মাইগ্রেন বা মাথাব্যাথা কী এবং কেন হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+17 টি ভোট
3,787 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (71,130 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন

5 উত্তর

+4 টি ভোট
করেছেন (123,400 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর
Rabeya Bristy-

মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক এবং প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।

* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।

* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।

* কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।

* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।

* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।

* মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।

মাইগ্রেন কেন হয় তা পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এটি বংশগত বা অজ্ঞাত কোনো কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়। নারীদের ঋতুস্রাবের সময় মাথাব্যথা বাড়ে। চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা, দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে বাড়িয়ে দেয়।

দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। কারণ খালি পেটে থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয়, যা মাইগ্রেনের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে পেট যাতে খালি না থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

* অতিরিক্ত মাত্রার মিষ্টি খাবার রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে থাকে। তখন সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরে অতিরিক্ত ইনসুলিনের ক্ষরণ হতে থাকে। এর ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা ফের নামতে শুরু করে। এই তারতম্যের ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে যায়। তাই এই রোগীদের মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে হবে সাবধানতার সঙ্গে।

* অতিরিক্ত রোদে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরির ফলে অনেক সময় মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাছাড়াও অস্বাভাবিক গরম, অতিরিক্ত আর্দ্রতা বা তাপমাত্রার তারতম্যে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে। এগুলো মনে রেখেই আপনাকে অগ্রসর হতে হবে।

* অতিরিক্ত আওয়াজ বা হাই ভলিউমে গান শোনার কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কম ভলিউমে শোনার চেষ্টা করুন।

* একাধিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, যারা নিয়মিত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় (যেমন কফি) খেতে অভ্যস্ত তারা হঠাৎ করে সেই অভ্যাস ছেড়ে দিলে মাইগ্রেন মাথাচাড়া দিতে পারে। তবে আস্তে আস্তে ছাড়ার অভ্যাস করুন।

* যারা একটানা দীর্ঘক্ষণ অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করেন বা যাদের কাজের চাপে ঘুম ও খাওয়া-দাওয়ার নির্দিষ্ট সময় থাকে না, তাদের মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এক্ষেত্রে সবকিছুর একটা রুটিন তৈরি করে নিন।

* যারা নিয়মিত মোটামুটি ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা করে ঘুমান, তারা যদি হঠাৎ করে একদিন ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটান, সে ক্ষেত্রে তাদের মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই সব সময় একই নিয়ম ফলো করা উচিত।
+5 টি ভোট
করেছেন (71,130 পয়েন্ট)

মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যেকোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অনেক সময় পুরো মাথায় ব্যথা করে। এতে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। মাথাব্যথার সঙ্গে বমি এবং বমি বমি ভাব রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম হতে পারে।
রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় অন্য সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাইগ্রেন একধরনের প্রাইমারি হেডেক, যা নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। চিকিৎসকের অধীনে এবং নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা উচিত। মাইগ্রেনের ব্যথা চোখের কোনো সমস্যার জন্য হয় না।

# কেন এবং কাদের বেশি হয়?:-
মাইগ্রেন কেন হয় তা পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এটি বংশগত বা অজ্ঞাত কোনো কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়। নারীদের ঋতুস্রাবের সময় মাথাব্যথা বাড়ে। চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা, দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে বাড়িয়ে দেয়।

# লক্ষণঃ-
মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথাব্যথা, বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথাব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে | চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। শব্দ ও আলো ভালো লাগে না। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ ও আলোয় ব্যথা বেড়ে যেতে পারে|

# মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাওয়ার কিছু উপায়ঃ-
* মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক এবং প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।
* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
* কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।
* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
* মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।

তথ্যসূত্রঃ- গুগল

+4 টি ভোট
করেছেন (123,400 পয়েন্ট)

