আমাদের চামড়ার উপরিভাগে সিবাম নামক একটি বিশেষ ধরনের তেলজাতীয় পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। এই সিবাম আমাদের চামড়াকে রক্ষা করে, পিচ্ছিলকারক হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে। এটি চামড়ায় কিছুটা জলনিরোধক হিসেবেও কাজ করে।
তো, আমরা যখন বেশীক্ষণ জলে থাকি, তখন এই সিবাম বলতে গেলে 'ধুয়ে যায়', ফলে জল তখন আমাদের চামড়াকে ভেদ করতে পারে। আর এর ফলেই চামড়া ওভাবে কুঁচকে যায়৷
কিন্ত কেন?
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, বেশীক্ষণ জলে থাকলে হাত কুঁচকে যাওয়াটা আমাদের স্বয়ংক্রিয় স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ারই একটি অংশ। যাদের হাত বা পায়ের স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিজ্ঞানীরা তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কুঁচকানো পর্যবেক্ষণ করেন নি।
ভেজা অবস্থায় আমাদের হাতের গ্রিপ বা কোনো কিছু শক্তভাবে ধরার ক্ষমতা কমে যায়। এই গ্রিপ এর বিষয়টিকে ঠিক রাখতেই হাত বা পায়ের চামড়া কুঁচকে যায়, কারণ কুঁচকানো হাত দিয়ে কোনো কিছু ধরা তুলনামূলক সহজ।
কিছু ভেজা মার্বেল নিয়ে গবেষণাকালে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, যাদের হাতের চামড়া কুঁচকে গিয়েছে, তারা সেই মার্বেলগুলোকে অন্যদের চেয়ে (যাদের হাতের চামড়া কুঁচকানো ছিলো না) ভালোমত ধরতে পারছে। অর্থাৎ ভেজা পরিবেশে গ্রিপ বাড়ানোর জন্যই চামড়া কুঁচকে যাচ্ছে এই যুক্তিতে কোনো খুঁত এখনও চোখে পড়ছে না।
হাতের চামড়া কুঁচকে যাওয়ার বিষয়টি হয়ত আমাদের পূর্বপুরুষদের কোনো ভেজা পরিবেশ থেকে খাবার সংগ্রহে, কিংবা পায়ের চামড়া কুঁচকে যাওয়া বৃষ্টিস্নাত পরিবেশে ভালোমত হাঁটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অন্তত বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত তাই মনে করছেন।