পান্তাভাত পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। সাদাভাতের চেয়ে পুষ্টিমানে এগিয়ে পান্তাভাত। পান্তাভাতে বেশি পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আছে। দ্রুত শক্তি জোগায় বলে কায়িক পরিশ্রম করা মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে পান্তাভাতের সুফল পান। রক্তস্বল্পতার শিকার মানুষের জন্য পুষ্টিকর খাবার পান্তাভাত।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) পুষ্টি ইউনিটের বিশ্লেষণ ও ভারতের আসাম রাজ্যের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিদ্যা বিভাগের গবেষণায় পান্তাভাতের পুষ্টিগুণের এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বিএআরসির পুষ্টি ইউনিট ২০১৫ সালে পান্তাভাতের অণু পুষ্টিকণা পরিমাপ করে। তাতে দেখা গেছে, প্রতি ১০০ গ্রাম পান্তাভাতে ৬৮ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম আয়রন আছে, যা সাদাভাতে ২ দশমিক ৯ মিলিগ্রাম। পান্তাভাতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ৭৮৫ মিলিগ্রাম, যা সাদাভাতে ২০ দশমিক ৩৫ মিলিগ্রাম। পান্তাভাতে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৭৯৯ মিলিগ্রাম, যা সাদাভাতে ৭৭ মিলিগ্রাম।
বিএআরসির বিশ্লেষণ বলছে, ভাতকে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে গাঁজন প্রক্রিয়ায় তা ফাইটিক অ্যাসিড, হাইড্রোলাইসিস (পানির সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া) করে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এতে পান্তাভাতের গুণাগুণ বাড়ে এবং ভাতের অণুপুষ্টিগুলোকে মুক্ত করে। পান্তাকে ঠান্ডা খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিশুর জ্বর-জ্বর ভাব হলে পান্তাভাত তা উপশমে সাহায্য করে। এমনকি পেটের সুস্থতায় (ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষায়) গাঁজায়িত খাবার পান্তা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, যেকোনো বয়সের মানুষই নিয়মিত পান্তাভাত খেতে পারে। কারণ, পান্তায় প্রচুর শর্করা আছে, যা দ্রুত শক্তি জোগায়। পান্তার সঙ্গে আলুভর্তা শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। তাই কায়িক পরিশ্রমের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
গরম আবহাওয়ায় পান্তাভাত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে। উচ্চমাত্রায় পুষ্টির জন্য পান্তাভাত খাওয়ার পরমুহূর্তেই শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি আসবে। খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। নিয়মিত পান্তা খেলে শরীরে কোনো ক্ষতি নেই।
collected