M M Hossain Raghib- 

মাথাব্যথার ধরন বুঝে নির্ণয় করা সম্ভব কেন ও কী কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। খুব পরিচিত দুটি কারণ হলো মাইগ্রেন আর টেনশন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই টেনশন টাইপ হেডেক। ১১ শতাংশের জন্য দায়ী মাইগ্রেন। ধূমপান, মদ্যপান, মাদকাসক্তি, অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন, রোদ বা অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া, অতিরিক্ত শারীরিক-মানসিক পরিশ্রম, ক্ষুধার্ত থাকা, মানসিক চাপ ইত্যাদি মাথাব্যথার কারণ। কাজেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সবার আগে এসব অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।

মাইগ্রেন

নারীরাই মাইগ্রেনে বেশি ভোগেন। সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয়। স্থায়ী হয় ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত। মাইগ্রেনে মাথাব্যথার লক্ষণগুলো হলো:

• মাথার যেকোনো একপাশে ব্যথা হয়। একবার একপাশে ব্যথা হলে পরের বার অন্য পাশেও ব্যথা হতে পারে।

• চার ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যথা স্থায়ী হতে পারে।

• মাথার দুই পাশের রক্তনালি বা রগ টনটন করছে বলে মনে হওয়া।

• ব্যথার তীব্রতায় কোনো কাজই ঠিকভাবে করা যায় না।

• আলো বা শব্দে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়।

• ব্যথার সঙ্গে বমিভাব বা বমি হতে পারে।

• ব্যথা শুরুর আগে চোখের সামনে আলোর নাচানাচি, আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

• অন্ধকারে শুয়ে থাকলে ব্যথার তীব্রতা কমে।

টেনশন টাইপ হেডেক

মাথার মাংসপেশির সংকোচনের কারণে এ মাথাব্যথা হয়। এ ধরনের ব্যথার উপসর্গগুলো হলো:

• মাথাজুড়ে ব্যথা হয়।

• মাথা চেপে ধরে আছে—এমন অনুভূতি হওয়া।

• মাইগ্রেনের মতো ততটা তীব্র ব্যথা হয় না।

• এ ধরনের মাথাব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

• দুশ্চিন্তা, পারিবারিক বা পেশাগত কিংবা মানসিক চাপের সঙ্গে এই ব্যথার সম্পর্ক আছে।

কী করবেন

মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল ইত্যাদি সেবন করা যেতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে অবশ্যই পেপটিক আলসাররোধী ওষুধ খেতে হবে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ সমস্যাকে বলে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক। তাই খুব প্রয়োজন না হলে ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘমেয়াদি কিছু ওষুধ সেবনে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

© সময় + qoura

0 টি ভোট
করেছেন (43,930 পয়েন্ট)
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যেকোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অনেক সময় পুরো মাথায় ব্যথা করে। এতে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়।
0 টি ভোট
করেছেন (9,280 পয়েন্ট)


