সকল প্রাণীর ই বেঁচে থাকার জন্য একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রার লিমিটেশন আছে, যার থেকে কম বা বেশি তাপমাত্রায় মারা যায়।
মানুষের দেহের অভ্যন্তরীণ গড় তাপমাত্রা হচ্ছে প্রায় ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস, এর চেয়ে খুব কম তাপমাত্রায় দেহের অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হার্ট এবং মস্তিষ্ক, দেহের ভেতরের তাপ কমে গেলে হৃদপিন্ড রক্ত পাম্প করে অনেক ধীরে, ফলে সমস্ত দেহে ঠিক মত রক্ত সরবরাহ হতে পারেনা এবং প্রয়োজনীয় রক্ত এবং অক্সিজেনের অভাবে অন্যান্য অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
বাচ্চা এবং বয়স্ক ব্যাক্তিদের হৃদপিন্ডের পেশী তুলনামূলক কম শক্তিশালী হওয়ায় তারা ঠান্ডার আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার ঘটনা বেশি।
দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমে ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে গেলে এমনেসিয়া অনুভব হতে পারে, ২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে গেলে চেতনাশক্তি হারিয়ে যায়, ২১ ডিগ্রী সেলসিয়াস হয়ে গেলে উচ্চ মাত্রার হাইপোথারমিয়া যার ফলে মানুষ তখন মারা যাবার সম্ভাবনা অনেক।
মশা শীতল রক্তের প্রানী অর্থাৎ এরা মানুষের মত দেহের অভ্যন্তরীণ তাপকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা, তাই ঠান্ডায় মশার কর্মক্ষমতা কমে যায়, ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় এদের কর্মক্ষমতা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, এরকম অবস্থায় কিছু প্রজাতি গাছের কোটরে শীতনিদ্রায় চলে যায় আর কিছু অন্যত্র চলে যায় অথবা মারা যায়। যেসব অঞ্চলে আরো বেশি ঠান্ডা পরে সেখানে দেখা গেছে স্ত্রী মশা ডিম পেড়ে রাখে, ঠান্ডায় সেখানের পানি এবং ডিম জমে থাকে এবং শীত যাবার পর সেই ডিম থেকে বাচ্চার জন্ম হয়। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত শীতে মশা বেশিরভাগ মারা গেলেও ডিম নস্ট হয়না। তাছাড়া আমাদের দেশে জমে যাবার মত ঠান্ডা বা ১০ ডিগ্রী এর নিচে তাপমাত্রা আসেই না বলা যায়, এক্ষত্রে এখানে শীতকালে মশার বসবাসের তেমন সমস্যা হয়না, এবং মশা স্থানীয় আবহাওয়ার সাথে অভিযোজিত হয়ে খাপ খাইয়ে নিতেও সক্ষম। শীতকালে বেশি মশা দেখার একটি কারণ হতে পারে এরা বাইরের ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাবার জন্য বেশি পরিমাণে বাসা বাড়িতে আশ্রয় নেয়, ২৭ ডিগ্রী তাপমাত্রাতে মশা সবচেয়ে বেশি এক্টিভ থাকে।
© Warman Hasbi