হাঙ্গরের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
হাড়বিশিষ্ট মাছ এবং ভূমিস্থিত মেরুদণ্ডী প্রাণী থেকে হাঙ্গরের কঙ্কাল অনেক পৃথক ধরনের। হাঙ্গর এবং অন্যান্য তরুণাস্থিবিশিষ্ট মাছের (চাঁদা মাছ এবং শংকর মাছ) কঙ্কাল রাবারের মতো তরুণাস্থি দ্বারা গঠিত। তরুণাস্থি এক ধরনের কলা যা হাড়ের থেকে অনেক হালকা এবং নমনীয়। চাঁদা এবং শংকর মাছের মতো হাঙ্গরের চোয়াল ক্রেনিয়ামের সাথে সংযুক্ত নয়। চোয়ালের সমতল পৃষ্ঠ মেরুদণ্ডী এবং গ্রিল আর্চের মতো যার অতিরিক্ত অবলম্বন ও শক্তির দরকার হয়। কারণ শারীরিক পীড়নের অনেকাংশ বহন করতে হয় এই চোয়ালকে। চোয়ালের এই পৃষ্ঠে এক ধরনের ষড়ভূজীয় ক্ষুদ্র তলের স্তর রয়েছে যার নাম "টেসেরি"। এটি মূলত ক্যালসিয়াম লবণের কেলাসিত ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত একটি মোজাইকের মত। এই মোজাইক এই অঞ্চলে বিশেষ শক্তি যুগিয়ে থাকে যা হাড়বিশিষ্ট মাছের চেয়ে বেশি।
সাধারণত হাঙ্গরের চোয়ালে টেসেরির কেবল একটি স্তর থাকে। কিন্তু বৃহৎ নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাদের ক্ষেত্রে (যেমন: ষাঁড় হাঙ্গর, বাঘ হাঙ্গর এবং বৃহৎ সাদা হাঙ্গর) শরীরের আকারের উপর নির্ভর করে দুই বা ততোধিক স্তর থাকতে পারে। একটি বৃহৎ সাদা হাঙ্গরের চোয়ালে এমনকি পাঁচটি স্তর পাওয়া গিয়েছিল। এদের রস্ট্রামের (ঠোঁটের) তরুণাস্থি শক্তির প্রভাব শোষণের জন্য অনেকটা স্পঞ্জি এবং নমনীয় হতে পারে। এদের ডানার কঙ্কাল অনেক দীর্ঘ এবং এক ধরনের নরম ও অবিচ্ছিন্ন রশ্মি দ্বারা ঠেস দেয়া থাকে। এই রশ্মির নাম সেরাটোট্রিকিয়া। চুল এবং পালকের মধ্যে শৃঙ্গের মত কঠিন কেরাটিন সজ্জিত করে গঠিত স্থিতিস্থাপক প্রোটিনের ফিলামেন্ট থাকে। পুরুষ হাঙ্গরের পেলভিক ডানার ভিতরের অংশ পরিবর্তিত হয়ে এক জোড়া সিগার বা সসেজে পরিণত হয়েছে। এরাই জননাঙ্গ গঠন করে যার অপর নাম "ক্ল্যাসপার"। ক্ল্যাসপারের মাধ্যমেই অন্তর্নিষেক সাধিত হয়।
সূত্র: উইকিপিডিয়া