কমবেশি সবাই আমরা চিপস পছন্দ করি। প্যাকেট দেখে মনে হয় যেন প্রচুর চিপস আছে প্যাকেটে। তারপর যখন খুলি, দেখতে পাই অর্ধেক প্যাকেটই বাতাস দ্বারা পূর্ণ। অগত্যা সেই পরিমাণ চিপস দিয়েই মনকে খুশি করতে হয়। অনেকেই মনেকরি প্রস্তুতকারক মুনাফা অর্জনের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করে থাকে। তবে আসল ব্যাপারটি জানলে আপনিও বুঝতে পারবেন কি উদ্দেশ্যে সাধারানত এটি করা হয়ে থাকে।
আসলে এর পেছনে রয়েছে চমৎকার এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। চিপসের প্যাকেটের ভেতরের বাড়তি এ বাতাসকে বলা হয় ‘স্ল্যাক ফিল’ (Slack FIll)।
(১) চিপসের প্যাকেট আপনার হাতে আসার আগে তাকে ফ্যাক্টরির সদর দরজা পেরিয়ে অনেক পথ অতিক্রম করতে হয়। সেখানে তো আর একটি প্যাকেট থাকে না। বরং শত শত প্যাকেট একটি আরেকটির উপর চেপে বসিয়ে কার্টনে ভরা হয়। তো তখন যদি এ ‘হতাশ করা’ বাতাস না থাকতো তাহলে আপনাকে আর বাসায় বসে আস্ত চিপস খেতে হতো না। বরং আপনি খেতেন চিপসের গুড়া! কারণ এত চাপে সব চিপসই যে ভেঙে যেতো।
(২) প্যাকেটের ভেতরের বাতাসও কিন্তু সাধারণ বাতাস নয়। এখানে ভরা হয় নাইট্রোজেন। অক্সিজেনের প্রভাবে চিপস নষ্ট হয়ে যায়, এছাড়া তেলেও দেখা দেয় দুর্গন্ধ। সেই সাথে বাতাসের আর্দ্রতা চিপসকে ড্যাম্প করে দেয়। ফলে সেই চিপস খেয়ে কোনো মজাই পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে নাইট্রোজেনের কিন্তু এসব কোনো সমস্যাই নেই। বরং এটি চিপসকে রাখে সতেজ ও কুড়মুড়ে। এভাবেই চিপসের প্যাকেটের বাতাস আমাদেরকে হতাশ করে রক্ষা করে আসছে আমাদের প্রিয় চিপসকেই।
(৩) যেহেতু চিপস গুলিতে ফ্যাট এবং তেল থাকে তাই তা র্যান্সিড হতে পারে। এবার কথা হল র্যান্সিড আসলে কি? র্যান্সিড হল, ফ্যাট বা তেলযুক্ত খাবারগুলি পুরানো এবং বাসি হওয়ার ফলে একটা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে যা সেই খাবারের আসল স্বাদ নষ্ট করে। র্যানসিডিটি হ’ল এক জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া। ফ্যাট অক্সিডাইজড হওয়ার পর দুর্গন্ধ যুক্ত এবং ভিন্ন স্বাদ তৈরি করে যার ফলে খাবারটি গ্রহণের পক্ষে অযোগ্য করে তোলে। তাই চিপসের স্বাদ ঠিক রাখতে, প্রস্তুতকারক চিপসের প্যাকেটগুলি নাইট্রোজেন গ্যাসে দ্বারা পূর্ণ করে। যেহেতু, নাইট্রোজেন গ্যাস ফ্যাট এবং তেলের সাথে বিক্রিয়া করেনা, তাই চিপসগুলি র্যানসিডিটি থেকে নিরাপদ।
তথ্যসূত্র: বাংলা সাইন্স হেলথ, অজানা তথ্য