জেব্রার শরীরে ডোরাকাটা দাগ থাকে কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
1,105 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

সাদাকালো ডোরাকাটা দাগ বিশিষ্ট জেব্রা প্রাণীজগতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু একটা প্রশ্ন আপনার মনে জাগতেই পারে, জেব্রার শরীরের দাগগুলো কি আসলে সাদার উপরে কালো, নাকি কালোর উপরে সাদা?

অন্তত মধ্যযুগ থেকেই মানুষ বিশ্বাস করত, জেব্রা মূলত সাদা বর্ণের প্রাণী, যাদের ডোরাগুলো কালো বর্ণের। তাদের এ ধরনের বিশ্বাস অবশ্য কোনো গবেষণার ফলাফল ছিল না। জেব্রার পেটের নিচের দিকটা সাদা রংয়ের হওয়ার কারণেই এ ধরনের বিশ্বাস গড়ে ওঠে। তবে সম্প্রতি কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল থেকে এ ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, জেব্রা মূলত কালো বর্ণের প্রাণী, আর সাদা রংটিই তাদের ডোরার রং।

বিজ্ঞানীদের মতে, ভ্রূণ অবস্থায় জেব্রার চামড়ার রং কালো থাকে। এরপর ধীরে ধীরে চামড়ার নিচে অবস্থিত কোষগুলো থেকে নিঃসৃত রঞ্জক পদার্থের প্রভাবে পশমগুলোর মধ্যে ডোরাবিশিষ্ট সাদা রংয়ের আবির্ভাব ঘটে। বিজ্ঞানীরা এখনও এই ডোরার প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার গাণিতিক মডেল ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তবে তারা নিশ্চিত, ভ্রুণ অবস্থার শেষ পর্যায়ে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পূর্ণবয়স্ক জেব্রারও পশমের নিচে যে মূল চামড়া, তার রং ডোরাকাটা নয়, বরং সম্পূর্ণ কালো।

জেব্রার ডোরাকাটা দাগ সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে তারা যে এলাকায় বসবাস করে, সে এলাকার তাপমাত্রার উপর। লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ব্রেন্ডা ল্যারিসন এবং তার দল ন্যাশনার জিওগ্রাফিক সোসাইটি’জ কমিটি ফর রিসার্চ অ্যান্ড এক্সপ্লোরেশনের অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণা প্রকল্পের আওতায় আফ্রিকার ১৬টি জেব্রাপ্রধান এলাকায় ভ্রমণ করেন এবং তাদের ডোরার বিভিন্ন ধরন নিয়ে গবেষণা করেন এবং লক্ষ্য করেন, অন্য সব কিছুর চেয়ে জেবরার ডোরা এলাকার তাপমাত্রার উপর বেশি নির্ভরশীল।

গবেষণা দলটি মোট ২৯টি বিষয় বিবেচনা করে। এর মধ্যে ছিল মাটির আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, রোগবহনকারী কীটপতঙ্গের উপস্থিতির পরিমাণ, সিংহ সহ শত্রু প্রাণীর উপস্থিতির পরিমাণ প্রভৃতি। এসব তথ্য কম্পিউটারে বিশ্লেষণ করার পর তারা দেখতে পান, অন্য সবগুলো নির্দেশকের তুলনায় কোনো এলাকার গড় তাপমাত্রাই জেব্রার ডোরাকাটা দাগের নকশার উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করছে। গবেষণা দলটি এরপর তাদের লব্ধ জ্ঞানের সাহায্যে তাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না এরকম কিছু এলাকার তাপমাত্রার ইতিহাস থেকে সেই এলাকার জেব্রার ডোরাকাটা দাগ কীরকম ঘন এবং গাঢ় হবে, তা অনুমান করার চেষ্টা করেন। ল্যারিসনের মতে, তারা প্রমাণ করতে পেরেছেন, তারা উল্লেখযোগ্য নির্ভুলতার সাথে জেব্রার ডোরা অনুমান করতে সক্ষম।

