোবা হাসাহাসি করে উড়িয়ে দিয়েছি ব্যাপারটা। কিন্তু আসলেই কি হবে?
দেখা যাক কি হয়...আমরা তাহলে শুরু করতে পারি।
প্রথমত,কয়েকটা ব্যাপার আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। যেমন প্রত্যেকটা মৌল কতটুকু পরিমাণ আমরা একসাথে মেশাচ্ছি। যদি প্রতিটা মৌলের একটা করে পরমাণু মেশাই, সব মিলিয়ে যা হবে তা চোখেই দেখা যাবেনা, সেখানে বিক্রিয়া হোক বা না হোক। তাহলে তো আসলে লাভ নাই।
আচ্ছা তাহলে আমরা পরিমাণটা একটু বেশী নেবো। ধরি এক চা চামচ। এবার কয়েকটা বিষয় খেয়াল করতে হবে। আমরা কোনটা আগে কোনটা পরে ঢালবো? এখন আবার অনেকে বলবেন যে আচ্ছা এমন একটা মেশিন দিয়ে ঢালবো, যাতে সবগুলো সমান সময়ে পড়ে। হ্যাঁ, ভাই মানলাম কথা। কিন্তু এখানে আবার আরেকটা সমস্যা আছে। সবগুলো সমান সময়ে ঢালার পরও দেখতে হবে যে কোনটার সংস্পর্শে কোনটা আসছে।যেমন 'ক' একটা মৌল, তাহলে তার সংস্পর্শে আসার জন্য আরোও ১১৭ টা মৌলের সম্ভাবনা আছে। এভাবে সব মৌলের বিন্যাস ঘটাতে গেলে অনেক কেইস পাওয়া সম্ভব। আচ্ছা থাক তাহলে এভাবে সবগুলোকে একসাথে ঢালাটাও বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা। আমরা যেহেতু কম সংখ্যক ফলাফলই চাচ্ছি।
আবার আমাদের দেখতে হবে যে কোন তাপমাত্রা বা চাপে আমরা এগুলোকে মেশাবো। ভেজাল না করে ধরি আমাদের রুম টেম্পারেচারে আমরা সব এক্সপেরিমেন্ট করবো।
এবার তাহলে আমরা একটা নির্দিষ্ট সিকুয়েন্সে মেশাতে থাকবো। যেমন একটা একটা গ্রুপ বা পর্যায় করে মেশাবো, তারপর সবগুলোকে একসাথে মেশাবো।
এখন কথা হলো যে একটা একটা গ্রুপ অনুযায়ী মেশাবো, নাকি একটা একটা পর্যায় অনুযায়ী মেশাবো? একটা গ্রুপের সব মৌলই তো প্রায় সেইম বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম প্রকাশ করে, তাহলে এদের মিশিয়ে তো লাভ নাই। আমরা বাংগালী , আমরা চাই কিছু বিস্ফোরণ টাইপের ব্যাপার ঘটুক। তাহলে আমরা একটা একটা পর্যায় করে মেশাবো প্রথমে, তারপর সবগুলোকে একসাথে করবো।
তো শুরু করি।
প্রথম পর্যায়ে আছে Hydrogen আর Helium. এর মধ্যে helium নিষ্ক্রিয় গ্যাস, আর হাইড্রোজেন থাকে অণু আকারে। তো এগুলো উড়ে যাওয়া ছাড়া তেমন কিছুই হবেনা।
দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে, Lithium,Beryllium,Boron,Carbon,Nitrogen,Oxygen,Fluorine আর Neon.
