তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়–
১। ক্ষমা করতে শিখুন
মানুষ ভুল করবে, এটাই স্বাভাবিক। কোনো মানুষই ১০০% সঠিক নয়। তাই কারো ভুলের জন্য রেগে যাওয়াটা মোটেও কোন বুদ্ধিমানের কাজ না। রেগে গিয়ে তার ভুল কি ঠিক করতেপারবেন? না। তাহলে ভাবুন যা হওয়ার হয়ে গেছে; রাগ না করে ক্ষমা করে দিন , এতে করে পরবর্তীতে আপনার নিজেরই ভালো লাগবে।
২। হেঁটে আসুন
রেগে গিয়ে চিৎকার না করে যার উপর রাগ হয়েছে তার সামনে থেকে সরে যান। রাগারাগিতে কোনো পক্ষেরই লাভ হয় না। রাগ সামলাতে না পারলে অল্প সময়ের জন্য হলেও ঘটনাস্থল ত্যাগ করুন। একটু হেঁটে আসুন। এতে রাগ বাড়ার সুযোগই তৈরি হবে না এবং আপনার মনও হয়তো একটু শান্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।
৩। চিন্তা করুন
রেগে গেলে আপনি হাতের কাছে যা পান তাই ছুঁড়ে ফেলে দেন। হোক তা আপনার মোবাইল অথবা কাচের গ্লাস। তবে ছুঁড়ে ফেলার আগে একবার চিন্তা করে দেখুন তো, মোবাইলটা ভেঙে গেলে ক্ষতি টা কার হবে? আপনারই। তাই রাগান্বিত হলেও সব সময় সক্রিয় মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তা করুন।
৪। বুঝিয়ে বলুন
আপনার ঘরে কেউ নক না করে ঢুকে পরলে আপনার রাগ হয়। মনে হয়, এখনই ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেই। তাহলে রাগ না করে বুঝিয়ে বলুন, দেখুন সে কী বলে। হতে পারে সে আপনার অপছন্দের ব্যাপারটা জানেই না। আপনি চাইলে বিষয়টি দরজায় লিখে রাখতে পারেন। এতে আপনারও রাগ হবে না, এবং সবার বুঝতেও সুবিধা হবে।
৫। গভীরভাবে শ্বাস নিন
যখনই বুঝতে পারবেন যে আপনার রাগ হচ্ছে তখন গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে দম ছাড়ুন। এতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মন অন্যদিকে সরে যাবে। আর গভীর শ্বাস তাৎক্ষণিকভাবে আপনার মাথায় অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়াবে, মাথায় রক্ত চলাচল হবে। ফলে আপনিএকটু স্থির বোধ করবেন। এতে করে আপনার রাগটাও কমে যাবে।
আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে রাগ নিয়ন্ত্রন করার জন্য এই হাদিস টি অনুসরন করতে পারেনঃ
তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “হে আল্লাহ্র রসূল(সঃ), তাহলে (রাগের) চিকিৎসা কি?” উত্তরে নবী করিম(সঃ) বললেন,
“কেউ যদি দাঁড়ানো অবস্থায় রাগান্বিত হয়ে পড়ে তার উচিত সাথে সাথে বসে পড়া, আর রাগ না কমা পর্যন্ত ওই অবস্থায় থাকা। অন্যথায় তার উচিত শুয়ে পড়া।” [আবু দাউদ ৪৭৬৪]
মুসলমানদের জন্য রাগ নিয়ন্ত্রণ ইবাদতের শামিল। সুরা আল ইমরানের ১৩৪ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ
“যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।”