মাইগ্রেন: কারণ ও প্রতিকার


দৈনিক ইনকিলাব,
প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মাইগ্রেন হলে তীব্র মাথাব্যথা হয় যা সাধারনত মাথার একদিকে বা পিছনের দিকে অনুভূত হয়। তবে চোখের চারপাশে হতে পারে। সাধারণভাবে এটিকে আমরা আধকপালি মাথা ব্যথাও বলি।
মেয়েদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা দেয়, তবে পুরুষেরও হতে পারে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সে এ রোগ শুরু হয়। মাইগ্রেন মাথা ব্যথা হলে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। এটি একদিকে শুরু হয়ে সারা মাথা ছড়িয়ে পড়ে। নারী ও পুরুষের এই অনুপাত ৫:১।
মাইগ্রেন কী? : মাইগ্রেন হলো এক বিশেষ ধরনের অসহণীর মাথাব্যথা। এটি গ্রীক শব্দ ‘হেমোক্রেনিয়া’ হতে এসেছে যার অর্থ অর্ধ মাথার খুলি বা করোটি। এটি অর্ধ মাথার হয় বলে বিখ্যাত। শুরু হয় অর্ধমাথা এরপরে সারা মাথা ছড়িয়ে পড়ে। এতে মাথায় স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মাথার বহিরাবরণে যে ধমনি গুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। যাদেরা মাইগ্রেন হওয়ার প্রবনতা বেশি তাদের শব্দ, আলো ও গন্ধ সবই অসহ্য লাগে । মাথাব্যথার সাথে বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে। কখনো কখনো চোখে ঝাপসাও দেখা যায়।
কেন ও কাদের বেশি হয়? : মাথার ভিতরে রক্ত চলাচলের তারতম্যের কারনে মাইগ্রেন মাথা ব্যথা হয়। রক্ত চলাচল কমে গেলে চোখে অন্ধকার দেখায় তারপর হঠাৎ রক্ত চলাচল বেড়ে গেলে প্রচন্ড মাথা ব্যথা অনুভূত হয়। মাইগ্রেন কেন হয় তা এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি । অনেক কারণেই মাইগ্রেন হতে পারে। যেমন: বংশগত বা জেনেটিক, অস্থিরতা বা দুশ্চিন্তা, পরিবেশের প্রভাব, জন্মনিয়ন্ত্রন ঔষধ ও হরমোন। এছাড়াও আরো কিছু কারণেও হতে পারে। যেমন- মদ্যপান, ধুমপান। পনির, চকোলেট, কফি, কোমলপানীয়, প্রচন্ড শীত, অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত আলোতে কাজ করা, বেশী সময় কম্পিউটার মনিটর ও টিভির সামনে থাকা, মাসিকের সময়, হঠাৎ বিপজ্জনক খবর বা আবেগ প্রবণ হলে। মোবাইলে কথা বলা বা বেশি কথা বলা, অতিরিক্ত ভ্রমন, ব্যায়াম।
আবার মাইগ্রেন রোগী কিন্তু পাশাপাশি সাইনাস প্রদাহে ভুগছে বা সর্দি কাশি বা ঠান্ডার ভূগছেন তাদের ব্যথা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আবার শীতকালে কুয়াশা পরিবেষ্টিত অবস্থায় মাইগ্রেন মাথা ব্যথা বেড়ে যায়।
প্রকারভেদ ও লক্ষনাবলী: মাইগ্রেন কে বেশ কয়েকভাগে ভাগ করা যায়। তার মধ্যে সাধারণ ক্ল্যাসিক্যাল, ব্যাসিলার আর্টারি, অপথেলমোপ্লেজিক, হেমিপ্লেজিক ও ফেমিওপ্লেজিক মাইগ্রেন ইত্যাদি। এদের মধ্যে কমন ও ক্ল্যাসিক্যাল মাইগ্রেনই বেশী দেখা যায়।
সাধারণ মাইগ্রেন : সাধারণ মাইগ্রেনই বেশী দেখা যায়। এই ব্যথা ৪-৭২ ঘন্টা ব্যাপী হয়। সাধারণ মাইগ্রেণে নিম্নলিখিত লক্ষণাবলী লক্ষণীয় হতে পারে- অর্ধেক মাথায় ব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, দপদপ বা চিনচিন করে মাথা ব্যথা। শব্দ ও আলো ভীতি। এ ধরণের মাথা ব্যাথায় কানের উপরে চাপ দিলে, কপাল টিপলে ও মাথার চুল টানলে আরাম বোধ হয়।