এখানে একটু সতর্ক হতে হবে আমাদের। কারণ ফ্লোরিন গ্যাস নিঃশ্বাসের সাথে গেলে মারাত্মক ক্ষতি হবে, আর বেরিলিয়াম কিছুটা টক্সিক। এখানে কিছু পরিমাণ CO, CO2, LiF, BaF2 তৈরি হবে। আর কিছু N2 ও O2 গ্যাস উড়ে যাবে। যদি এদের মিক্সচার আমরা আগের পর্যায়ের সাথে মিশিয়ে দেই, তাহলে কিছুটা পানিও পেয়ে যেতে পারি। অবশ্য এখনও আমরা সেইফ। কোনো বিস্ফোরণ টাইপের কিছু ঘটে নি এখনো।
এবার আসি তৃতীয় পর্যায়ে।
তৃতীয় পর্যায়ে আছে sodium, magnesium, aluminium, silicon, phosphorous ,Sulphur, Chlorine এবং Argon.
এই পর্যায়ে সাবধান না থাকলে আপনি পুড়ে যেতে পারেন।
এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি করবে ফসফরাস। ফসফরাস অনেক টাইপের থাকে, যেমন রেড ফসফরাস, হোয়াইট ফসফরাস। হোয়াইট ফসফরাস আগুনের সাথে বিক্রিয়া করে জ্বলে উঠে। আর সালফার অনেকটা দুর্গন্ধযুক্ত। সালফারের সাথে Cl বা F বিক্রিয়া করলে হিউজ তাপ উৎপন্ন হবে যা আমরা যেখানে বিক্রিয়া করাচ্ছি সে জায়গাটা পুড়িয়ে দিতে পারে। আর সোডিয়াম যদি পূর্বে তৈরিকৃত পানির সংস্পর্শে আসতে পারে, তাহলে মোটামুটি বিস্ফোরণ হবে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস আর্গন বাতাসের চেয়ে কিছুটা ভারি। তাই এটা আগের মতো উড়ে না গিয়ে ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে।
Move on to period 4
এই পর্যায় আপনাকে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে মেরে ফেলতে সক্ষম।
এখানে পটাশিয়াম থেকে ক্রিপ্টন পর্যন্ত মৌলগুলো আছে। যেহেতু অনেক মৌল, তাই অনেক ঘটনা ঘটতে পারে। কয়েকটা বলি।
এখানের আর্সেনিক আগের অক্সিজেনের বা ফসফরাসের সাথে বিক্রিয়া করে টক্সিক যৌগ তৈরি করবে, বার্নিং সেলেনিয়াম সালফারের সাথে মিশে এর দুর্গন্ধকে দূর করে দিতে পারে। যদি অ্যালুমিনিয়াম আগুনের সংস্পর্শে আসে, তাহলে এর নিচে থাকা গলিত গ্যালিয়াম একে শোষণ করে
ভেজা কাগজের মতো সফট করে দেবে। যেহেতু অনেক তাপের উৎপন্ন হবে, তাই আগের পর্যায়ের গ্যাসগুলো উড়ে যাবে, আর কিছু সংকর তৈরি হবে। মোটকথা অনেক বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হবে।
Next period 5
এই পর্যায়ে আপনি একটু একটু রেডিয়েশনের স্বাদ পেতে থাকবেন।
এখানে 37-54 (রুবিডিয়াম-জেনন) পর্যন্ত মৌলগুলো আছে।
এবার আসবে মজা। এই পর্যায়ের হিরো হলো টেকনেশিয়াম-99, সিরিয়ালি প্রথম তেজস্ক্রিয় মৌল যার কোনো স্ট্যাবল আইসোটোপ নাই। তবে এটা খুব বেশী যে ইমপ্যাক্ট ফেলবে তেমনটা নয়, যদি এর তৈরি একটা টুপি সারাদিন পড়েন, বা এর গন্ধ নিতে থাকেন, তাহলে এটা হয়তোবা আপনাকে মেরে ফেলতে পারে। এছাড়া এই গ্রুপে তেমন স্পেশাল কিছুই নাই। অনেকটা চতুর্থ পর্যায়ের মতোই। কিছু সংকর তৈরি হবে বিক্রিয়া করে।
Will you move on to sixth row?