কালো রং তাপ বেশি শোষণ করার কারণে বেশি উত্তপ্ত হয়। সে কারণে উচ্চ তাপমাত্রা বিশিষ্ট এলাকায় জেব্রার শরীরে ঘন ডোরা দেখতে পাওয়া যায়। ল্যারিসনের বক্তব্য অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অন্যান্য এক রং বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণীর চেয়ে ঘন ডোরা বিশিষ্ট জেব্রার শরীরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস কম থাকে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও উচ্চ তাপমাত্রা বিশিষ্ট এলাকায় মশা-মাছি সহ বিভিন্ন আক্রমণাত্মক কীটপতঙ্গ বেশি হয় বলে, তাদের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্যও সেসব এলাকায় ঘন ডোরা বিশিষ্ট জেব্রা বেশি দেখা যেতে পারে বলেও অনুমান করা হয়।

লেখক : Mozammel Hossain

0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
জেব্রাদের ডোরাকাটা দাগ নিয়ে আরো মজার কথা হলো- জেব্রাদের গায়ের রঙ আসলে কোনটা? বলেন- জেব্রাদের গায়ের রং হলো সাদা। সাদার উপর আছে কালো ডোরা। আবার কেউ বলে, না, ওদের গায়ের রং কালো। কালোর উপর সাদা ডোরা। এই নিয়ে ঢের বিতর্ক। মরগী আগে না ডিম আগে সেরকম কিছুটা।

জেব্রা হলো ঘোড়া জাতীয় প্রাণী। অর্থাৎ জেব্রাও এক বিশেষ জাতের ঘোড়া। তবে সত্যিকার ঘোড়াদের সাথে তাদের আকৃতিগত একটু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য আছে। জেব্রাদের গায়ে আছে ডোরাকাটা দাগ, যা ঘোড়াদের নেই। ওদের গোটা শরীরটা লম্বা লম্বা কালো আর সাদা ফিতা দিয়ে যেনো মোড়ানো।

আরো মজার ব্যাপার হলো- প্রত্যেক জেব্রার গায়ে ডোরাকাটা থাকলেও একটি জেব্রার গায়ের ডোরার সাথে অন্যটির ডোরার কোনো মিলে না। মানুষের হাতের আঙ্গুলের ছাপ যেমন কখনো একজনের সাথে আরেক জনের মিল থাকে ন। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের প্রত্যেকের হাতের আঙ্গুলের ছাপ আলাদা, জেবন্দাদের গায়ের ডোরার বেলাতেও কথাটি তেমনি খাটে। কখনো এমন দুটো জেব্রা পাওয়া যাবে না, যাদের গায়ের ডোরার গঠন এক রকম।

জেব্রাদের গায়ে এমন বিচিত্র ডোরাকাটা থাকে কেন? এটিও একটি বিতর্কিত প্রশ্ন। কেউ বলেন, হিংস্র প্রাণীদের হাত থেকে আত্মগোপন করার জন্যই এদের শরীরে আছে এমন বিচিত্র ডোরা।

 

ওরা বাস করে আফ্রিকার তৃণভূমি অঞ্চলে। শরীরে ডোরাকাটা থাকার কারণেই একটি জেব্রা যখন ঘাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে, তখন দূর থেকে কিছু বোঝা যায় না। ওদের গায়ের ডোরা মিশে যায় ঘাসের রঙের সাথে। তাই দুর থেকে কোনো হিংস্র বাঘ বা সিংহ বুঝতেই পারে না ওখানে কোনো শিকার আছে। তাই জেব্রা গায়ের বিচিত্র ডোরাই ওদের আত্মরক্ষায় সাহায্য করে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+8 টি ভোট
1 উত্তর 249 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
1 উত্তর 405 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 1,247 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 200 বার দেখা হয়েছে
16 অক্টোবর 2021 "প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Anupom (15,280 পয়েন্ট)
+10 টি ভোট
1 উত্তর 378 বার দেখা হয়েছে
13 অগাস্ট 2020 "প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৩ (25,790 পয়েন্ট)

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,677 জন সদস্য

50 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 49 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...