ক্ল্যাসিক্যাল মাইগ্রেন : এটিও বেশী দেখা যায়। প্রথম পর্যায়ে চোখের সামনে আলো ঝলকানী ও চোখ ঝাপসা হতে পারে। হাত, পা ও মুখের চারপাশে ঝিনঝিনে ব্যথা অনুভূতিসহ শরীরের একপাশে দূর্বলতা ও অবশ হতে পারে এরপর প্রচন্ড ভাবে মাথা ব্যথা শুরু হয়। প্রথমে এক পাশ হতে শুরু হয়ে মাথায় সমস্ত অংশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচুর দপদপে মাথাব্যথা, শরীরে প্রচুর ঘাম হওয়া, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার সাথে সাথে শরীর অত্যন্ত দূর্বল করে ফেলে।
কখনো কখনো চোখের দৃষ্টির সমস্যা নিয়ে এ রোগ দেখা দিতে পারে। তখন অবশ্য মাথা ব্যথা নাও থাকতে পারে।
লক্ষ করতে হবে দৃষ্টির সময় ১ ঘন্টার বেশী স্থায়ী হলে ধরে নিতে হবে এটি মাইগ্রেন নয় ব্রেইন বা চোখের অন্যাান্য সমস্যা হতে পারে।
ব্যাসিলার আর্টারি মাইগ্রেন : এ ধরণের মাথা ব্যথা মাথার পেছন দিক হতে শুরু হয়। এতে মাথাঘোরা ভাবও থাকতে পারে।
অপথেলমোপ্লেজিক মাইগ্রেন : এ ধরণের মাথা ব্যথায় চোখের উপরিভাগ হতে শুরু করে মাথার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ঝাপসা দেখে। আলোর প্রতি তাকাতে পারে না ফলে অন্ধকার ঘরেই থাকতে ভালবাসে।
হেমিপ্লেজিক মাইগ্রেন : এ মাথা ব্যথায় শরীর অবশ হয়ে যায়। এ ধরণের ব্যথা বেশ কয়েকদিন স্থায়ী হয়।
মাইগ্রেনের মাথা ব্যথার পূর্বের লক্ষণাবলী : মাথা ব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টা পূর্ব হতে কয়েক দিন পূর্বে ও অবস্থাতে হতে পারে। এ সময় মানসিক ও স্নায়বিক বৈকল্য দেখা দিতে পারে। এ সময় রোগী খিটখিটে, অতি উৎসাহী, শান্ত ধীরগতি, বিষন্ন, উল্লসিত, ঝিমুনি, অতি সচেতন ভাব হতে পারে। অনেক সময় বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। এ লক্ষণ গুলি আমরা হয়ত এড়িয়ে চলি। তবে এগুলো শনাক্ত করে অতিদ্রুত চিকিৎসা নেয়া জরুরি।
মাইগ্রেন মাথা ব্যথার পরে লক্ষণাবলী : মাথা ব্যথা শেষ হওয়ায় পর রোগী অত্যন্ত ক্লান্ত ও দূর্বলতা বোধ করে। ক্ষুধামান্দা ও মনোরোগের সমস্যা হতে পারে।
কিভাবে হয় : বশেষজ্ঞরা এই মাথা ব্যথার জন্য একটি হরমোনকে দায়ী করেছেন, সেটি হলো সেরোটোনিন। মেকানিক্যাল কারণে বহিঃমস্তিষ্কের ধমনীগুলোর প্রসারণ ঘটে। তবে সেরোটোনিন ও মেকানিক্যাল কারণে যখন কোষ গুলোর উদ্দীপিত হতে থাকে, তখনই ব্যথা অনুভূত হয়।
রোগ শনাক্তকরণ : এ রোগে সাধারণত রোগীর দেওয়া উপসর্গ ভিত্তিতেই শনাক্ত করা যায়। তবে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাইনাসের প্রয়োজনীয় এক্স-রে, চোখ পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি করা যেতে পারে।
কি ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন?
চা, কফি, কোমলপানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম, দুধ, দই, মাখন খাবেন না। টমেটো ও টক জাতীয় ফল খাবেন না। গম জাতীয় খাবার যেমন- রুটি, পাস্তা ও ব্রেড ইত্যাদি এড়িয়ে চলবেন। আপেল, কলা ও চিনাবাদাম খাবেন না। পেঁয়াজ খাবেন না।
ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা হতে পারে। তাই যে খাবার খেলে সমস্যা হচ্ছে সেটি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