এই পর্যায় ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটাবে তেজস্ক্রিয়তার সাথে।
এখানে ৫৫-৮৬ (সিজিয়াম-রেডন) পর্যন্ত মৌল আছে, ল্যান্থানাইড সারণি সহ। এখানের বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় মৌলগুলো হলো promethium, polonium, astatine, radon সহ আরোও কিছু।
এখানের Astatine মৌলে কিছু বিশেষত্ব আছে। Astatine দেখতে আসলে কেমন সেটা আমরা এখনো জানিনা, কারণ এটা এতটাই তেজস্ক্রিয় যে কিছু পরিমাণ রাখলে এটা নিজেই খুব দ্রুত নিজের তাপে নিজে পুড়ে যাবে। কেমিস্টরা মনে করেন যে এটার কালো সার্ফেস থাকতে পারে, তবে এখনো এটা কেউ জানে না। কিছু কিছু মৌল হয়তো তেজস্ক্রিয়তার কারণে অন্য মৌলে রুপান্তরিত হতে পারে, তবে যদি ভাবেন স্বর্ণ পেয়ে যেতে পারেন, সেই আশা ভুল। মোটামুটি সাম আপ করলে বলা যায় তেজস্ক্রিয়তার কারণে ল্যাবের ও আপনার মারাত্নক অবস্থা হতে পারে, বা বড়সড় বিস্ফোরণ হতে পারে।
The last period.....sounds terrific, will you continue, Or not going through it?
এই পর্যায়ে ফলাফলের চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়ে আগে গরীব হওয়ার প্ল্যান করুন, কারণ এগুলো কেনার মতো সামর্থ্য অনেক ধনীদেরও নাই, আর এগুলো পাওয়াও যায় না।
এই পর্যায়ে আছে francium থেকে Oganesson পর্যন্ত মৌলগুলো, অর্থাৎ 97-118 পর্যন্ত মৌলগুলো।
এখানের প্রায় সব মৌলগুলোই তেজস্ক্রিয়। আর বেশিরভাগের হাফ লাইফ খুব কম থাকে। আর খুব রেয়ার টাইপের মৌলগুলো থাকে, যেমন ধারণা করা হয় পৃথিবীতে Francium মাত্র ৩০০-৫০০ গ্রামের মতো আছে। আবার Livermorium (element 116) এর ১০০,০০০ টা পরমাণু যদি আপনি কালেক্ট করেন, তাহলে ১ সেকেন্ড পর আপনার মাত্র ১ টা পরমাণু বাকি থাকবে। যদি খুব কম পরিমাণে নেওয়া হয় সবগুলো, তাহলে তেমন কিছু হবেনা। তবে বেশী পরিমাণ নিলে চেইন রিয়েকশনের মতো (এক্সাক্টলি চেইন রিয়েকশন না) কিছু বড়সড় নিউক্লিয়ার বোমার মতো বিস্ফোরিত হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় এই ধরণের বিক্রিয়া করাটা অনেক ব্যয়বহুল হবে, আর অবশ্যই অনেক অপচয়ের হবে। এই অর্থ দিয়ে সায়েন্টিফ আলাদা প্রজেক্টের কাজ করলে বরং তা কাজে আসবে।
Written by %Ihef_Racekr
Source:
https://www.quora.com/What-will-happen-if-I-mix-all-the-elements-of-the-Periodic-Table-a-spoon-of-every-element-in-its-liquid-state
(বি.দ্র. কোরা যদিও তেমন ভেরিফাইড সাইট না, তাও সেখান থেকে বেস্ট আনসারগুলোকে ইন্ট্রিগেট করার চেষ্টা করেছি)
Book:-What if by RANDALL MUNROE.
https://education.jlab.org/qa/combineelements_01.html#:~:text=Non%2Dreactive%20elements%20like%20helium,be%20sitting%20around%20as%20elements.
কোন পর্যায়টা আপনার ভালো লেগেছে তা জানাতে কিন্তু ভুলবেন না।
(ভুল ত্রুটি মার্জনীয়)