নিম্নোক্ত সব ধরণের স্যানিটাইজার বিবেচনায় অ্যালকোহলিক স্যানিটাইজার ব্যবহার করাটাই উত্তম!
ট্রাইক্লোসানসম্পন্ন স্যানিটাইজার ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিহত করে ।তবে এ ধরনের স্যানিটাইজিং জেল ভালো থেকে খারাপ প্রভাবই বেশি ফেলে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) তথ্য মোতাবেক, ট্রাইক্লোসান অ্যান্টিবায়োটিক থেকে ব্যাকটেরিয়াকে রক্ষা করে, যদিও উপাদানটি এর বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাছাড়া দেহে এমআরএসএ-এর মতো সুপারবাগও সৃষ্টি করতে পারে এই ট্রাইক্লোসান, যা ব্রেস্ট ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং স্নায়ুকোষ ধ্বংস করে দেয়।
স্যানিটাইজারে ভিন্ন ভিন্ন প্যারাবিন ব্যবহৃত হয়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্যারাবিন হলো ইথাইলপ্যারাবিন, বিউটাইলপ্যারাবিন, মিথাইলপ্যারাবিন এবং প্রপাইলপ্যারাবিন। স্যানিটাইজারের বোতলের গায়ে এসব উপাদানের যেকোনো একটির উল্লেখ থাকলে তা অবশ্যই বর্জনীয়। প্যারাবিন যে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে তা ঠিক। তবে এই একটি গুণের বিপরীতে রয়েছে শত শত দোষ। বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক শারীরিক সমস্যা, যেমন- ক্যান্সার, নিউরোটক্সিসিটি, এন্ডোক্রাইন ডিসরাপসন এবং ত্বকের চুলকানি দেখা যায়।
বাজারে যেসকল স্যানিটাইজার আছে সেগুলোর মধ্যে অ্যালকোহলপূর্ণ স্যানিটাইজারই সবচাইতে ভালো। তবে এগুলোও পুরোপুরি নিরাপদ নয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা অ্যালকোহল স্যানিটাইজিং জেল ব্যবহার করে তাদের রক্তেও অ্যালকোহল পাওয়া যায়। আবার অনেক শিশু এসব জেল নেশার কাজে ব্যবহার করে কিংবা অজান্তেই এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে যায়। কিছু কিছু স্যানিটাইজারে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহলও থাকে। এটি একধরনের পেট্রোকেমিক্যাল, যা নিউরোটক্সিন নামেও পরিচিত। এই অ্যালকোহল ত্বক শুষে নেয় এবং দেহে বিষের মতো কাজ করে। এসব স্যানিটাইজার ত্বকের সুরক্ষা স্তরগুলোকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে ফেলে। এর মানে এই না যে অ্যালকোহলবিহীন স্যানিটাইজিং জেল ভালো। এগুলো বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান, যেমন- বেনজালকোনিয়াম ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি হয়। এই উপাদান ইমিউন ডিসফাংশন এবং হাইপারসেনসিভিটির সাথে সংযুক্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট এবং ক্রোনিক ডার্মাটাইটিসের মতো রোগের সৃষ্টি করে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল স্যানিটাইজার ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিহত করে তা ঠিক। কিন্তু খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সাথে ভালো ব্যাকটেরিয়াও মেরে ফেলে এই ধরনের স্যানিটাইজিং জেল, যা শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আবার অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল জেল।
২০১১ সালে দ্য এপিডেমিক ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের একটি গবেষণায় দেখা যায়, ইউএস সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের যেসকল স্বাস্থ্যকর্মী সাবানের বদলে প্রতিদিন স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন তাদের নরোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছ'গুণ বেড়ে যায়। এতে করে অ্যাকিউট গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।