কোন কোন খাবার খাবেন : সবুজ, হলুদ ও কমলা রংয়ের শাকসব্জী, ফলমূল খাবেন। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। গ্রিন টি, আদার রস খাবেন। খেজুর ও ডুমুর জাতীয় খাবার খাবেন।
মাইগ্রেন হতে মুক্তি পেতে কি করবেন : দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা যাবে না। রোগীকে প্রত্যহ অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুম অত্যাবশ্যকীয়। মদ, ধুমপান পরিহার করতে হবে।
জন্ম বিরতিকরণ পিল ব্যবহার না করে অন্য কোন উপযোগী পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তীব্র ঠান্ডা ও কড়া রোদ দুটোই এড়িয়ে চলতে হবে। কোলাহলপূর্ণ এলাকা, উচ্চশব্দ এড়িয়ে চলতে হবে। দীর্ঘ ভ্রমণ, মানসিক চাপ ও পরিশ্রম এড়িয়ে চলতে হবে। দীর্ঘক্ষণ টিভি ও কম্পিউটারের সামনে না থাকা। বেশী পরিমাণ পান পান করা।
নিজে নিজে ব্যথা কমাতে যা করবেন : বমি বমি ভাব কাটাতে ১ টুকরা আদা মুখে দিন ব্যথা অনেকটা লাঘর হবে। মাথা ব্যথা বেশী হলে বরফের টুকরা একটা আইসব্যাগে নিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে দিয়ে রাখুন তাতেও ব্যথা কমে যাবে। গ্রীন টি এর সাথে আদা কুঁচি ও লেবু দেওয়া হলে ব্যথার প্রকোপ অনেকটাই কমে আসবে। অতিরিক্ত আলোময় স্থানে না থেকে ঘর অন্ধকার করে ঘুমিয়ে নিন। এতে ব্যথা অনেকটাই কমে আসবে। আরামদায়ক ভাবে বসে বা শুয়ে নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিন, আস্তে আস্তে মুখ দিয়ে ছাড়–ন। এভাবে ৫ থেকে ১০ বার গভীর শ্বাস নিলে শরীর হালকা হয়ে যাবে। রেহাই পাবেন মাইগ্রেনের মতো তীব্র যন্ত্রণা থেকে।
চিকিৎসা : চিকিৎসা মানেই ঔষধ নয়। দরকার নিয়ম মেনে চলা ও সচেতন হওয়া। মনে রাখা উচিত সব মাথা ব্যথাই কিন্তু মাইগ্রেন নয়। মাথার টিউমার, মাথায় রক্তক্ষরণ দৃষ্টি স্বল্পতার কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে। হোমিওপ্যাথিক লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই সঠিক লক্ষণের প্রতি মনোযোগ দিলেই ভালো চিকিৎসা করা সম্ভব। হোমিও মতে গেøানয়িন, স্যাঙ্গুনেরিয়া, নাক্স, স্পাইজেলিয়া, আইরিস, ক্যানাবিস স্যাট, ন্যাট মিউর, ন্যাজা, সাইলিসিয়া, সিপিয়া, সাইক্ল্যামেন, ইপিকাক, ক্যাকটস, চেলিডোনিয়াম, ল্যাকেসিস, আর্সেনিক মেট, এমন পিক্রেটাম, ককুলাস, ব্রায়োনিয়া, থুজা, সিমিসিফুগা, জিঙ্কাম, ম্যাগ ফস, ক্যাল ফস, বেলেডোনা, অনসমোডিয়াম, একোনাইট, ক্যাল ফস প্রভৃতি ঔষধ প্রয়োগ করে মাইগ্রেন এর মতো তীব্র যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওযা সম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই এই রোগের আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

-ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবীর

 

 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
2 টি উত্তর 430 বার দেখা হয়েছে
+7 টি ভোট
1 উত্তর 288 বার দেখা হয়েছে
13 ফেব্রুয়ারি 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Pushpita Roy (5,630 পয়েন্ট)
+5 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,759 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,196 জন সদস্য

46 জন অনলাইনে রয়েছে
4 জন সদস্য এবং 42 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...