রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়াকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয়, হাইপক্সিয়া। শুধু কোভিড-১৯ নয়, অন্যান্য অসুখেও হাইপক্সিয়া হতে পারে। এটি কোনও রোগ নয়, উপসর্গ। তবে এই উপসর্গ এতটাই সিরিয়াস যে, দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে রোগীর মস্তিষ্কে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
হাইপোক্সিয়া আসলে চার ধরনের।
যথাঃ ১.হাইপোক্সিক হাইপোক্সিয়া
২.হাইপোমিক হাইপোক্সিয়া
৩.স্থির হাইপোক্সিয়া
৪.হিস্টোটক্সিক হাইপোক্সিয়া
হাইপোক্সেমিয়ার কয়েকটি সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
হার্টের ত্রুটিগুলি সহ হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগ,
হাঁপানি, এম্ফিসেমা এবং ব্রঙ্কাইটিস এর মত ফুসফুসের রোগ,উচ্চ উচ্চতার অবস্থানগুলি, যেখানে বাতাসে অক্সিজেন কম থাকে সেখানে সমস্যার সম্মুখীন ।স্লিপ অ্যাপনিয়া (ঘুমের সময় শ্বাসকষ্ট)
ফুসফুসের টিস্যুতে প্রদাহ বা ক্ষতচিহ্ন (যেমন ফুসফুসীয় ফাইব্রোসিস হিসাবে)
হাইপোক্সেমিয়ার লক্ষণগুলি কী কী?
হাইপোক্সেমিয়ার লক্ষণগুলি অবস্থার তীব্রতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তারা সহ:
১.মাথা ব্যথা
২.নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
৩.দ্রুত হার্টবিট
৪.কাশি
৫.হুইজিং
৬.বিভ্রান্তি
৭.ত্বক, নখ এবং ঠোঁটে নীল রঙ।
কাদের হাইপক্সিয়ার সম্ভাবনা বেশি?
একজন সুস্থ মানুষের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-১০০ শতাংশ থাকা উচিত। সেটা কম হয়ে গেলেই সমস্যা। ক্রনিক অসুখের কারণে কারও হাইপক্সিয়া হতে পারে, আবার আচমকাই কারও মধ্যে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে। সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডি‌জ়িজ়), অ্যাজ়মার রোগীদের ক্ষেত্রে হাইপক্সিয়া দেখা যায় বেশি। কারণ এঁদের শরীরে এমনিই অক্সিজেন কম জেনারেটেড হয়। তাই কোনও কারণে যদি রোগের প্রকোপ বাড়ে তখন শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। সে ক্ষেত্রে যদি দেখা যায়, অক্সিজেনের লেভেল ৯০-এর নীচে নেমে গিয়েছে, তখন দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
অ্যানিমিয়ার রোগীদের মধ্যেও এই উপসর্গ দেখা যায়। আমাদের শরীরে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন বহন করে। অ্যানিমিয়ার রোগীদের শরীরে এমনিতেই অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে। যে কারণে এঁদের নিয়মিত ব্লাড টেস্ট করানো গেলে ভাল। রক্তে হিমোগ্লোবিন খুব কমে গেলে, আগাম ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
এ ছাড়া দমবন্ধ করা জায়গায় থাকার ফলেও হাইপক্সিয়া হতে পারে। কোভিড বিপর্যস্ত এ সময়ে ভিড়ভাট্টায় এই সমস্যা বাড়তে পারে বলে মত চিকিৎসকদের।
কারও হার্টে ব্লকেজ থাকলে উপসর্গ হিসেবে হাইপক্সিয়া দেখা যেতে পারে। তখন রোগীর বুকে ব্যথা হবে।
দুর্ঘটনাজনিত কারণেও এটি হতে পারে। যেমন, শ্বাসনালিতে কোনও খাবার আটকে গিয়ে হাইপক্সিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।