লোহা শুকনা, পানি ভেজা, এসব প্রকৃতির স্বাভাবিক ঘটনা বলে আমরা জানি। সুতরাং এর কারণ খোঁজার বিষয়টি আমরা সাধারণত ভাবি না। পানি তো ভেজা হবেই। আমি পুকুরে ডুব দিলে আমার গায়ে পানি লেগে থাকে। শরীর ভিজে যায়। পানি আর ভেজা এই শব্দ দুটি সমার্থক বলে মনে হয়। কিন্তু আসলে তা নয়।
যেমন, এক গ্লাস পানিতে মোমবাতি ডোবালে সেটি কিন্তু ভিজবে না। তার মানে পানি সব সময় সবকিছু ভেজাতে পারে না। পানির অণুগুলো যদি কোনো পদার্থের অণু দ্বারা আকৃষ্ট হয় তাহলেই তা ওই পদার্থে লেগে থাকবে, অর্থাৎ ভিজিয়ে দেবে।
গায়ের চামড়া যদি পানির অণুকে আকর্ষণ না করত, তাহলে পানিতে আমাদের শরীর ভিজত না। পানির অণুগুলো এক একটা ছোট চুম্বকের মতো, ওরা একে–অপরকে আকর্ষণ করে মিশে থাকে। পানির হাইড্রোজেন বন্ডের মাধ্যমে এই আকর্ষণ শক্তি কাজ করে। অন্য কোনো পদার্থের মধ্যে যদি এরকম হাইড্রোজেন বন্ড থাকে, তাহলে তার সঙ্গে পানি মিশে যাবে এবং ভিজিয়ে দেবে। আমাদের গায়ের চামড়ার প্রোটিন, কাঠ, কাগজ, তুলা, কাপড় ও অন্যান্য জৈব পদার্থে এ ধরনের অণু থাকে। তাই ওগুলো পানির সংস্পর্শে এলে ভিজে যায়। কিন্তু মোম বা তেলতেলে পদার্থ পানিকে আকর্ষণ করে না, তাই ওগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে পানি ভেজা নয়, শুকনা!
[লেখক : আব্দুল কাইয়ুম, প্রথম আলো]