চাঁদের বুকে পতাকার ভিডিওতে দেখা যায়, পতাকা লাগাবার সময় আসলেই সেটি উড়ছে বলে মনে হচ্ছে। চাঁদে যেহেতু বাতাস নেই তাহলে পতাকাকে উড়াচ্ছে কে? পদার্থবিজ্ঞানের সরলতম সূত্র জানা মানুষের পক্ষেও এর কারণ বুঝতে পারা সম্ভব। বায়ুহীন পরিবেশে নড়ার রসদ দিচ্ছে গতি জড়তা। পতাকা লাগাবার সময় যে নড়াচড়া হচ্ছিল তার গতি জড়তার কারণে বায়ু না থাকা সত্ত্বেও পতাকা নড়ছিল একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। ঐ নড়াচড়ার সাথে বায়ুপ্রবাহের কোনো সম্পর্ক ছিল না। পতাকা বানিয়েছিল Annig Flagmakers, রেয়নের তৈরি সে পতাকার দাম ছিল তখন ৫ ডলার, এখন ৩২ মার্কিন ডলার।
ল্যাবরেটরিতেও বায়ুশূন্য স্থানে পরীক্ষাটি করে দেখা হয়। সেখানেও চাঁদের মতোই ফলাফল। চাঁদের অভিকর্ষের কারণে পতাকা সামান্য সময় পরেই নীচে নেমে যাবে বলে L আকৃতির একটি দণ্ডের সাহায্যে আটকে দেয়া হয়েছিল। বাতাসের বাধা না থাকায় জড়তা একটু বেশি সময় পর্যন্ত বোঝা গিয়েছিল। আর পদার্থবিজ্ঞানের দিক থেকে বিবেচনা না করে মানুষেরা সেটিকে ধরে নিয়েছিল বাতাসের প্রবাহ হিসেবে!
তাছাড়া, উড়া এবং নড়া এক ব্যাপার নয়। পতাকা উড়ছে বলে যে ভিডিওটি প্রচার করা হয় তা আসলে বাতাসে পতাকা উড়ছে সেরকম নয়। পতাকা মাটিতে লাগানোর সময় “L” আকৃতির দণ্ডের নড়াচড়ায় পতাকাটাও নড়ছে। আর যেহেতু চাঁদে বাতাস নেই ফলে বাতাসের বাধাও নেই। ঘর্ষণহীন পরিবেশে পতাকা বরং পৃথিবীর পরিবেশের চেয়ে বেশিই নড়ছে। এই নড়াচড়ার ভিডিওকে পতাকার উড়া বলে প্রচার করাটা আসলেই হাস্যকর।
তথ্যসূত্র: রোর বাংলা, বিজ্ঞানযাত্রা